মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

সেলিনা হোসেনের সান্নিধ্যে
অনলাইন ডেস্ক

২৬ আগস্ট ২০২২। দিনটি ছিলো শুক্রবার। এদিনটি ছিলো আমার জন্যে ভালো লাগার দিন। কারণ এদিন চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত গল্পকার কাদের পলাশ সম্পাদিত ‘দৈনিক শপথ’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক শ্রদ্ধেয় সেলিনা হোসেনের সান্নিধ্য আমি পাই। প্রিয় জন্মভূমি চাঁদপুরে প্রতিথযশা কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন উপস্থিত হয়েছেন শুনে মনে আনন্দ পাই। সেলিনা হোসেনকে দেখবো, তাঁর সাথে কথা বলবো, তাঁর কথা শুনবো, অজানাকে জানার চেষ্টা করবো এ ছিলো আমার মনের আশা।

আমার ছেলে রুপম দে আর্ট ও তবল শেখার ক্লাস ছিলো বলে শুক্রবার সকাল থেকে ব্যস্তই ছিলাম। লেখক মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া মোবাইল ফোনে জানতে চাইলেন আমি কোথায় আছি। তখন ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ১২টা ছুঁইছুঁই। আমি মোখলেছ ভাইকে বললাম, চাঁদপুর শহরেই আছি। মোখলেছ ভাই বললেন, সার্কিট হাউজে আসতে। আমি বললাম, ছেলেকে বাবুরহাটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তারপর আসবো। আমার কথা শুনে মোখলেছ ভাই বললেন, ছেলেকে নিয়েই চলে এসো। তিনি বললেন, যতো অল্প সময়ের মধ্যে আসতে পারবে ততোই ভালো হবে।

যাক আমি সঠিক সময়ে ছেলের ক্লাস শেষ করে মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হলাম। আমার সাথে ছিলো বাবুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন রায় দাদার ছোট ছেলে তাপস রায় তুর্য। তুর্যও তবল শিখে। ছেলে রুপম দে প্রতি শুক্রবার ক্লাস শেষে বায়না করে পিশির বাসায় যাবে। আমাকে নিয়ে যেতেই হবে বলে সে আজও জেদ করলো। ছেলেকে আদর করে বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে আজ যাবো না। কারণ আজ একজন স্বপ্নের মানুষ চাঁদপুরে এসেছেন, তিনি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তুমি তাঁকে টেলিভিশনে দেখেছো। তখন আমার কাছ থেকে জেনে রুপমকে তুর্যও বোঝাতে লাগলো। তুর্যের কথায় রুপম রাজি হলো।

সার্কিট হাউজে পৌঁছে পাঁচ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতেই মোখলেছ ভাই তার ছোট মেয়ে জয়াকে নিয়ে আসলেন। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই শ্রদ্ধেয় সেলিনা হোসেন কোথায় রয়েছেন এবং তাঁর সাথে আমাদের পরিচিত কেউ আছেন কি? মোখলেছ ভাই বলেন, মুহাম্মদ ফরিদ হাসান এবং এইচএম জাকির আছেন। এরপর সার্কিট হাউজের দ্বিতীয়তলায় উঠে স্বপ্নের মানুষ, যাঁর নাম খ্যাতি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, তাঁর লেখা বই পড়েছি, গল্প পড়েছি, যাঁর উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা চলচ্চিত্রে সিনেমা ও টেলিভিশন নাটক তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে, সেই বিখ্যাত মানুষকে কাছ থেকে দেখার আনন্দটাই তো সব কিছু থেকে আলাদা। ২০২নং কক্ষের দরজা সামান্য টেনে প্রবেশ করতেই এইচএম জাকির ও মুহাম্মদ ফরিদ হাসান আমাকে এবং মোখলেছ ভাইকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কবি আমিনুল ইসলাম ঢাকা থেকে সেলিনা হোসেনের সফরসঙ্গী হয়ে এসেছেন। তিনি সরকারের উপ-সচিব। খুব আন্তরিকতার সাথে তাঁর লেখা গল্পের বই পড়ে শোনাচ্ছিলেন। এর ফাঁকে আমার ছেলে রুপম, মোখলেছ ভাইয়ের ছোট মেয়ে জয়া এবং তুর্যের পরিচয় পেয়ে তিনি ওদেরকে সেলিনা হোসেনের পাশে বসিয়ে ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দিলেন। পাশাপাশি নিজেও তোললেন। শ্রদ্ধেয় সেলিনা হোসেন আমাদের সকলকে আন্তরিকতার সাথে বিশেষ করে ছেলে-মেয়ের সাথে জড়িয়ে ধরে আদর করলেন। রুপম ও তুর্য অটোগ্রাফ নিয়ে ছবি তোললো। তিনি খুব স্নেহ-আদর করে আশীর্বাদ করলেন। রুপম এক ফাঁকে বলে, বাপ্পি আমি তো ওনাকে চিনি, টেলিভিশনে দেখেছি। রুপমকে বললাম, এখানে এসে তোমার কেমন লাগলো? সে তাৎক্ষণিক হেসে বললো, আমার খুব ভালো লাগছে। ওনি অনেক ভালো।

আসলেই সেলিনা হোসেন কথাসাহিত্যিক ও শিশুতোষ মনের মহান মানুষ, যা আমার শিশুপুত্রকে নিয়ে গিয়ে আমি বেশ আনন্দ পেলাম। তিনি এক পর্যায়ে আদর করে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিস্কুট দিলেন। মনের মাঝে স্মৃতিময় খুশি আনন্দে ভাবলাম, সত্যিই সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, ভালোবাসা হঠাৎ করেই হয়ে যায়। এজন্যে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই দৈনিক শপথের সম্পাদক গল্পকার কাদের পলাশকে।

* লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়