মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯

শিক্ষার উদ্দেশ্য ও বর্তমান বাস্তবতা

খায়রুল আলম
শিক্ষার উদ্দেশ্য ও বর্তমান বাস্তবতা

শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড। এর মূল লক্ষ্য একজন মানুষকে যোগ্য, দক্ষ ও কর্মক্ষম নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে শিক্ষা যেন কেবল খাতা, কলম, পরীক্ষা আর সার্টিফিকেট অর্জনের প্রতিযোগিতা। পাঠ্যসূচি বাস্তবমুখী নয়, দক্ষতাভিত্তিকও নয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী আজ চাকরি না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে।

শিক্ষায় ভূতের উপস্থিতি কোন ভূত?

‘সর্ষের ভেতর ভূত’ মানে এই যে, শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেই এমন কিছু ত্রুটি ও সমস্যা লুকিয়ে আছে যেগুলোই তরুণদের কর্মসংস্থানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। উদাহরণস্বরূপ : নকলনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা : সৃজনশীলতার বদলে মুখস্থনির্ভরতা। বাজার উপযোগী না হওয়া : পড়াশোনা শেষ করেও চাকরির বাজারে প্রয়োজনীয় দক্ষাতার অভাব। কারিগরি শিক্ষার অবমূল্যায়ন : সাধারণ শিক্ষার তুলনায় কারিগরি শিক্ষাকে এখনও হীন চোখে দেখা হয়। চাকরিকেন্দ্রিক মানসিকতা : উদ্যোক্তা হওয়ার শিক্ষা বা অনুপ্রেরণা নেই।

শিক্ষিত বেকারদের করুণ পরিণতি

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় এক কোটির বেশি শিক্ষিত তরুণ-তরুণী কর্মহীন। এই শিক্ষিত বেকার শ্রেণির সংখ্যাই প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তারা যেমন রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তেমনি নিজের ও পরিবারের জন্য সৃষ্টি করছে হতাশা, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ।

করণীয় : ভূত তাড়ানোর উপায়

শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন : বাস্তবমুখী ও দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রসার : কর্মমুখী শিক্ষা তরুণদের স্বনির্ভর হতে সাহায্য করবে। উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ : শিক্ষায় উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা ও প্রশিক্ষণ রাখতে হবে। চাকরি সৃষ্টির পরিবেশ : সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।

যদি শিক্ষাই আমাদের একমাত্র ভরসা হয়, তবে সেই শিক্ষার ভেতর লুকিয়ে থাকা সমস্যাগুলোকে খুঁজে বের করে সমাধান করতেই হবে। না হলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে সামাজিক অস্থিরতা। তাই এখনই সময় সর্ষের ভেতরের ভূতকে চিহ্নিত করে তাড়িয়ে দেওয়ার, যাতে শিক্ষিত তরুণরা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার আলোয় পথ খুঁজে পায়।

খায়রুল আলম : ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়