রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৩৮

ঢাকায় ফের সক্রিয় অগ্নিহোত্রী! কে এই বিতর্কিত RAW কর্মকর্তা?

‘RAW’-এর ছায়া ঢাকা কূটনৈতিক পাড়ায়: ভারতীয় গোয়েন্দা চীফ রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রী আবারও ঢাকায়

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন : মো. জাকির হোসেন
ঢাকায় ফের সক্রিয় অগ্নিহোত্রী! কে এই বিতর্কিত RAW কর্মকর্তা?
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকায় আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন ভারতের বহুল আলোচিত গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর প্রাক্তন স্টেশন চীফ রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রী। অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পরও তিনি ভারতীয় হাইকমিশনের কনসুলার ও শিক্ষা বিষয়ক মিনিস্টার হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

২০১৬: পাকিস্তানে বহিষ্কার ও ‘স্পাই স্ক্যান্ডাল’

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করে যে, ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রী আসলে ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর স্টেশন চীফ।

তাদের দাবি অনুযায়ী, তিনি: চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) প্রকল্পে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছিলেন,

তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) এর বিভক্ত গোষ্ঠীগুলোর সাথে যোগাযোগে ছিলেন,

সাম্প্রদায়িক উসকানি ও অর্থনৈতিক নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় যুক্ত ছিলেন।

তথ্যসূত্র:

The Express Tribune, Pakistan

VOA News

India Today

ভারতের প্রতিক্রিয়া:

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসকল অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ‘উস্কানিমূলক’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে চুপিসারে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাদের ভারতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

২০২৪: বাংলাদেশের মাটিতে ফের সক্রিয় রাজেশ!

বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রী ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে মিনিস্টার (কনসুলার ও শিক্ষা) পদে কর্মরত। ২০২৩ সালে বাংলা নববর্ষসহ বেশ কিছু কূটনৈতিক ইভেন্টে তার সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

তথ্যসূত্র:BDNews24 রিপোর্ট

সূত্রগুলো আরও জানায়, বাংলাদেশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট তার নিয়োগের বিরোধিতা করেছিল। তা সত্ত্বেও, হাসিনা আমলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অজ্ঞাত কারণে তার কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়। এই ঘটনাকে অনেকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রশ্রয়’ বলেও অভিহিত করছেন।

কেন উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা?

রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রীর অতীত কর্মকাণ্ড এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার ঢাকায় অবস্থান নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন:

“RAW-এর প্রাক্তন স্টেশন চীফের মতো একজন ব্যক্তি যদি কূটনৈতিক কভারে দেশের অভ্যন্তরে কাজ চালিয়ে যেতে পারে, তাহলে তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি এখনো বাংলাদেশের ভেতর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর পরও তার ঢাকা মিশনে অবস্থান দেশবাসীর মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে—এটা কি ভারতীয় হাইকমিশনের একটি নিয়মিত কূটনৈতিক পদ, নাকি চালু আছে ‘RAW’-এর পুরনো অপারেশনাল নেটওয়ার্ক?

জরুরি পদক্ষেপ সময়ের দাবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও কূটনৈতিক নিরাপত্তার স্বার্থে রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রীর অতীত ও বর্তমান ভূমিকা নিরপেক্ষভাবে পর্যালোচনার দাবি রাখে। প্রয়োজন হলে তার কার্যক্রম সীমিতকরণ বা দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।

যতক্ষণ না রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকরা এই বিষয়ে সজাগ হন, ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের কূটনৈতিক নিরাপত্তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে থাকবে।

তথ্যসূত্র যাচাই ও রিপোর্টিং সহায়তা: Tribune, VOA, India Today, BDNews24

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়