সোমবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
  •   নির্মাণের এক বছর না যেতেই ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রীয় মডেল মসজিদের বেহাল দশা
  •   শেষ হলো পদ্মা-মেঘনায় জাল ফেলার নিষেধাজ্ঞা
  •   ফরিদগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
  •   মোবাইল ব্যবহারে নিষেধ করায় শিশু শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২২, ২২:২৭

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি

৭ম বার্ষিক সাধারণ সভার গঠনতান্ত্রিক অবৈধতার পেছনে কমিটি গঠনই কি মুখ্য?

গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হওয়া সভার সকল সিদ্ধান্তই ভিত্তিহীন : বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ * তড়িঘড়ি করে কমিটি করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ফাটল ধরাবেন না : ড্যাবস এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব * অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো কিছু ঘটলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে : নবাগত জেলা প্রশাসক * আরেকটি সাধারণ সভা সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিতে পারে : ড্যাবস এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের পরিচালক আহম্মদ আলী

রাসেল হাসান
৭ম বার্ষিক সাধারণ সভার গঠনতান্ত্রিক অবৈধতার পেছনে কমিটি গঠনই কি মুখ্য?

চাঁদপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্যে ১৯৮৭ সালে চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ডাঃ এম এ গফুর ও তাঁর স্ত্রী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মাহমুদা খাতুন নিজেদের মালিকানাধীন মূল্যবান জায়গা চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের সুন্দর ভবন নির্মাণের জন্যে দান করেছেন। উদ্দেশ্য ছিলো সেবামূলক কাজের আলো ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ডায়াবেটিক সমিতির পরিচালনা পরর্ষদের সদস্য ও আজীবন সদস্য হয়েছেন যাঁরা চাঁদপুরে নিজ গুণে আলো ছড়াচ্ছেন এমন ব্যক্তিবর্গ। ১৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সমিতির ৬ষ্ঠ বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে চাঁদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (বর্তমান ডিআইজি) জিহাদুল কবির বিপিএম, পিপিএম বলেছিলেন, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির পরিচালনা পর্ষদে জেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুধীজন অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এ যেন চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির পরিচালনা পর্ষদ নয়, চাঁদপুর জেলা পরিচালনা পর্ষদ।

যে কমিটি নিয়ে এমন প্রশংসা সেই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে তড়িঘড়ি করে কমিটি করে পদায়ন হতে তৎপর একটি বিশেষ মহল। সমিতির সাবেক সভাপতিকে ভুল তথ্য দিয়ে, কথিত ৭ম বার্ষিক সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সভা সচল রেখে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তাতে কলঙ্কিত করা হলো চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির আদর্শ গঠনতন্ত্রকে। চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি সৃষ্টির পর দীর্ঘ ৩৫ বছরে এমন ঘটনা এই প্রথম সৃষ্টি হলো। একটি পরিকল্পিত সভাকে বৈধতা দিতে কোরাম সংকটের সত্য গোপন করে লাগাতার মিথ্যাচার করতে লাগলো সংঘবদ্ধ চক্রটি। এ যেন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতি অসেবামূলক আচরণ।

২১ মে ২০২২ চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। বার্ষিক সাধারণ সভার আহ্বায়ক করা হয় সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সক্রিয় সদস্য রোটারিয়ান কাজী শাহাদাতকে। সভার নোটিস অনুযায়ী সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় ছিলো বিকেল ৩টা। বার্ষিক সাধারণ সভা যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য দুটি প্রস্তুতিমূলক সভাও করে উক্ত আহ্বায়ক কমিটি।

২১ মে বিকেল ৩টা থেকে একে একে উপস্থিত হতে থাকেন সমিতির পরিচালনা পর্ষদ ও আজীবন সদস্যবৃন্দ। অসুস্থতার কারণে সভায় উপস্থিত হতে পারেননি সমিতির অবৈতনিক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম। অনিবার্য কারণবশত সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না মর্মে লিখিতভাবে সভাপতি ও সম্পাদককে জানিয়েছেন বার্ষিক সাধারণ সভার আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত। বিকেল ৩টা থেকে সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়েনি উপস্থিতির সংখ্যা। যার ফলে ডায়াবেটিক সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভা বাতিলের বড় শঙ্কা দেখা দেয়।

গঠনতন্ত্রের ধারা ১৩-এর-০৬ উপ-ধারা অনুসারে সভা আহ্বান করার সময় হতে পরবর্তী ১ ঘণ্টার মধ্যে উপস্থিত সদস্যদের কোরাম পূর্ণ না হলে সভা মুলতবি ঘোষণা করা হবে এবং পরবর্তী দিন একই সময়ে, একই স্থানে নতুবা পরবর্তী নতুন তারিখে নতুন নোটিস প্রদানের মাধ্যমে সভা আহ্বান করা যাবে।

সমিতির সভার কোরাম বলতে বুঝায় মোট সদস্যের এক তৃতীয়াংশের উপস্থিতি। পরিচালনা পর্ষদ, আজীবন সদস্য ও দাতা সদস্য সব মিলিয়ে বর্তমানে চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সদস্য সংখ্যা ২২৫ জন। সে হিসেবে ২২৫ জনের এক তৃতীয়াংশ ৭৫ জন সভা আহ্বানের সময় থেকে পরবর্তী ১ ঘণ্টার মধ্যে উপস্থিত হলেই সভাটি বৈধ বলে গণ্য হবে। অন্যথায় গঠনতন্ত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী মুলতবি করতে হবে সভা।

২১ মে আহ্বানকৃত সমিতির ৭ম বার্ষিক সাধারণ সভায় মোট উপস্থিত সদস্য সংখ্যা ৭৯ জন। উপস্থিত স্বাক্ষর শীটে ৭৯ জন উপস্থিত থাকলেও এর মধ্যে ১২ জন সভাস্থলে এসেছেন বিকেল ৪টার পরে (সিসি ক্যামেরার ফুটেজে প্রমাণিত)। সে হিসেবে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সভাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন ৬৭ জন সদস্য। অর্থাৎ গঠনতন্ত্র অনুসারে সভার কোরাম পূর্ণ করতে প্রয়োজন ছিলো অন্তত আরও ৮জন সদস্য।

যদিও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোরাম পূর্ণ হয়েছে মর্মে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছিলো সাবেক জেলা প্রশাসক ও সমিতির সদ্য বিদায়ী সভাপতিকে। সে মর্মে তিনি তা সরল মনে বিশ্বাস করে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে সভাস্থলে এসে উপস্থিত হন। আসন গ্রহণ করেন ৪টা ৪২ মিনিটে। যেহেতু সভাপতিকে পরিকল্পিতভাবে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিলো, তাই তিনি সভার কার্যক্রম শুরু করতে বলেন।

বিকেল ৪টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত সভাস্থলে উপস্থিত ৭৯ জন সদস্যকে দেখিয়ে বলা হয়েছিলো তারা প্রত্যেকেই বিকেল ৪টার পূর্বে উপস্থিত হয়েছেন। অথচ প্রত্যেক সদস্যের আসা-যাওয়ার যে সময় পর্যবেক্ষণ করা হয় তাতে ১২ জন সদস্যের নির্ধারিত সময়ের পর সভাস্থলে আসার প্রমাণ মিলে। উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে আবুল কালাম ভূঁইয়া ও শফিকুল ইসলাম সভাস্থলে এসেছেন ৪টা ১ মিনিটে। অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আসেন বিকেল ৪টা ৯ মিনিটে, সূর্য কুমার নাথ আসেন ৪টা ৯ মিনিটে, অ্যাডঃ সেলিম আকবর আসেন ৪টা ১২ মিনিটে, শরীফ মোহাম্মদ আশরাফুল হক আসেন ৪টা ১৫ মিনিটে, হাজী আব্দুল লতিফ আসেন ৪টা ১৯ মিনিটে, সাবেক সিনিয়র সচিব মাসছুদুর রহমান পাটওয়ারী আসেন ৪টা ২২ মিনিটে, ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আসেন ৪টা ২৪ মিনিটে, জসিম উদ্দীন শেখ আসেন ৪টা ২৯ মিনিটে এবং কিশোর সিংহ ও অ্যাডভোকেট আহছান হাবীব আসেন ৪টা ৩০ মিনিটে।

ডায়াবেটিক সমিতির সিসিটিভির ফুটেজ দেখলেই উপরোক্ত সময়ের সত্যতা মিলে। নির্ধারিত সময়ের পর ১২ জন আসলেও কোন্ স্বার্থ হাসিলের জন্যে তাদেরকে ৪টার পূর্বে উপস্থিত দেখানো হয়েছে? যে বা যারা এমন মিথ্যাচার করে গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন তারা কারা? তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্যই বা কী? প্রশ্নগুলোর উত্তর বেরিয়ে আসলে উন্মোচন হবে ডায়াবেটিক সমিতির কুচক্রীদের নাম।

৭ম বার্ষিক সাধারণ সভার সঞ্চালক ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল আজম উপস্থিতিদের বিষয়ে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় যখন উপস্থিত ছিলেন তখন কোরাম পূর্ণ ছিলো। বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোরাম পূর্ণ হয়েছিলো কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। ‘কেন পারবেন না’ এমন প্রশ্ন করলে তিনি ফোনে কথা না বলে তার অফিসে গিয়ে কথা বলতে বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালক ইকবাল আজমের এই লুকোচুরিই বলে দেয় উপস্থিতির স্বাক্ষর শীট নিয়ে কী চলেছে পর্দার অন্তরালে।

সত্য ধামাচাপা দিতে ডিজিটাল যুগেও প্রযুক্তির সেবা না নিয়ে যথাসময়ে কোরাম পূর্ণ হয়েছিলো কি-না তা যাচাইয়ের লক্ষ্যে কাগজপত্রে কে স্বাক্ষর দিলো আর কে দিলো না, স্বাক্ষর শীটে কে সময় লিখলো আর কে লিখলো না কিংবা কেউ সেই স্বাক্ষর শীটে ঘষামাজা করেছে কি-না তা অনুসন্ধানে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। জেলা প্রশাসকের নিকট কেউ ফোন করে জানালো হাজিরা শীট কাটা-ছেঁড়া হচ্ছে। এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি কাগজপত্র, স্বাক্ষর শীট, ঘষামাজা, হাতের লেখার মিল এসব অনুসন্ধান করে আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইনকে দোষী সাব্যস্ত করে রিপোর্ট জমা দেন। যে রিপোর্টের আলোকে সমিতির সভাপতি তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে যান। অথচ সমিতির সিসিটিভির ফুটেজে কোন্ সদস্য কখন সভাস্থলে এসেছেন এবং সে অনুযায়ী স্বাক্ষর করেছেন কি-না বা বর্তমান স্বাক্ষরের স্থলে সে সময় লেখা আছে কি-না তা যাচাই করলেই কোরাম পূর্ণ না হওয়ার বিষয়টি দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যেতো। তদন্ত কর্মকর্তা তা না করে নির্ধারিত সময়ের স্বাক্ষরকে অনির্ধারিত সময়ে রূপান্তর করার দায় চাপিয়েছেন আইটি কর্মকর্তার উপর। যদিও আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন কারণ দর্শানোর নোটিস প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লিখিত জবাবে জানিয়েছেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বার্ষিক সাধারণ সভার আহ্বায়কের নির্দেশে তিনি হাজিরা শীট দেখার জন্য ১০ মিনিটের জন্যে তার কক্ষে আনেন। এ সময় হাসপাতালের আরও চারজন কর্মকর্তা তার কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। উজ্জ্বল হোসাইন যে স্বাক্ষর শীটে কোনো প্রকার ঘষামাজা করেননি তার সাক্ষ্য দেন উপস্থিত কর্মকর্তাগণও। উজ্জ্বল হোসাইনকে এ সংক্রান্ত আদেশ দেয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বার্ষিক সাধারণ সভার আহ্বায়কও।

অগঠনতান্ত্রিকভাবে বার্ষিক সাধারণ সভা সম্পন্ন করণের বিষয়ে সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমাকে কোরাম পূর্ণ হয়েছে মর্মে মুঠোফোনে যে সময়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে আমি সে সময়েই সভাস্থলে উপস্থিত হয়েছি এবং নিয়মমাফিক সভা সম্পন্ন করেছি’। জেলা প্রশাসকের বক্তব্য অনুসারে তাঁর নেয়া পদক্ষেপ সঠিক কিন্তু যিনি মুঠোফোনে ভুল বার্তা দিয়েছেন তিনিই পর্দার অন্তরালে কলকাঠি নেড়েছেন। অর্থাৎ তাঁকে যদি কোরাম পূর্ণ না হওয়ার সঠিক তথ্য দেয়া হতো তবে তিনি গঠনতন্ত্র অনুসারে সভা মুলতবি করতেন। যতক্ষণে তা প্রমাণ হয়েছে ততক্ষণে তিনি বিদায় নিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন থেকে।

তাই গঠনতন্ত্র অনুসারে পূর্বের সভা মুলতবি করে নতুন সাধারণ সভা আহ্বান করা হবে কি-না তার সিদ্ধান্ত নিবেন নবাগত জেলা প্রশাসক। চাঁদপুরের সচেতন মহল মনে করেন, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র সমুন্নত রাখতে নবাগত জেলা প্রশাসক সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিবেন।

চাঁদপুরে অগঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বার্ষিক সাধারণ সভা করার বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হওয়া সভার সকল সিদ্ধান্তই ভিত্তিহীন ও অকার্যকর। প্রযুক্তির যুগে কোনো সত্যই গোপন রাখা যায় না। আমাদের কাছে চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি থেকে লিখিতভাবে জানালে আমরা বিষয়টি ইনকোয়ারি করবো।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, আমি চাঁদপুরের সুধী মহলকে অনুরোধ করবো, তড়িঘড়ি করে কমিটি করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ফাটল ধরাবেন না। সময় নিয়ে গঠনতন্ত্রে নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে সকলে একযোগে নতুন কমিটি করুন। আপনাদের বিভাজনের কারণে সাধারণ মানুষ এত বছর ধরে যে সেবা পেয়ে আসছে তা থেকে যেন বঞ্চিত না হয়।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের পরিচালক আহাম্মদ আলী বলেন, আরেকটি সাধারণ সভা সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিতে পারে। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের ক্ষমতা না আছে সভাপতির, না আছে সাধারণ সম্পাদকের। তাই সদ্য সমাপ্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুপস্থিত-উপস্থিত সকলকে নিয়ে নতুন সাধারণ সভা করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সমস্যাটি আমি মাত্রই জানলাম। পুরো বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো কিছু ঘটলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হওয়া সভার সকল সিদ্ধান্তই ভিত্তিহীন : বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সভা অগঠনতান্ত্রিকভাবে সম্পন্নকরণ ও সভায় নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হওয়া সভার সকল সিদ্ধান্তই ভিত্তিহীন ও অকার্যকর। প্রযুক্তির যুগে কোনো সত্যই গোপন রাখা যায় না। বিষয়টি গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়েছে কি হয়নি তা যথাযথ তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। আমাদের কাছে চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি থেকে লিখিতভাবে জানালে আমরা বিষয়টি ইনকোয়ারি করবো।

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা এজন্যেই কমিটিতে ডিসিকে পদাধিকার বলে সভাপতি করতে সেন্ট্রাল কমিটি থেকে নিরুৎসাহিত করি। যদি ডিসি মহানুভব ও কর্মতৎপর হন তবে সেক্ষেত্রে পদকে সভাপতি না করে ব্যক্তি জেলা প্রশাসককে সভাপতি করা যেতে পারে। তাহলে এ ধরনের সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় না। জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির অনেক প্রশাসনিক কাজ থাকে। তিনি তাঁর কাজের ফাঁকে এসব কাজে ফোকাস কমও দিতে পারেন।

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির কার্যক্রম নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক বলেন, আমি যে কয়জনের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কাজে নিয়োজিত হয়েছি তাঁদের মধ্যে একজন চাঁদপুরের গফুর ভাই। তিনি চলে গেছেন, কিন্তু তাঁর কর্মের দীপ্তমান স্মৃতিগুলো রেখে গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে হলেও তাঁর প্রতিষ্ঠিত সমিতিটি বিতর্কের ঊর্ধ্বে টিকে থাকুক। আশা করবো চাঁদপুরের সুধীসমাজই গঠনতন্ত্রের এই সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ হবেন।

তড়িঘড়ি করে কমিটি করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ফাটল ধরাবেন না : ড্যাবস এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির ৭ম সাধারণ সভা নিয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, আমি চাঁদপুরের সুধী মহলকে অনুরোধ করবো তড়িঘড়ি করে কমিটি করে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ফাটল ধরাবেন না। সময় নিয়ে গঠনতন্ত্রের নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে সকলে একযোগে নতুন কমিটি করুন। আপনাদের বিভাজনের কারণে সাধারণ মানুষ এতো বছর ধরে যে সেবা পেয়ে আসছে তা যেন বঞ্চিত না হয়।

তিনি বলেন, গফুর ভাই (এম এ গফুর) যেমন উদার ছিলেন, কমিটির সকলে তেমন উদারতার পরিচয় দিন। আমরা সেন্ট্রাল কমিটি থেকে সর্বোচ্চ অনুরোধ করে বলবো, দয়া করে গঠনতন্ত্র ভায়োলেট করবেন না। অগঠনতান্ত্রিকভাবে কোনো দল, গোষ্ঠী তথা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারে না। প্রতিষ্ঠান যদি রেলগাড়ি হয় গঠনতন্ত্র রেল লাইন। লাইনচ্যুত হলেই ট্রেন ছিটকে পড়বে। তখন ট্রেনের পরিচালকদের কিছুই করার থাকবে না।

অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো কিছু ঘটলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে : নবাগত জেলা প্রশাসক চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, পূর্বের জেলা প্রশাসক যা অসমাপ্ত রেখে গেছেন নতুন জেলা প্রশাসক চাইলেই তার সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারেন। যে কোনো সাধারণ সভায় কমিটি করার উদ্দেশ্য নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে গণঐক্য তৈরি করা গণবিভক্তি নয়। তাই চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি পেছনের ভুল শুধরে সকলে মিলে সম্মিলিত সভা আয়োজন করে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেবামূলক কাজ করে যাবে-এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আরেকটি সাধারণ সভা সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিতে পারে : ড্যাবস এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের পরিচালক আহম্মদ আলী গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা সম্পন্নের বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (ড্যাবস)-এর এফিলিয়েটেড এসোসিয়েশনের পরিচালক আহম্মদ আলী বলেন, আরেকটি সাধারণ সভা সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিতে পারে। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের ক্ষমতা না আছে সভাপতির, না আছে সাধারণ সম্পাদকের। তাই সদ্য সমাপ্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুপস্থিত-উপস্থিত সকলকে নিয়ে নতুন সাধারণ সভা করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত।

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, দেড় মাস আগেও আমরা চাঁদপুরে গিয়েছি। সেখানে দেখেছি কত সুন্দর করে সকল কার্যক্রম চলছে। হঠাৎ করে একটি সভাকে কেন্দ্র করে কী যে হয়ে গেলো!

সভার কোরামের অপূর্ণতা নিয়ে তিনি বলেন, কোনো একটি সভায় কোরাম পূর্ণ না হতেই পারে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাটি পরদিন একই সময়ে বা পরবর্তী যে কোনো দিন আহ্বান করলে কী এমন ক্ষতি হতো তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। কালক্ষেপণ না করে ২১ তারিখই কেন সভা করতে হবে? যদি বদলিজনিত কারণে পূর্বের জেলা প্রশাসক পৃথক সভার সময় দিতে না পারতেন তবে নতুন জেলা প্রশাসক এসে তা বাস্তবায়ন করতেন। এভাবে একজন ডিসিকে মিসগাইড করে সভায় ডেকে এনে গঠনতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ব্যক্তি আর যাই হোক এমন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে থাকার যোগ্যতা রাখেন না। এখানে তাঁরাই কাজ করা উচিত যাঁদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়