প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৫, ১৪:৫৫
কুমিল্লায় শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের স্নানোৎসব

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আনন্দঘন পরিবেশে বুধবার (১১ জুন ২০২৫) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লা জগন্নাথপুর শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের মন্দির প্রাঙ্গণে জ্যৈষ্ঠের খরতাপে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রাকে শীতল করতে জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার দিনে ১০৮ কলস জল দিয়ে স্নান করানো হয়।
|আরো খবর
জানা যায়, জগন্নাথ দেবের সেই পবিত্র স্নানযাত্রার তিথিটিই হচ্ছে জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা। এ স্নান যাত্রা হলো পঞ্জিকা অনুসারে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে আয়োজিত একটি উৎসব। জগন্নাথের ভক্তদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনটিকে জগন্নাথের জন্মতিথি মনে করা হয়। পুরীতে স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহন বিগ্রহকে জগন্নাথ মন্দির থেকে স্নানবেদীতে বের করে আনা হয়। সেখানে তাদের প্রথাগতভাবে স্নান করানো হয় এবং ভক্তদের দর্শনের জন্যে সুন্দর বেশভূষায় সজ্জিত করা হয়।
স্কন্দপুরাণে আছে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন কাঠের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জগন্নাথদেবের জন্যে তখন থেকেই পালিত হয় স্নানযাত্রা। জগন্নাথ দেব পূজিত হন নারায়ণ হিসাবে। জগন্নাথ নামের অর্থ জগতের ঈশ্বর। স্নানযাত্রা জগন্নাথ দেবের জন্মতিথি হিসেবে পালন করা হয়। স্নান যাত্রার আগে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রাকে আবৃত করা হয় রেশমি বসন দিয়ে। স্নানযাত্রা দিনেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্যে তৈরি বিশেষ বেদিতে তাদের আনা হয়। স্নান বেদিকে বিশেষভাবে পুজো করা হয়। ১০৮ টি জলভর্তি ঘড়া দিয়ে বিগ্রহের অভিষেক সম্পন্ন করা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের এই পূর্ণিমাতে স্নানযাত্রা হওয়ার পর আষাঢ় মাসের অমাবস্যা পর্যন্ত জগন্নাথ দেবের নিত্যপূজা হলেও সাধারণ মানুষের থেকে দূরে রাখা হয়।
কথিত আছে, স্নান যাত্রার পর জগন্নাথদেবের জ্বর আসে; সেই কারণেই রথ যাত্রার আগে পর্যন্ত ১৫দিন জগন্নাথদেব বিশ্রামে থাকেন। স্নান যাত্রার পরে আষাঢ় মাসে রথ যাত্রার দিনে আবারো নব সাজে রাজবেশী জগন্নাথ দেবকে সবার সামনে আনা হয়।
পুরাণে উল্লেখিত আছে, জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি অর্থাৎ গুন্ডিচা মন্দির যেসব ভক্তগণ জগন্নাথ দেবের শ্রী বিগ্রহ দর্শন করেন অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান পুণ্য ফল অর্জন করে এবং গুন্ডিচা মন্দির অর্থাৎ পুরীকে মর্ত্যের বৈকুণ্ঠ বলা হয়। এরই সাথে এই বিশেষ স্নান যাত্রা দর্শন যে কোনো তীর্থস্নানের থেকেও শত গুণ বেশি ফল দেয়।