শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৪

অপেক্ষমাণ

হাসানাত রাজিব
অপেক্ষমাণ

হাসানাত রাজিব অপেক্ষমাণ

দীর্ঘ রাতের অতৃপ্তি শেষে, নিঃশব্দে ঝরে পড়া শিউলি ফুলগুলো।

নিশীথ রাত জেগে, নির্নিমেষ চোখ তাকিয়ে রয় তার আগমনী গান শোনার অভিপ্রায়ে।

সে যেন নিস্তরঙ্গ ছায়ায় এসে, বুকের জমাটবাঁধা পাথরটাকে উপরে ফেলে।

ঝাঁপিয়ে পরে উত্তাল, বিদীর্ণ বুকটাতে নীল প্রজাপতি পেন্সিলের স্পর্শে এঁকে দেয়।

যে জানালা আমাদের সদা আশ্রয়স্থল ছিল, এখানেই অপেক্ষমাণ জনারণ্য,

জনারণ্য ঠেলে জীবনের লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে, আমিও সেই কোলাহলে নিজেকে খুঁজি।

এই রাত্তিরে নেই কোলাহল, নেই বুকফাটা দুর্বিনীত আর্তনাদ,

মনে হয় যেন এলে বুঝি, শিয়রে রেখেছি তাই একজোড়া স্নিগ্ধ সুরবাঁশি।

শেষ বসন্তের ভালোবাসা কখনো বেসুরো কাক হয়ে আমাকে পীড়া দেয়,

যে ভালোবাসা প্রার্থিত উপহার ছিল, আজ কেন রূদ্ধশ্বাসে তা ছুটে যায় বুকের কাছ থেকে!

বসন্তের ফুলগুলো কি জানে বাতাস ধরে রেখে প্রেয়সীর সাক্ষাত পেতে?

ধোঁয়াটে ইটের প্রাচীরের আড়ালে স্বপ্নের মতো আমি অপেক্ষারত।

মুখোমুখি আবার

আবার মুখোমুখি হলাম,

সায়াহ্নের এপারে তুমি দাঁড়িয়ে, আর ওপারে অমোঘ আমি।

কে বিচ্ছেদের দায়ী ছিল, সে হিসেব আজ চুলোয় যাক।

অভিমানের গুপ্ত দরজাটা আজ খুলে চলো ভালোবাসি।

আচ্ছা, তুমি চলে গিয়ে আকাশ দেখনি কেন?

যে আকাশে প্রতিবাদের বজ্রপাত হয়েছিল,

হয়েছিল বিদ্রোহী নক্ষত্রের মিছিল।

সেদিনও আমি কেঁপে উঠেছিলাম,

আজও কেমন কম্পনে হৃদয় আমার ভাঙছে, দেখ।

আজ সব অভিযোগ তুলে রাখলাম

ক্যাফেতে মোড়ানো চায়ের কাপে।

চায়ের কাপ তো আর অভিমান বুঝে না।

তারা বোঝে শুধু প্রণয়ে মোড়ানো, টুকরো টুকরো প্রেম।

এখন আমার বিপরীতে চলে যাওয়ার সময় হয়েছে।

কে দায়ী? জানতে বড়ই ইচ্ছে করছে এ সন্ধ্যায়।

আবার আরেকটা সন্ধ্যায় মুখোমুখি হয়ে যাক

তখন উত্তরটা দিয়ে যেও আমায়।

একমুঠো ঘুম

তুমি আমায় বরং একমুঠো ঘুমে আচ্ছন্ন করে দাও,

দীর্ঘ রাতের পাহারায় দুচোখ আমার ভীষণ ক্লান্ত।

কণ্ঠস্বরের নিরুত্তাপ উদাসীনতা আমায় গ্রাস করে ফেলেছে।

আর আমি নির্জীব হয়ে থাকি সময়ের প্রান্তচিহ্নে,

এক নিঃশেষ শিয়রে, নিঃসঙ্গ প্রত্যাশায়।

সমস্ত রাত শেষে কুয়াশার পাখনায় চড়ে যেভাবে ফিরে আসে নিশাচরী পাখি,

তুমি ফিরে এসো ধূসর পেঁচার ডানায়, পাড়ি দিয়ে আবহমান কাল।

আমি চেয়ে রব ঘাসফড়িং এর মতোন, চেয়ে রব আকাশের কোমল নীলাদ্রির পানে।

এমন ভোরের অপেক্ষা আমার সহস্র দিনের, কখনো ফুল হয়ে ফোটে, কখনো অবহেলায় ঝরে পরে।

তুমি এসো এই ভোরের আলোয় নেমে, অঘ্রাণের অন্ধকারে নাইবা এলে, তবু আসো।

শিশিরভেজা ঘাস গল্পে আমি অভিবাদনে তোমার মন ভেজাব আকুল কণ্ঠে।

তারপর না হয় ফিরে যেও, নিয়ে যেও আমার নির্লিপ্ত ঘুম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়