শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৯

শিশুর শিখন শেখানোর বৈচিত্র্যময় অন্তর্ভুক্তিকরণ কৌশল

রাশেদা আতিক রোজী
শিশুর শিখন শেখানোর বৈচিত্র্যময় অন্তর্ভুক্তিকরণ কৌশল

প্রতিটি শিশুই অনন্য এবং অসীম সম্ভাবনাময়। সব শিশুকে সমভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া উচিত। শিক্ষার জগতে প্রতিটি শিক্ষার্থী একটি স্বতন্ত্র রঙ, যা শ্রেণীকক্ষকে এক অনন্য মোজাইকে পরিণত করে। প্রতিটি শিক্ষার্থীই তার নিজস্ব শিক্ষণ শৈলী নিয়ে আপনার ক্লাসে আসে। একজন শিক্ষক হিসেবে, আপনার লক্ষ্য হলো নির্দেশনা, উপকরণ এবং মূল্যায়নে আবশ্যিক ব্যবস্থা এবং পরিবর্তন প্রয়োগ করে সকল শিক্ষার্থীর জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত (বয়ঁরঃু) শিক্ষণ পরিবেশ তৈরি করা। এটি কেবল সবার জন্য একই সুযোগ প্রদান করা নয়, বরং প্রত্যেকে যেন তাদের অনন্য উপায়ে শিখতে এবং সফলতা অর্জন করতে পারে তা নিশ্চিত করা। যেহেতু সব শিক্ষার্থী একই উপায়ে শেখে না বা শেখা বিষয় প্রদর্শন করতে পারে না, তাই আবশ্যিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে শিক্ষকেরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেন যেখানে ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষণ শৈলী ও চাহিদাসম্পন্ন প্রত্যেকেই উন্নতির সুযোগ পায়। নীচে দশটি অপরিহার্য কৌশল দেওয়া হলো যা শিক্ষকদের তাদের সকল শিক্ষার্থীর সম্ভাবনাকে উন্মোচন করতে সহায়তা করতে পারে।

১. নমনীয় বসার বিকল্প : শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন ও আরাম অনুযায়ী প্রথাগত সারির বাইরে বিভিন্ন ধরনের বসার ব্যবস্থা রাখা, যাতে শারীরিক স্বাস্থ্য ও মনোযোগ বজায় থাকে; শেখার প্রস্তুতি বাড়ে, যেমন-বিনব্যাগ, দঁাড়ানোর টেবিল, ল্যাপ ডেস্ক বা স্টেডিয়াম আসন ইত্যাদি।

২. ভিজ্যুয়াল সাপোর্ট : দৃশ্যমান উপকরণ ব্যবহার করে জটিল ধারণা সহজে উপস্থাপন করা যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপলব্ধি বাড়ানো। এতে জটিল ধারণা সহজে হজমযোগ্য হয়; স্মৃতিশক্তি জাগিয়ে তোলে; শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা বাড়ে, যেমন-ছবি, চিত্র বা ভিডিও, গ্রাফিক অর্গানাইজার, ফ্লোচার্ট, প্রক্রিয়া মানচিত্র বা সময়রেখা ইত্যাদি।

৩. বহু-সংবেদনশীল নির্দেশ : শেখার সময় একাধিক সংবেদন (দেখা, শোনা, স্পর্শ করা, নড়াচড়া) যুক্ত করে শক্তিশালী মস্তিষ্কের সংযোগ তৈরি করা। এতে জ্ঞান ধরে রাখা (জবঃবহঃরড়হ) স্থায়ী হয়; পাঠে মনোযোগ ও আগ্রহ বৃদ্ধি পায়; অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়, যেমন-কাইনেস্থেটিক কার্যক্রম, স্পর্শকাতর উপকরণ, স্বাদ ও গন্ধ জড়িত বিজ্ঞান পরীক্ষা।

৪. সহায়ক প্রযুক্তি (অঞ) : প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে পাঠ্যক্রমে প্রবেশাধিকার দিতে নির্দিষ্ট ডিভাইস বা সফ্টওয়্যার ব্যবহার। এতে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ে; প্রথাগত চ্যালেঞ্জযুক্ত উপকরণের অ্যাক্সেস মেলে, যেমন-টেক্সট-টু-স্পিচ, স্পিচ-টু-টেক্সট, অভিযোজিত কীবোর্ড।

৫. ভিন্নধর্মী নির্দেশনা : শিক্ষার্থীদের শেখার ভিন্নতা অনুসারে শিক্ষণ পদ্ধতি, উপকরণ এবং মূল্যায়নের ভিন্নতা আনা। এতে ব্যক্তিগত শিক্ষা নিশ্চিত করে; শিক্ষার্থীদের প্রেরণা বাড়ে; শ্রেণীকক্ষের বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান প্রতিফলিত হয়, যেমন-স্তরে বিভক্ত অ্যাসাইনমেন্ট, শেখার চুক্তি বা আগ্রহ-ভিত্তিক দলবদ্ধকরণ।

৬. বর্ধিত সময় : যে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট ও মূল্যায়নে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন, তাদের তা প্রদান করা। এতে সময়-সীমিত মূল্যায়নে চাপ কমে এবং প্রকৃত ক্ষমতা প্রদর্শিত হয়; মূল্যায়নকে আরও ন্যায়সঙ্গত করে তোলে, যেমন-পরীক্ষা বা অ্যাসাইনমেন্ট সম্পূর্ণ করার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া।

৭. বিকল্প মূল্যায়ন : প্রথাগত পরীক্ষা পদ্ধতির বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীর জ্ঞান পরিমাপের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা। এতে জ্ঞানের বৈচিত্রময় প্রদর্শন; সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হয়, যেমন-পোর্টফোলিও সংকলন, প্রোজেক্ট-ভিত্তিক শিক্ষা, জার্নাল বা লার্নিং লগ।

৮. স্ক্যাফোল্ডেড নির্দেশনা : শেখাকে ছোট খণ্ডে বিভক্ত করে শিক্ষার্থীকে ধাপে ধাপে সহায়তা বা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদান করা। এতে দায়িত্বের ধীর মুক্তি ঘটে; দক্ষতা তৈরি ও মনে রাখার (জবঃবহঃরড়হ) সম্ভাবনা বাড়ে; নিজস্ব গতিতে শেখা নিশ্চিত হয়, যেমন-ধাপে ধাপে নির্দেশাবলী দেওয়া, জ্ঞান অর্জনের পর সহায়তা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া।

৯.খণ্ড করা এবং কাজ ভেঙে দেওয়া : জটিল বা বড় কাজগুলিকে ছোট, সহজে পরিচালনাযোগ্য এবং সফলভাবে সম্পন্ন করার মতো ধাপে ভেঙে দেওয়া। বিশেষ করে দুর্বল কার্যনির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অভিভূততা হ্রাস পায়; প্রতিটি সম্পন্ন অংশ সাফল্যে উৎসাহিত করে। মাল্টি-স্টেপ অ্যাসাইনমেন্টের জন্য স্পষ্ট, ধাপে ধাপে নির্দেশাবলী বা সময়ের বিভাজন।

১০. সহযোগী শিক্ষা : শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উপায়ে দলবদ্ধ করা (পূর্ণ-দল, ছোট-দল, জোড়ায়) যাতে তারা একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারে। এতে সহপাঠী-সমর্থিত শিক্ষা প্রদান করে; সামাজিকীকরণ ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার বিকাশ ঘটে, যেমন-দলবদ্ধ সমস্যা সমাধান, জোড়ায় কাজ, বা সহকর্মীর কাজ মূল্যায়ন।

এই কৌশলগুলির সংমিশ্রণ প্রয়োগ করার মাধ্যমে, শিক্ষকেরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারেন যেখানে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার্থীরা শেখার এবং সফল হওয়ার সুযোগ পায়, প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব অনন্য উপায়ে।

এছাড়াও প্রাক-প্রাথমিকে আছে’। “নাকপুর চোখপুর কানপুর দঁাতপুর মাথাপুর স্টেশন’

এধষষবৎু ডধষশ’ হলো শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক একটি সক্রিয় কৌশল, যেখানে শিক্ষার্থীরা ছোট দলে ভাগ হয়ে ক্লাসরুমে সাজানো বিভিন্ন স্টেশন (স্টল) বা ‘গ্যালারি’ ঘুরে বেড়ায় এবং সেখানে প্রদর্শিত প্রশ্ন, কাজ, বা ধারণার উপর আলোচনা করে ও নিজেদের মতামত লিখে। এটি মূলত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা, বিশ্লেষণ ও পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

‘গ্যালারি ওয়াক’ পদ্ধতি প্রয়োগের প্রধান ধাপগুলি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

প্রস্তুতি ও বিন্যাস (চৎবঢ়ধৎধঃরড়হ ধহফ ঝবঃঁঢ়)

উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও প্রশ্ন তৈরি:

শিক্ষক প্রথমে ‘গ্যালারি ওয়াক’-এর শিক্ষণ উদ্দেশ্য (যেমন: কোনো বিষয় পর্যালোচনা, নতুন ধারণার প্রবর্তন, বা সমালোচনামূলক চিন্তার বিকাশ) স্থির করেন।

এই উদ্দেশ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবস্তু বা বিষয়ের উপর অর্থপূর্ণ ও মুক্ত-প্রশ্ন (ঙঢ়বহ-বহফবফ ছঁবংঃরড়হং), সমস্যা, চিত্র বা উদ্ধৃতি তৈরি করেন। প্রশ্নগুলি যেন উচ্চ-স্তরের চিন্তন দক্ষতা (ঐরমযবৎ-ঙৎফবৎ ঞযরহশরহম ঝশরষষং) বিকাশে সাহায্য করে।

স্টেশন তৈরি:

প্রতিটি প্রশ্ন বা কাজের জন্য একটি করে স্টেশন তৈরি করা হয়। সাধারণত ৫ থেকে ১০টি স্টেশন রাখা যেতে পারে।

প্রশ্নগুলি চার্ট পেপার, পোস্টার বোর্ড বা হোয়াইট বোর্ডে পরিষ্কারভাবে লিখে ক্লাসরুমের দেওয়ালে বা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে প্রতিটি স্টেশনের কাছে শিক্ষার্থীদের কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।

উল্লেখ্য, একবার রাজশাহী শহরের এক স্কুলে শিশুদের নাক কান চোখ দঁাত ইত্যাদির যত্ন নেওয়ার জন্য কৌশল হিসেবে নাকপুর চোখপুর কানপুর দঁাতপুর মাথাপুর ইত্যাদি নামে স্টেশন করেছে।

উপকরণ সংগ্রহ:

প্রতিটি স্টেশনের জন্য মার্কার পেন, পোস্ট-ইট নোট (ংঃরপশু হড়ঃবং) বা উত্তর লেখার জন্য কাগজ রাখা হয়। ভিন্ন ভিন্ন দলের জন্য ভিন্ন রঙের মার্কার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ট্র্যাকিং-এর সুবিধা দেয়।

কার্যকলাপ পরিচালনা (ঈড়হফঁপঃরহম ঃযব অপঃরারঃু)

দল গঠন ও নির্দেশনা:

শিক্ষার্থীদের ৩ থেকে ৫ জনের ছোট ছোট দলে ভাগ করা হয়।

শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে ‘গ্যালারি ওয়াক’ পদ্ধতির নিয়ম ও প্রতিটি স্টেশনে কতক্ষণ সময় ব্যয় করতে হবে (সাধারণত ৩-৫ মিনিট) তা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেন।

প্রতিটি দলকে একটি করে শুরুর স্টেশন নির্ধারণ করে দেন।

প্রথম স্টেশন:

প্রতিটি দল তাদের নির্ধারিত প্রথম স্টেশনে যায়।

তারা স্টেশনে প্রদর্শিত প্রশ্নটি পড়ে, সে বিষয়ে আলোচনা করে এবং তাদের মতামত, চিন্তা বা উত্তর চার্ট পেপারে বা পোস্ট-ইট নোটে লিখে রাখে। এই সময় শিক্ষক চারপাশে ঘুরে দেখেন এবং প্রয়োজনে সহায়তা বা ভুল ধারণা সংশোধন করেন।

ঘূর্ণন ও সংযোজন (জড়ঃধঃরড়হ ধহফ অফফরঃরড়হ):

নির্ধারিত সময় শেষ হলে, শিক্ষক ‘ঘূর্ণন’ (জড়ঃধঃব) সংকেত দেন এবং দলগুলি ঘড়ির কঁাটার দিকে বা নির্দিষ্ট ক্রমে পরবর্তী স্টেশনে যায়।

নতুন স্টেশনে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পূর্ববর্তী দলগুলির লেখা উত্তরগুলি পড়ে ও বিশ্লেষণ করে।

এরপর তারা নিজেদের আলোচনা থেকে প্রাপ্ত নতুন ধারণা বা সংযোজন যোগ করে। এক্ষেত্রে, তারা পূর্ববর্তী উত্তরের পুনরাবৃত্তি এড়িয়ে চলে এবং আগের উত্তরগুলির উপর ভিত্তি করে তাদের চিন্তাভাবনাকে আরও গভীর করে তোলে।

এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে যতক্ষণ না প্রতিটি দল সবগুলি স্টেশন ঘুরে আসে।

সমাপ্তি ও প্রতিফলন (ডৎধঢ়-ঁঢ় ধহফ জবভষবপঃরড়হ)

মূল স্টেশনে ফিরে আসা:

সমস্ত স্টেশন ঘোরার পরে দলগুলি তাদের শুরুর স্টেশনে ফিরে আসে।

তারা অন্য দলগুলির দেওয়া মতামত, সংযোজন বা ফিডব্যাকগুলি পড়ে ও সেগুলির উপর আলোচনা করে।

উপসংহার ও আলোচনা:

শিক্ষক সব দলকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা (উবনৎরবভ) শুরু করেন।

প্রতিটি দলকে তাদের স্টেশনের প্রধান বিষয়বস্তু, অন্যান্য দলের কাছ থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি (ওহংরমযঃং) বা নতুন শেখা বিষয়গুলি সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য বলা যেতে পারে।

শিক্ষক আলোচনার মাধ্যমে সমগ্র বিষয়ের একটি সংশ্লেষণ (ঝুহঃযবংরং) তৈরি করেন এবং শিক্ষার্থীদের যেকোনো ভুল ধারণা পরিষ্কার করেন।

গ্যালারি ওয়াক-এর সুবিধা (ইবহবভরঃং ড়ভ এধষষবৎু ডধষশ)

সক্রিয় শিক্ষা (অপঃরাব খবধৎহরহম): এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্রিয় থাকে।

পারস্পরিক সহযোগিতা: ছোট দলে কাজ করার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা, সহযোগিতা ও দলগত কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা: বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ বিশ্লেষণ এবং অন্য দলের কাজের উপর ফিডব্যাক দেওয়ার মাধ্যমে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়ে।

বিভিন্ন ধরনের শিখন: এটি কাইনেস্থেটিক (শারীরিক সঞ্চালন), আন্তঃব্যক্তিক (দলগত কাজ) এবং ভাষাভিত্তিক (আলোচনা ও লিখন) শিখনশৈলীর সাথে যুক্ত।

শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর: শিক্ষক লেকচার না দিয়ে শিক্ষার্থীরাই বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করে, ফলে ক্লাসে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায় এবং শিখন স্থায়ী হয়।

রাশেদা আতিক রোজী, ইন্সট্রাক্টর, ইউপিইটিসি, হাজীগঞ্জ, চঁাদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়