বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫, ২১:১৪

বাধার মুখে ফরিদগঞ্জে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের সাইনবোর্ড টানালো পুলিশ

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
বাধার মুখে ফরিদগঞ্জে  বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের সাইনবোর্ড টানালো পুলিশ

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ, জোরপূর্বক গাছ কর্তন, দেয়াল নির্মাণ এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত অবশেষে সেই সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ করেন। রিসিভার হিসেবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব পান। থানা পুলিশ রিসিভারের সাইনবোর্ড এবং এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে আদালতের আদেশনামা জানাতে ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু রিসিভার নিয়োগের আবেদনকারী আদালতের আদেশ মানলেও প্রতিপক্ষরা আদেশ মানতে অনীহা প্রকাশ করে। তাদের বাধার মুখে পড়লেও এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ প্রতিপক্ষকে শান্ত রেখে রিসিভার নিয়োগের সাইবোর্ড টানিয়ে দেয় এবং তফসিলের চৌহুদ্দি মোতাবেক লাল নিশানা স্থাপন করে। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জের চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইরচর গ্রামে।

জানা গেছে, চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইরচর গ্রামে আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে সম্পত্তি জবরদখলের ঘটনায় চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (মামলা নং ৮৭৬/২৫ এবং স্মারক নং ৯৩১ )-এর আলোকে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলমকে রিসিভার নিয়োগ করে।

ভুক্তভোগী মো. মিজানুর রহমানের আবেদনের ভিত্তিতে ১৭ জুলাই ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ নির্দেশনা প্রদান করেন।

পরদিন ১৮ জুলাই শুক্রবার দুপুরে থানা পুলিশের একটি দল আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় উভয় পক্ষকে আদালতের আদেশনামা হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সাইনবোর্ড স্থাপন ও লাল নিশানা টানাতে গেলে প্রতিপক্ষরা বাধা দেয়। এ নিয়ে ঘন্টাব্যাপী তর্কাতর্কি হওয়ার পর স্থানীয় কিছু লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশ প্রতিপক্ষকে শান্ত করে আদালতের আদেশ অনুসারে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় ও লাল নিশানা স্থাপন করে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মো. মিজানুর রহমান জানান, অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম, তার পিতা শাহআলম, শাহাবুদ্দিন ওরফে সাবু উল্লা, তার ছেলে আলমগীর হোসেন ও মেয়ে সাথী বেগমসহ তাদের লোকজন অযথা আদালতের আদেশ বাস্তবায়নকালে পুলিশকে বাধা প্রদান করে। পুলিশ শেষ পর্যন্ত সাইনবোর্ড স্থাপন ও লাল নিশানা টানিয়ে আসলেও ওই প্রতিপক্ষরা রাতের আঁধারে সাইনবোর্ড গাছ থেকে নামিয়ে ফেলে দেয় এবং লাল নিশানা সরিয়ে ফেলে। যা আদালতের আদেশের অবমাননা।

তিনি আরো বলেন, আমি তাদের অত্যাচারে জর্জরিত। তাদের বারংবার বলেছি মামলা যেহেতু আদালতে রয়েছে, আদালতের নির্দেশ আমি মেনে নেবো। কিন্তু তারা কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না। আমার নিজের দায়ের করা ১৪৫ ধারা এমনকি তাদের দায়ের করা ১৪৫ ধারাও তারা ভঙ্গ করে কাজ করেছে। বাধ্য হয়ে আমি আদালতকে জানালে আদালত রিসিভার নিয়োগ করে।

এদিকে রিসিভার নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আবেদনে দেখা গেছে, ওই ইউনিয়নের ১২৩ নং লড়াইচর মৌজার বি.এস. ৭২৮, নং নামজারি জমা খারিজ-৯৬৯ নং খতিয়ানভুক্ত ৬৯৮ দাগে.০৭ একর, বি.এস.-৫৯৭ নং নামজারি জমা খারিজ-৯৬৯নং খতিয়ানভুক্ত ৬৯৯ দাগে .০৪ একর এবং বি.এস.-৫৯৭ নং নামজারি জমা খারিজ-৯৬৯ নং খতিয়ানভুক্ত ৭০০ দাগে .০৪ একর একুনে মো. ০.১৫ একর ভূমি। যার উত্তরে পারভেজ গং, দক্ষিণে শামছু গং, পূর্বে শরাফ উদ্দিন গং এবং পশ্চিমে মান্নান গং। যা দখল করে বিবাদীরা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়