প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০১:২৫
প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়া সেই রাব্বির হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
সেই রাব্বির হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
|আরো খবর
মিজানুর রহমান।। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেবার পর অসহায় চাঁদপুরের সেই ছোট্ট রাব্বি এখন অনেক ভালো আছেন।সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রামদাসদী পীর বাদশা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে পড়ছে সে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তার পরিবার ঘরও পেয়েছে। ভবিষ্যতে যেন অর্থের অভাবে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য রাব্বিকে সরকারিভাবে
৫ লক্ষ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট করে দেয়া হয়েছে।
১৫ ই আগস্ট,২০২৩ খ্রিঃ তারিখ মঙ্গলবার বেলা বারোটার সময় চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি শিশু রাব্বির হাতে তার বাবা মা ও বোনের উপস্থিতিতে শিক্ষা উপকরণসহ অর্থের চেক তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পৌর মেয়র মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান জুয়েল সহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতায় ১১ বছরের অসহায় রাব্বি ও তাঁর পরিবার খুঁজে পেল নতুন ঠিকানা। অর্থের অভাবে তার আর লেখাপড়া বন্ধ হবে না। এজন্য শিশু রাব্বি ও তারঁ মা বোন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ জুলাই জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সাধারণ রোগীর মতো ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজন, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় ছবি তোলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য করেন, ভিড়ের মাঝে একটি শিশু দাঁড়িয়ে দূর থেকে সালাম দেয়। শিশুটির নাম রাব্বি। তিনি রাব্বির কাছে যান ও পরম মমতায় তাকে আদর করেন। এ সময় তিনি ছোট্ট রাব্বির কাছে জানতে চান- সে কী করছে, কার সঙ্গে হাসপাতালে এসেছে, কোন ক্লাসে পড়ছে ?
১১ বছর বয়সী রাব্বি প্রধানমন্ত্রীকে জানায়, সে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের ক্যান্টিনে কাজ করে এবং সেখানেই থাকে। তার বাবা মারা গেছে। ক্যান্টিনে যোগ দেয়ার আগে, শিশুটি দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। রাব্বি প্রধানমন্ত্রীকে বলে, ‘আমি চাঁদপুরে মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাই। আবার পড়ালেখা শুরু করতে চাই।’মা রাবেয়া বেগম সুতার কারখানায় কাজ করত। রাব্বির সৎ বাবা জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুর।
প্রধানমন্ত্রী রাব্বির কথা শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি তার শিক্ষা ব্যয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ ও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক চাঁদপুর জেলার জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান একটি গাড়ি পাঠিয়ে ওইদিন রাতেই রাব্বিকে চাঁদপুরে তার মায়ের কাছে নিয়ে আসেন। রাব্বির মা রাবেয়া বেগমের নামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর প্রদান করা হয়েছে রামদাসদী আশ্রয়ন কেন্দ্রের পাশেই পীর বাচ্চা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাব্বি কে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছে এবং একজন সহকারী শিক্ষককে পাইভেট টিউটর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক চাঁদপুরের নির্দেশনা মোতাবেক চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাব্বি কে দুই সেট জামা ও প্যান্ট, ১টি স্কুল ব্যাগ, ১টি ওয়াটার বোতল,এক জোড়া মোজাসহ জুতা প্রদান করা হয়েছে।
তাছাড়া ভবিষ্যতে যেন সত্যের অভাবে রাব্বির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য চাঁদপুর- ৩ আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি, চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং জেলা প্রশাসকের আর্থিক সহযোগিতায় নির্বাহী অফিসার চাঁদপুর সদর এবং রাব্বির মায়ের যৌথ স্বাক্ষরে সোনালী ব্যাংকে রাব্বির জন্য ৫ লক্ষ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট এবং একটি সঞ্চয় হিসাব খোলা হয়েছে। সেখান থেকে রাব্বি প্রতিমাসে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা লভ্যাংশ পাবে। এই টাকা দিয়েই তার লেখাপড়া এগিয়ে যাবে। রাব্বির উচ্চশিক্ষা শেষ হলে তার কর্মসংস্থানের জন্য এই ফান্ড ব্যবহার করতে পারবে।