প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:১৪
চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সাক্ষাৎকার-১
রোটারী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে নিজেকে শাণিত করতে পেরেছি, মানবতার কাজ করার সুযোগ পেয়েছি
------হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী

চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সহযোগী সংগঠন চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে চাঁদপুর কণ্ঠের মুখোমুখি হয়েছেন ক্লাবটির সাবেক সেক্রেটারি এবং চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের বর্তমান জয়েন্ট সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী। তাঁর কাছে ক্লাবের ইতিহাস, সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও মানবিক কাজ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বেশ সাবলীলভাবে প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছেন। নিচে তা তুলে ধরা হলো--
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আপনাকে স্বাগত জানাই। কেমন লাগছে এই বিশেষ মুহূর্তে?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : আলহামদুলিল্লাহ এক চমৎকার মুহূর্ত। আমি সৌভাগ্যবান যে এমন একটি ক্লাবের সাথে যুক্ত ছিলাম। এ ক্লাবটি সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সারাদেশের সব রোটার্যাক্ট ক্লাবের মধ্যে প্রথম হয়েছিলো ২০০৮-২০০৯ রোটারী বর্ষে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কীভাবে এ ক্লাবের সাথে যুক্ত হলেন?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : আমার হাইস্কুলের বন্ধু ইবনে আজম সাব্বিরের হাত ধরেই রোটার্যাক্ট ক্লাবের সাথে যুক্ত হই। তবে প্রথম যেদিন ক্লাবের সাথে যুক্ত হই, সে সময় একটা প্রোগ্রাম ছিলো ফেনী মুহুরি সেচ প্রজেক্টে রোটার্যাক্ট জেলার। তখন অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এই ক্লাব আপনার জীবনে কী পরিবর্তন এনেছে? আপনি কি উপকৃত হয়েছেন?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : আর্তমানবতার সেবায় উদ্ধুদ্ধ কতগুলো যুবকের সাথে যুক্ত হয়ে নিজেকে শাণিত করতে পেরেছি। কথা বলা শিখেছি। মানবতার জন্যে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাব নিয়ে কোন্ বিষয়টি গর্বের মনে হয় আপনার কাছে?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : এই ক্লাবে নেতৃত্বে আসতে হলে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। নিজেকে গড়ে তোলা যায়, সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ হয়। এটাই গর্বের জায়গা আমার।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার জানা মতে, গত ৫০ বছরে চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানবিক প্রকল্পগুলো কী কী?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : আই ক্যাম্প, বৃক্ষ রোপণ ও বিতরণ, এতিমখানায় অবস্থানরত শিশুদের নিয়ে ইফতার ও ভোজ, হুইল চেয়ার বিতরণ, ভ্যান ও রিকশা বিতরণ, রোটারী ক্লাবের সামগ্রিক প্রজেক্টে সহযোগিতা করা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কোন্ প্রকল্পটি সমাজে সবচেয়ে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হয় আপনার কাছে ?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : আই ক্যাম্প এবং এতিমখানায় ইফতার ও ভোজ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : স্থানীয় যুবকদের সমাজসেবায় যুক্ত করতে ক্লাবটি কীভাবে ভূমিকা রাখছে?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : ক্লাবটি তরুণদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এই ক্লাবে যুক্ত হয়ে নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারছে। এই ক্লাবে যারা যুক্ত হয় তারা একাধিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আগামী ৫ বা ১০ বছরে ক্লাবকে কোথায় দেখতে চান?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা মোকাবিলা করে ক্লাবের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে উত্তরোত্তর উৎকর্ষ সাধন করবে--এটাই চাই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে আনতে কী ধরনের পরিকল্পনা থাকা দরকার বলে মনে করেন?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : তাদেরকে অবশ্যই আগে মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে জানান দিতে হবে। সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা সম্পর্কে অবগত করতে হবে। নিজের ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগী হতে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সমাজের কিশোর-তরুণদের জন্যে আপনার বার্তা কী হবে?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণরাই হলো অগ্রগণ্য। তাই আমার আহ্বান থাকবে তরুণদের প্রতি-- দেশটা আমাদের। আগে নিজেকে ভালবাসবো এবং দেশের কল্যাণেই নিজেকে নিয়োজিত রাখবো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আজকের তরুণ প্রজন্মকে রোটার্যাক্টে যুক্ত হতে আপনি কীভাবে উৎসাহ দেবেন?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : তাদেরকে ক্লাবের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তর ধারণা দিতে হবে। ক্লাব করলে নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন সহজ হয়। যারা এই ক্লাবের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং নিজ নিজ পেশায় উৎকর্ষ সাধন করেছেন তাদের উদাহরণ রাখতে হবে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাকে অনেক প্রশ্ন করলাম। এ প্রশ্নমালার বাইরে আপনার আর কিছু বলার আছে কি?
হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী : ধন্যবাদ আপনাকে। আমাকে আপনি এসব প্রশ্নের মাধ্যমে সেই ২০০৭ সালের দিনটার স্মৃতি রোমন্থনে নিয়ে কৃতার্থ করেছেন। সুন্দর স্বদেশে বিনির্মিত হোক সুন্দর মনের তরুণদের সুন্দর চিন্তাধারা। আর সেই সুন্দরের সবকিছু আছে রোটার্যাক্ট আন্দোলনে। রোটারী আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : কাজী আজিজুল হাকিম নাহিন।







