সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক

মানুষের মৃত্যু প্রকৃত নিয়মে সবারই হবে কেউ চিরস্থায়ী নয়। কিন্তু এই মৃত্যু আমাদের সমাজে দুই রকম হয়ে গেছে ।

তার আগে জানতে হবে মৃত্যু কি?

মৃত্যু অর্থ পরিসমাপ্তি, বিচ্ছিন্ন, বিচ্ছেদ, শেষ, ফিরে আসার অযোগ্য,অবসান ইত্যাদি।

জীব দেহ থেকে প্রাণ চলে যাওয়া বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই মৃত্যু হয় না। আপনার শরীরের একটা অঙ্গ আপনার নির্দেশ (অঙ্গহানি) কাজ করাটাও একধরনের মৃত্যু (ওই অঙ্গের জন্যে)। ধরুন আপনার ইচ্ছা হলো মাথার চুলে হাত দিবেন কিন্তু কোনো ভাবেই হাত মাথার কাছে আনতে পারেন না। এমতাবস্থায় ওই অঙ্গের মৃত্যু (প্যারালাইসিস) বলা হয়।

পূর্বের কথায় ফিরে আসি মৃত্যু বা বিচ্ছেদ দুই প্রকার।

সমাজ থেকে আপনি বিচ্ছেদ বরণ করেছেন। অন্যটি হলো আপনি সমাজ থেকে বিচ্ছেদ হয়ে গেছেন।

আপনি কিভাবে সমাজ থেকে বিচ্ছেদ বরণ করেছেন ?

নিজের স-জ্ঞানে নিজের ইচ্ছায় নিজেকে সব কিছু থেকে পৃথক করে নেয়া, আপনার মনের আনন্দ দুঃখ কষ্টের অংশীদার কাউকে না করার মাধ্যমে আপনি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছেদ বা মৃত্যুবরণ করেছেন।

আর এটাই হচ্ছে আপনার একাকিত্বের মুহুর্ত। আপনি সমাজে বসবাসরত অন্যদের দেখছেন তারাও আপনাকে দেখতে পায় কিন্তু স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়না। নিজের মন মস্তিষ্কের যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছেন কারো সাথে পরামর্শ কথা কিছুই হয় না।

কোনো কিছু প্রতি তীব্র ঘৃণা, অভিমান, রাগ, প্রতিজ্ঞা করার মাধ্যমে প্রথম মৃত্যু হয়ে থাকে।

আপনি কারো সাথে অভিমান করে আপনার প্রতিদিনের পছন্দের একটা খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিছেন, কিন্তু পরবর্তীতে আপনার প্রিয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হলেও অভিমানের কথা স্মরণে রেখে প্রিয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।

নিজের ইচ্ছা কে ক্ষুণœ বা মৃত্যু দিয়েছেন ।

অন্যত্র আপনি কারো সাথে অভিমান করে আমৃত্যু পর্যন্ত কথা না বলার প্রতিজ্ঞা করছেন

আর এমনভাবে আপনি ওই ব্যক্তি থেকে বিচ্ছেদ বরণ করে নিচ্ছেন।

প্রথম মৃত্যু হয় অঙ্গ অঙ্গের সঙ্গে, হৃদয়ে হৃদয়ের সাথে, মানুষে মানুষের সাথে। এই মৃত্যু বা বিচ্ছেদ আপনাকে দ্বিতীয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কষ্ট বা শাস্তি দিয়ে যাবে। আপনার শরীরের একটা অঙ্গ যখন নিজ ইচ্ছা মতো সঞ্চালন করতে পারবেন না তখন নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট লাগবে। প্রয়োজন মতো কোন কাজ করতে পারবেন না। একবার চোখ বন্ধ করে চিন্তার রাজ্যে গিয়ে কল্পনা করে দেখেন আপনার শরীরের একটা অঙ্গবিচ্ছেদ বা সঞ্চালন করতে পারেন না। কি করুন কষ্ট আপনাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে প্রথম মৃত্যু। দ্বিতীয় মৃত্যুর অপেক্ষা গুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত ।

সমাজে বসবাসরত অন্যরা আপনাকে বুঝতে যখন ব্যর্থ হয় তখন থেকেই আপনি প্রথম মৃত্যুর পথ যাত্রী হয়ে গেলেন। আপনি বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হবেন, সমাজ থেকে আপনার মনের মতো মানুষ খুজে বের করে আনতে। তখনই আপনি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন একজন ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। আপনার কাছে তখন একাকিত্ব শ্রেত মনে হবে। আপনার কাছে কিছু তখন ভালো লাগবে না। নিজেকে মনে হবে অস্বাভাবিক মানুষ অন্যদের কাছ থেকে ভিন্ন। ভিন্ন মস্তিষ্কের সাথে আপনি দ্বিতীয় মৃত্যুর কাছে চলে আসবেন।

আপনি সমাজ থেকে বিচ্ছেদ হয়ে গেছেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আমাদের মূলত মৃত্যু হয় শরীরের যা আপনি বরণ করেছেন সমাজ থেকে এখন আর আপনাকে সমাজের বসবাসরত অন্যরা দেখবে না আপনিও তাদেরকে দেখবেন না।

আপনার নিস্তেজ দেহ খানি পোড়া দিবে বা মাটি চাপা (কবর) দিবে।

আপনি যখন প্রথম মৃত্যু বরণ করেছেন তখন কেউ কান্না করে নাই। আপনি নিজে একা একাকিত্বে ভুগে গোপনে অনেক কান্না করেছেন চোখে পানি দিয়ে বিছানার বালিশ ভিজিয়েছেন।

রাত জেগে আকাশের দিকে তাকিয়ে সমস্ত অভিযোগ উপরে ছুড়ে দিয়েছেন। কেউ একটা বার আপনাকে বুঝতে চেষ্টা করে নাই। দ্বিতীয় মৃত্যুর ফলে তারাই এখন কান্না করছে আফসোস করছে।

আপনি যখন প্রথম মৃত্যুর পথ যাত্রী ছিলেন তখন আপনাকে জীবিত করা সম্ভব ছিলো আপনার সাথে সঙ্গ বা সময় দিয়ে আপনাকে স্বাভাবিক রাখা সম্ভব ছিলো যা লাইফ সাপোর্ট ছেয়ে বেশি ছিলো।

আপনার দুঃখ কষ্টের আনন্দের অংশীদার হওয়ার মাধ্যম আপনাকে প্রথম মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব ছিলো। আপনার নিস্তেজ দেহ আগুনে পুড়ে ছাই হবে বা মাটির সাথে মিশে যাবে। যারা আপনার জন্য কান্নাকাটি আফসোস করে তারাও কয়েক দিন পরে ভুলে যাবে। এই সমস্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি সমাজ থেকে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেন।

সমাজে বসবাস করতে গেলে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে সমস্ত বিপদণ্ডআপদ ধৈর্য্য এবং সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যেতে হবে। কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা জীবনকে স্থগিত করে দেওয়া যাবেনা। সুন্দর জীবনযাপন করার মাধ্যমে ক্ষণিক জীবনের সমাপ্তি ঘটুক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়