প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৮
চাঁদপুর শহরে দম্পতির মৃত্যু পারিবারিক কলহে
স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে স্বামী।। অপমৃত্যুর মামলা

চাঁদপুর শহরের পালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
দুজনের মৃত্যুর বিষয়ে থানা পুলিশের প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছে। উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে পারিবারিক কলহে এই হত্যা এবং আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে চাঁদপুর শহরের পালপাড়া শাহজাহান ভিলা নামক একটি বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে স্ত্রী শিউলি আক্তার (৩৫) ও স্বামী সবুজ আহমেদ(৪৫)-এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার পর ময়না তদন্ত করা হয়। ময়না তদন্তের পর লাশ পরিবারের ব্যবস্থাপনায় দাফন করা হয়।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ময়না তদন্ত শেষে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ তাদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। তবে স্বামী সবুজ আহমেদের পরিবারের লোকজন মৃতদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানালে দুজনকেই শিউলি আক্তারের পরিবার বুঝে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, চাঁদপুর শহরের শহরের ওয়্যারলেস বাজার এলাকার মোল্লা বাড়ির আবু তাহেরের মেয়ে শিউলি আক্তার। তার আগে বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করার সুবাদে সেখানে কর্মরত সবুজ আহমেদের সাথে সখ্যতা, পরে তাকে বিয়ে করেন শিউলি। সবুজের স্বজনরা ঢাকাতে থাকলেও শিউলিকে বিয়ে করার কারণে গত ৫/৬ মাস যাবৎ চাঁদপুর শহরের পালপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন সবুজ আহমেদ। সে বেকার ছিলো বলে জানা যায়। পরকীয়া করে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় নানা অশান্তি। শিউলির দুই সন্তান নানা বাড়িতে থাকে।
নিহত শিউলির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ঢাকায় ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরিরত অবস্থায় সবুজের সাথে পরিচয় হয় শিউলির। প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে শিউলি দুই সন্তান নিয়ে চলে আসে চাঁদপুরে। কিন্তু তারা গোপনে পরকীয়া করে দুজনে দ্বিতীয় বিয়ে করে। শিউলি ২ সন্তান নিয়ে চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতো ও তার স্বামী সবুজ প্রতাপ সাহা রোডে শাহজাহান ভিলার দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেয়।
প্রায় সময় শিউলি সবুজের বাসায় এসে সময় কাটাতো।
সবুজ বিদেশ যাওয়ার কথা বলে ৪ লক্ষ টাকা শিউলি আক্তারের কাছে চায়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
অবশেষে দরজা আটকে শিউলি আক্তারকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার পর স্বামী সবুজ ফ্যানের সাথে রশি লাগিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনা চাঁদপুরের বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।