প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিজন ইউএনও’র এমন আকস্মিক পরিদর্শন দরকার

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর ২০২৫) সকালে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী উপজেলার তিনটি প্রতিষ্ঠান আকস্মিকভাবে পরিদর্শন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো : নিশ্চিন্তপুর ডি. এস. কামিল মাদ্রাসা, নিশ্চিন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ। এ সময় ইউএনও কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। এছাড়া তাদের উপস্থিতি ও শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। পরে শিক্ষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি, পাঠদানের মানোন্নয়ন, বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অভিভাবকদের অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষকরা যদি আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তবে বিদ্যালয় একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয় শুধু পাঠদানের কেন্দ্র নয়, এটি চরিত্র গঠনেরও স্থান। তাই শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক উন্নয়নে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। শিক্ষা উপকরণ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা যায়। কচুয়ার ইউএনও মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী এর আগেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আকস্মিক পরিদর্শন করেছেন। এমন পরিদর্শনে বাস্তব বা প্রকৃত চিত্রটা খুঁজে পেয়েছেন ও পাচ্ছেন বলে আমাদের ধারণা। চাঁদপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বিভিন্ন উপজেলা সফরে গেলেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়তেন এবং শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি রিডিং-দক্ষতা আর উচ্চারণ কেমন সেটা পরখ করতেন। বিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা কেমন সেটাও জানার চেষ্টা করতেন। তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের জন্যে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কচুয়ার ইউএনও তাঁর আকস্মিক পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে চলছেন। আমাদের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাগণ এমন আকস্মিক পরিদর্শন হয়তো করেন, কিন্তু গণমাধ্যমে সেটা সেভাবে আসে না। তবে এমন পরিদর্শনে তাঁরা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো দোষ-ত্রুটি খুঁজে পেলে তাঁদের অধিকাংশজনকে ম্যানেজ করার জন্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ নানা কোশেশ চালান। এর ফলে দোষ-ত্রুটি খুব একটা সংশোধন হয় না। এমন হতাশাজনক পরিস্থিতি সামাল দিতে শুধু কচুয়ার ইউএনও নয়, প্রতিটি উপজেলার প্রতিজন ইউএনও’র সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শনের বিষয়টি অনেক কাজ দিতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। এতে প্রকৃত চিত্র অবহিত হওয়া এবং কিছু অসাধু শিক্ষা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দোষ-ত্রুটি চাপা দেয়া নয়, সংশোধনের প্রবণতা বাড়তে পারে। একই সাথে অসাধু কিছু শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়ম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অবৈধ সুবিধাভোগের লিপ্সা অনেক কমে যেতে পারে।




