প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪, ০১:৪৯
চাঁদপুরে জেলে চাল বিতরণ নিয়ে বিরোধ
বহরিয়া বাজারে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ পুলিশসহ আহত ২০
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউপির সরকারি বরাদ্দ জাটকা রক্ষা কর্মসূচির জেলে চাল নিয়ে বিরোধ বা অনিয়মকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান গ্রুপ ও জেলে গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানার মকবুল হোসেন নামে একজন এসআই রক্তাক্ত জখম ও ৫ পুলিশসহ ২০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
|আরো খবর
শুক্রবার ৩ মে রাতে ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে ও বহরিয়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে এ সংঘর্ষ বহরিয়া বেড়িবাঁধ সড়কের ওপর লক্ষ্মীপুর বালু খোলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে লিপ্তরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ইট পাটকেল কাঁচের বোতল নিয়ে একে অপর গ্রুপকে ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা । এ সময় দুইদিকের যানবাহন চলাচল আটকা পড়ে।
এ সময় ২৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।
ঘন্টার পর ঘন্টা চলা এ সংঘর্ষ রাত ১১টার পর পরিস্থিতির শান্ত হয় এলাকা সূত্রে বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থল অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আহতদের মধ্যে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই মকবুল হোসেন (৫৫) ও কনস্টেবল আপেল মাহমুদ (৪০)কে ঢাকায় রেফার করা হয়। এছাড়া বাকিরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ওই ইউনিয়নের সাড়ে ৪ হাজার কার্ডধারী জাটকা জেলেদের চাল বিতরণ চলছিল। এ সময় নির্দিষ্ট জেলের তুলনায় চাল কম হওয়ায় ৬ নাম্বার ও ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের ৪০ থেকে ৫০ জন জেলেকে চাল দেয়া সম্ভব হয়নি। এ জন্য বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের নির্দেশে এ পর্যায়ে চাল বিতরণ বন্ধ ঘোষণা করা হলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম মনা খার বাড়ি এলাকার ওয়ার্ডের জেলেরা হামলা করে । এতে তাদের অন্তত ১০ থেকে ১২জন লোক আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ২৬ রাউন্ড গুলি ফাকা নিক্ষেপ করে। এসময় হামলাকারীদের হামলায় পুলিশের এসআই মকবুল হোসেনসহ আরও ৫জন পুলিশ আহত হন। পুলিশের গুলিতে ও হামলাকারীদের হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হন।
আরেকটি সূত্র জানায়,জেলেরা তাদের জাটকার চাল না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান সেলিম খানকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন একত্র হলে ৭নং ওয়ার্ডসহ চাল না পাওয়া ক্ষুব্দ জেলেদের সাথে এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা ও তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম বলেন, রাতে সেখানে চাল বিতরণের অনিয়ম নিয়ে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের লোকজন মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এখনো সেখানে আমরা অবস্থান করছি।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি শেখ মহসীন আলম বলেন, আমরা সেখানে হামলার ঘটনা শুনে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠাই। এ সময় আমাদেরকেও চারপাশ থেকে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাধ্য হয়ে ফাকা গুলি বর্ষন করি। এ সময় দেশিও অস্ত্র, লাঠিসোট ও ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় আমাদের একজন এসআইসহ বেশ কজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে অন্য কেউ আহত আছে কিনা আমার জানা নেই। আমরা এখনো ঘটনাস্থলে আছি। তবে কেউ গ্রেপ্তার নেই।