প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২:২১
মধ্যযুগীয় কায়দায় গোয়ালঘরে শিকল দিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১
মতলব উত্তর উপজেলার রায়েরকান্দি গ্রামে এক নিরীহ কাঠমিস্ত্রিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গোয়ালঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী কাঠমিস্ত্রির নাম লোকমান হোসেন ভুইয়া। অভিযুক্ত ব্যক্তি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার প্রভাবশালী মো. মাসুদ। পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
|আরো খবর
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মো. মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে মতলব উত্তর উপজেলার রায়েরকান্দি এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। এই সময় তিনি অবৈধভাবে ধনাগোদা নদীতে জাগ তৈরি করে মাছ চাষ করে আসছিলেন। সম্প্রতি ওই জাগে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারার সন্দেহে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ রাতে কাঠমিস্ত্রি লোকমান হোসেন ভুইয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় মাসুদ ও তার সহযোগীরা। পরে তাকে একটি গোয়ালঘরে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের সময় লোকমানের কাছে দোষ স্বীকার করতে চাপ দেয়া হয় এবং বলা হয় দোষ স্বীকার করলে ছেড়ে দেয়া হবে।
একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর মা জাহানারা বেগম ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে অভিযুক্ত মাসুদ ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। নিরূপায় হয়ে তিনি রোববার (২১ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে লোকমানকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী কাঠমিস্ত্রি লোকমান হোসেন জানান, আমি গরিব মানুষ। কাঠমিস্ত্রির কাজ করি। কারো সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। আমাকে জোর করে ধরে এনে গরু ঘরে বেঁধে অনেক মারধর করেছে। আমাকে বলেছে, আমি যেন স্বীকার করি যে তার জাগ ভেঙ্গেছি। কিন্তু আমি কিছুই জানি না।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা একে জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাস জানান, লোকমানকে অমানুষিকভাবে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে রেখে মারধর করা হয়েছে। প্রায় ৪ দিন ধরে এই নির্যাতন চালানো হয়। তার মা থানায় খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি এবং অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রেপ্তার করি। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সূত্র : চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর।








