প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৯
অঞ্জনা রহমানের মৃত্যু: রহস্যের গন্ধ, শরীরে আঘাতের চিহ্ন ঘিরে প্রশ্ন
অঞ্জনা রহমানের মৃত্যুর কারণ কী?"
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা এবং নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা রহমানের মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক প্রশ্ন। তার মৃত্যুর পর শরীরে পাওয়া গেছে আঘাতের চিহ্ন। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্য, চলচ্চিত্র অঙ্গন এবং ভক্তদের মধ্যে তীব্র আলোচনা চলছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অঞ্জনা। তবে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ায় স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। শনিবার সকালে তার গোসলের সময় উপস্থিত থাকা নিকটাত্মীয় সালমা হক জানান, “শরীরে বেশ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা স্বাভাবিক মনে হয়নি। মৃত্যুর আগেও তিনি একাধিকবার বলেছিলেন, কেউ বা কারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”
অসুস্থতা থেকে মৃত্যু:
অঞ্জনা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। মৃত্যুর আগে টানা ১০ দিন অচেতন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। তবে তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে ১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
কিন্তু অভিনেত্রীর অসুস্থতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাতে ব্যর্থ হন তার পালিত ছেলে মনি। পরিবারের অভিযোগ, মনি বিষয়টি শুরুতে গোপন করেছিলেন এবং চিকিৎসা সঠিক সময়ে শুরু হয়নি। এ কারণে অঞ্জনার স্বাস্থ্যের অবনতি দ্রুত ঘটে।
অভিনয়ের কিংবদন্তি ও নৃত্যশিল্পীর জীবন:
১৯৭৬ সালে ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে অঞ্জনার। তার অভিনীত তিন শতাধিক সিনেমা তাকে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক কিংবদন্তিতে পরিণত করেছে। নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে অঞ্জনা হয়ে ওঠেন সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনার এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকা। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
অঞ্জনার মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে পরিবারের সদস্যরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। বিশেষ করে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন এবং মৃত্যুর আগে ষড়যন্ত্র নিয়ে তার বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
চলচ্চিত্র অঙ্গন ইতোমধ্যে কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর প্রতি শোক জানিয়ে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছে। তবে অঞ্জনার মৃত্যুর পেছনের রহস্য উদঘাটনে একটি স্বচ্ছ তদন্তের দাবি উঠেছে।