প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে গৃহবধূর মৃত্যু
অপমৃত্যুর মামলা : মৃত্যুর সঠিক তথ্য এখনো অজানা
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে আছমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গৃহবধূর বাড়ি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার মধ্য শ্রীরামদীতে। আছমার পরিবারের দাবি, আছমাকে স্বামীর বাড়ির লোকজন বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, আছমা ও তাজু গাজীর সংসার ২৮ বছরের। তাজু গাজী বিগত ২/৩ বছর আগে আরেকটি বিয়ে করেন। এ বিয়ে নিয়ে সংসারে আছমা ও তাজু গাজীর প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো। আছমার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পরপর প্রায়ই তাজু আছমাকে মারধর করতেন। এরই প্রেক্ষিতে আছমা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাও করেছিলেন।
|আরো খবর
এ মামলার প্রেক্ষিতে স্থানীয় সালিসের মাধ্যমে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে তাজু গাজী ২য় স্ত্রীকে তালাক দেন। কিছুদিন পর তাজু গাজী আবার ২য় স্ত্রীকে নিয়ে সংসার বাঁধা শুরু করেন এবং সংসারে আবার অশান্তি শুরু হয়।
আছমার পরিবার জানায়, সকালে আমরা খবর পাই যে আছমা অসুস্থ। আমরা তাৎক্ষণিক আমাদের বোনকে প্রিমিয়ার হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডাক্তার আমার বোনকে মৃত ঘোষণা করেন। আছমার পরিবারের দাবি, আছমার স্বামীই আছমাকে বিষ খাইয়ে মেরেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে ঘটনাটির সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে পুরাণবাজারের স্থানীয় চিকিৎসক বিপ্লবের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাকে আছমার বাড়িতে ডাকা হলে আমি গিয়ে দেখি, আছমা বেগম কোনো কথা বলছে না, শুধু চোখ মেলে তাকিয়ে আছে। আমি তার প্রেশার নরমাল পাই। আমাকে তারা বলেন, গত রাতে রোগী বমি করেছিল। এখন শরীর খারাপ। আমি রোগীর অবস্থা ভালো না দেখে একটি স্যালাইন দিয়ে রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার জন্যে বলি। পরবর্তীতে আছমাকে তার পরিবার চাঁদপুর প্রিমিয়ার হাসপাতালে নেয়।
চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে প্রিমিয়ার হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, রোগীকে তারা অ্যাম্বুলেন্স করে নিয়ে আসে। আমরা অ্যাম্বুলেন্সে থাকাবস্থায়ই রোগীর অবস্থা দেখে রোগীকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলি।
পরবর্তীতে আছমার পরিবার আছমাকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আছমাকে মৃত ঘোষণা করে। চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে জেনারেল হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার নূর হোসাইন বান্নার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, রোগী এখানে আনার আগেই মারা গেছেন। তারপরও মৃত্যুর নিশ্চয়তার জন্য ইসিজি করি। ইসিজিতে বুঝতে পারি রোগী মৃত।
ডাঃ বান্না আরো বলেন, আছমাকে নিয়ে হাসপাতালে অনেক লোক এসেছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, হাসপাতালে আছমার পরিবারের লোকজন ও তার স্বামীর আত্মীয়-স্বজন এসেছে। তখন আছমার পরিবারের লোকজন চিৎকার করে দাবি করতে থাকে যে, আছমার স্বামীই আছমাকে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক বাক-বিত-া হয়। এরই প্রেক্ষিতে এটিকে আমি বিষ খাওয়ার কেস হিসেব রেজিস্টারে লিখি। পরে সদর মডেল থানা থেকে পুলিশ এসে লাশটি নিয়ে যায়।
চাঁদপুর সদর থানার এসআই নাছির উদ্দিন লাশটি সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে চাঁদপুর সদর থানার ওসি আঃ রশিদ-এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, যেহেতু চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বিষ খাওয়া রোগী বলে জানায়, সেহেতু আমরা লাশের ময়নাতদন্ত করি। এখনো ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাইনি। তবে এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মামলা করেছে আছমার ছেলে তুষার।