মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২৩

ফরিদগঞ্জে সরকারি চাল উদ্ধারকাণ্ডের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

নিজেকে নির্দোষ দাবি সোহেল বেপারীর, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার অনুরোধ সাংবাদিকদের

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
ফরিদগঞ্জে সরকারি চাল উদ্ধারকাণ্ডের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

ফরিদগঞ্জে ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত গুদাম থেকে সরকারি চাল উদ্ধারকাণ্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মৎস্যচাষী সোহেল বেপারী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, সরকারি চাল বিক্রি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোয়ালভাওর বাজারের ব্যবসায়ী ওলি উল্যাহ বেপারী তা গুদামজাত করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তার গোডাউন থেকে জব্দ করেছে এবং তার ছেলেকে তিন মাসের জেল দিয়েছে। কিন্তু চতুর ওলি উল্যাহ বেপারী এবং তার ছেলে সাইফুল উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার সাথে থাকা পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার নাম জড়িয়ে কথা বলেছে। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি নিজের সততার প্রতি দৃঢ় আস্থা রয়েছে বিধায়। সেদিন আমি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও বলেছি, এখনো বলছি। আমি একজন মৎস্যচাষী এবং গোয়ালভাওর বাজারে আমার মাছের আড়তসহ কয়েকটি দোকান রয়েছে। ৩০টির বেশি মাছের খামার ও এসব ব্যবসা নিয়ে আমি ব্যস্ত। আমার নামে কোনো চালের ডিলারশিপ নেই। ফলে আমি চাল বিক্রি করবো কীভাবে?

আপনাদের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে সাইফুল কেনো আমার নাম বললো? তার কারণ হলো, তাদের সাথে আমার জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। একটি ঝিলের মালিকানা নিয়ে আমার সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় । সাইফুল ইসলামের পিতা ওলি উল্যাহ বেপারী চলতি বছর এই ঝিলকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। আমি ওই ঘটনায় দু বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হাজিরা দিলেও তিনি হাজির হননি। এ বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে এখনো ঝামেলা রয়েছে। তাছাড়া আমার নিজের অনেক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে, আমার যদি চাল কিনতে হতো, তাহলে আমি নিজে মাছের খাবার হিসেবে কিনে আমার কাছেই রেখে দিতাম। তার কাছে বিক্রি করবো কেনো? বরং আমার সাথে বিরোধ থাকা সত্ত্বেও আমি নিয়মিত তার দোকান থেকে মাছের খাবারের জন্যে খাদ্য ক্রয় করে থাকি। আমি এই সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট বলতে চাই, আমার বিরুদ্ধে যে জরিমানা ধার্য হয়েছে, তা আমি আদালতের সম্মান এবং উপস্থিত দলীয় ও বাজার ব্যবসায়ীদের অনুরাধে দিয়েছি। কিন্তু এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবো এবং পরবর্তীতে ওলি উল্যাহ বেপারী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করবো। আমি রাজনীতি করি স্বচ্ছতার সাথে। আমি খুদ খেয়ে মুখ নষ্ট করার মানুষ নই। আপনারা যারা কলম সৈনিক রয়েছেন, তারা এই ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করুন, রিপোর্ট করুন। আমার সংশ্লিষ্টতা পেলে আমার বিরুদ্ধে লিখুন। আপনারা বাজারের সিসি ক্যামেরা, সরকারি চালের উপকারভোগীদের সাথে কথা বলুন। চালের ডিলার, বাজারের সিসি ক্যামেরা চেক করুন। তখনই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত চলার সময়ে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীর কাছে দেয়া ওলি উল্লাহ ও তার ছেলে সাইফুলের বক্তব্যও দু রকম। বস্তুুত তারা নিজেদের দোষ আমার ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। মূলত সম্পত্তিগত শত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং আমার স্পষ্টবাদিতার জন্যেই আমাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা দিয়ে কালিমা কাঁধে নিতে হলো। আমি এই সংবাদ সম্মেলনে এসে আবারো স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আমি চালকাণ্ডের সাথে জড়িত নই। আপনারা অনুসন্ধান করুন। দেখুন কে বা কারা এর সাথে জড়িত। আমার এই বিষয়ে সৎ সাহস রয়েছে বলেই আমি আপনাদের সামনে এসে কথা বলার জন্যে দাঁড়িয়েছি। আমি বিগত বন্যায় লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বর্তমানে আমার ৩০টির বেশি পুকুর ও ঝিল রয়েছে। এগুলো চাষাবাদে ব্যস্ততা রয়েছে। সেখানে আমার বড়ো অংকের টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। তাই খুদ খেয়ে মুখ নষ্ট করার মানুষ আমি নই। বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আশা করছি, আপনাদের লেখনি শক্তির মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে। তাতে সত্যের জয় হবেই।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মামলা হামলা জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছি। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি বাড়িতে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমি চেষ্টা করেছি নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কিছু দুষ্কৃতকারী গোয়ালভাওর বাজারে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজি শুরু করলে আমরা প্রতিবাদ করেছি। বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে লাঠি মিছিল করে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছি। বস্তুত সেই সময় থেকেই আমি এলাকার একটি পক্ষের রোষানলে পড়েছি। তাছাড়া রাজনৈতিক গ্রুপিং তো রয়েছেই।

প্রেসক্লাবের সভাপতি মামুনুর রশিদ পাঠানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গোয়ালভাওর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সম্পাদক মো. আলী বেপারী, শাহ আলম শেখ, মো. পলাশ, আ. সালাম খান প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়