শনিবার, ০১ মার্চ, ২০২৫  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৫, ০৬:১৮

শরীয়তপুর-মাদারীপুরে নদীতে ডাকাতি: গুলিবিদ্ধ ৪, গণপিটুনিতে নিহত ২

গুলি ও গণপিটুনিতে রক্তাক্ত জনপদ

মো. জাকির হোসেন
গুলি ও গণপিটুনিতে রক্তাক্ত জনপদ
ছবি : সংগৃহীত

শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের নদীপথে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে চারজন আহত হয়েছেন, আর স্থানীয়দের গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত হয়েছেন।

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শুরু

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনির রাজারচর এলাকায় একটি বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করে একদল সংঘবদ্ধ ডাকাত। তবে খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দিলে ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় বাল্কহেডের দুই শ্রমিক—ভান্ডারিয়ার মাসুম মিয়া (৩০) ও পিরোজপুরের আলামিন ফকির (১৯)—গুলি বিদ্ধ হন।

ডাকাতরা পালিয়ে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়ার ভাসানচর এলাকায় আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ডাকাতির খবর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা সতর্ক অবস্থান নেয়। ডাকাতরা কীর্তিনাশা নদী হয়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডোমসারের তেতুলিয়া এলাকার নদীপথ আটকে দেয়। বাধা পেয়ে ডাকাতরা স্পিডবোট রেখে তীরে উঠে পালানোর চেষ্টা করে।

হামলা ও প্রতিরোধ

এ সময় ডাকাতদের প্রতিরোধ করতে গেলে তারা হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ডোমসারের মোল্লা কান্দি এলাকার শ্রমিক তোতা মিয়া (৩৫) ও আরও একজন স্থানীয় বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ হন।

তবে শেষ রক্ষা হয়নি ডাকাতদের। স্থানীয়রা ধাওয়া করে মুন্সীগঞ্জের কালীচরের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুন্ডেরচরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরের সজীব (৩০) এবং অজ্ঞাত চারজনসহ মোট সাত ডাকাতকে ধরে ফেলে। তাদের গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ডাকাতদের পরিণতি

আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিকসহ পাঁচ ডাকাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ শ্রমিক আলামিন ফকির বলেন,"হঠাৎ দেখি ডাকাতরা স্পিডবোট নিয়ে আসছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা গুলি চালায়। আমার শরীরে গুলি লাগে, এরপর আর কিছু মনে নেই।"

পুলিশের অভিযান ও পরবর্তী পদক্ষেপ

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান,"ডাকাতরা পালানোর সময় আঙ্গারিয়া হয়ে শরীয়তপুরে ঢুকে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা সাতজন ডাকাতকে আটক করেছি। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্পিডবোট ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।"

নদীপথে ডাকাতি: নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ

সম্প্রতি শরীয়তপুর-মাদারীপুরের নদীপথে ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডাকাতদের দমনে অভিযান জোরদার করলেও সংঘবদ্ধ চক্র বারবার সক্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলদস্যুতা ও ডাকাতি দমনে নদী পথে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়