প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪১
খোশ আমদেদ মাহে রমজান
যে রোজায় শুধু উপবাস ছাড়া আর কোনো ফায়দা নেই

মাহে রমাদ্বানের রোজা রাখার বিধান কোরআন দ্বারা প্রমাণিত। রোজার পদ্ধতি এবং নিয়মও কোরআনে পাকে স্পষ্টভাবে এসেছে। সূরাতুল বাক্বারায় এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। পাশাপাশি প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসংখ্য হাদিস রয়েছে রমজানের রোজার বিষয়ে।
হাদিসে পাকের সকল বর্ণনাই কোরআনের আয়াতের অংশ ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন’ অর্থাৎ ‘তোমরা যাতে মুত্তাকী হও’ এই কথাকে ঘিরে। কীভাবে সিয়াম পালন করলে মুত্তাকী হওয়া যাবে সে বিষয়ে অসংখ্য হাদিসে বিস্তারিত এসেছে। সকল হাদিসের বর্ণনার মূল কথা একটাইÑরোজা যেনো শুধুমাত্র উপবাস করা না হয়। সুবহি সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধুমাত্র পানাহার আর স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম রোজা নয়। রোজাদারের মধ্যে যদি রোজার প্রভাব না আসে, তার জীবনে যদি পরিবর্তন না আসে তাহলে এই রোজা হবে শুধু উপবাস থাকা।
রোজা রাখলাম পাশাপাশি সুদের কারবার চালিয়ে গেলাম, ঘুষ নেয়া অব্যাহত রাখলাম, মজুদদারি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিলাম, রমজান আসছে তাই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিলাম, বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা, গিবত করা, গালাগাল করা, ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা, মিথ্যা বলা, চোগলখোরি করা, হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো, মানুষকে কষ্ট দেয়া, মানুষের হক নষ্ট করা ইত্যাদি অমানবিক, শরীয়তবিরোধী এবং গর্হিত কাজ অব্যাহত রাখলাম! এই রোজাকেই বলা হয়েছে শুধুমাত্র উপবাস থাকা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন রোজা রাখায় কোনো ফায়দা নেই। এমন রোজাদারের বিষয়েই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এই রোজা রেখে উপবাস থেকে সে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন রোজা তার কোনো কাজে আসবে না।
রমজানের সিয়াম সাধনা যদি ব্যক্তির জীবনে পরিবর্তন না ঘটায় তাহলে রোজা পালনে কোনো ফায়দা হাসিল হবে না, মুত্তাকী হওয়া তো বহু পরের বিষয়। সে জন্য রোজা পালনের মধ্য দিয়ে সিয়াম সাধনার দিকগুলো অর্জন করতে হবে। রিপুর তাড়নাকে দমন করে ফেলতে হবে। নিজের মধ্যে মানবিক সত্তাকে জাগ্রত করতে হবে। জীবনের সকল পর্যায়ে আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিতে হবে। কারো প্রতি ভালোবাসাটা হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে, কারো সাথে শত্রুতা পোষণও করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে।
সুতরাং আমরা সেই রোজা রাখবো যেই রোজা শুধুমাত্র উপবাস করা না হয়। যে রোজার প্রতিদান জান্নাতে রাব্বুল আলামিনের দীদার, সেই রোজাই আমরা রাখবো।