শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩০

শুষ্ক মৌসুম পুরোপুরি শুরু না হতেই ফরিদগঞ্জে ডাকাতের উপদ্রব!

অনলাইন ডেস্ক
শুষ্ক মৌসুম পুরোপুরি শুরু না হতেই ফরিদগঞ্জে ডাকাতের উপদ্রব!

ফরিদগঞ্জে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মুখোশধারী ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে পরিবারের সকলকে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়। এ সময়ে ডাকাতদের হামলায় ঘরে থাকা নারী ও শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছে। ঘটনাটি বুধবার (১২ নভেম্বর ২০২৫) দিনগত রাতে উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে ঘটে। আহতরা ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। আহতরা হলেন : জেসমিন বেগম (৩৮), নূর (১০) ও আলো (১০)। আহত জেসমিন বেগমের ভাই ফরিদ হোসেন জানান, বুধবার দিনগত রাতে বোয়ালিয়া গ্রামের উত্তর কাজী বাড়ির প্রবাসী মিজানুর রহমানের ঘরের জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে। পরে তারা অস্ত্রের মুখে ঘরে থাকা সদস্যদের মারধর ও জিম্মি করে প্রায় ৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা লুটে নেয়। তিনি জানান, ১০/১২ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই ঘটনা ঘটায়। সংবাদ পেয়ে রাতেই ফরিদগঞ্জ থানার এসআই হেলাল উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা চঁাদপুরের অন্যান্য উপজেলা থেকে বেশি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা এবং চঁাদপুর সেচ প্রকল্প বেড়িবঁাধের কারণে বন্যামুক্ত বলে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে অনেক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সাধারণত কার্তিক মাসে বর্ষার পানি নামতে থাকে, আর অগ্রহায়ণ মাসের শেষে মাঠঘাট শুকিয়ে যায়। আর তখনই মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত তিন মাস পুরো শীত মৌসুমে ফরিদগঞ্জে ডাকাতদের উপদ্রব চলে অনেক বেশি। একসময় তো এমন ছিলো যে, প্রতি দুদিনে ফরিদগঞ্জের কোথাও না কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটতোই। তারপর পুলিশের টহল ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহলের কারণে সে ডাকাতি অনেক কমে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ায় ফরিদগঞ্জে ডাকাতি ও চুরি বেড়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, এবার শুষ্ক মৌসুম পুরোপুরি শুরু না হতেই শীতের প্রারম্ভিক আনাগোনাতে ফরিদগঞ্জে একদিনের ব্যবধানে ডাকাতদের গুলিতে চা কোম্পানির একজন বিক্রয় প্রতিনিধি নিহত হলো এবং ডাকাতদের হামলায় প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজন আহত হলো। এ দুটি ঘটনা পুরো ফরিদগঞ্জ সহ সন্নিহিত চঁাদপুর সদর, হাইমচর, হাজীগঞ্জ, রামগঞ্জ ও রায়পুর উপজেলাবাসীর জন্যে সতর্কবাতা। এমতাবস্থায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জনতা মিলে কীভাবে ডাকাতের উপদ্রব ঠেকানো যায় সেটি গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে। থানার উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন সংক্রান্ত সভা করে চোর-ডাকাতবিরোধী সতর্কতা ছড়িয়ে দেয়া যায় কিনা সেটিও ভাবতে হবে। স্বাধীনতোত্তর চুরি-ডাকাতির ঘটনা অনেক বেড়ে গেলে হাজীগঞ্জ উপজেলায় থানা-পুলিশের উদ্যোগে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সহযোগিতায় উপজেলার আনাচেকানাচে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন সংক্রান্ত সভা করে গৃহীত পদক্ষেপে চোর-ডাকাতদের প্রতিহত করার নজির আছে। অতীতের সে নজিরের আলোকে চুরি-ডাকাতির ঘটনাপ্রবণ ফরিদগঞ্জ সহ অন্য সকল উপজেলায় পুলিশ-জনতা ও সেনাবাহিনী মিলে সম্ভাব্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে অবনতিবিলম্বে উদ্যোগী হতে হবে বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়