শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৫৯

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা

ভার্সিটির সেশন জট নিরসনে কর্তৃপক্ষের এখনই ভাবতে হবে

শামীম হাসান
ভার্সিটির সেশন জট নিরসনে কর্তৃপক্ষের এখনই ভাবতে হবে

দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে মূখরিত হয়ে উঠেনি। চিরচেন শ্রেণিকক্ষ আর সহপাঠীদের সাথে প্রিয় শিক্ষকের সেই মুগ্ধ ক্লাসটা এখন আর করা হচ্ছে না। ক্যাম্পাসের কোন একটি আয়োজন ডিপার্টমেন্টের সবাই মিলে কতই না হৈ-হুল্লোড়ে মেতে থাকা হতো। তা যে শেষ কবে হয়েছে তাও স্মৃতির পাতা থেকে মুছে গেছে বহু আগে। এমনি সব ভাবনা প্রতিনিয়ত তাড়া করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মনে। করোনা পরিস্থিতি না থাকলে কেউ কেউ ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পর শিক্ষা সনদও হাতে পেয়ে যেতেন। আবার কেউ কেউ ফাইনাল ইয়ারে ভালো রেজাল্টের জন্য তোরজোর প্রস্তুতিও নিতেন হয়তো। করোনা সেসব স্বাভাবিক কার্যক্রমে এক বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেড় বছরেরও অধিক সময় পড়াশোর বাহিরে থাকার পর এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে শিক্ষার্থীদের মন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে৷ বেড়েছে সেশন জট। ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা আসলেও ভার্সিটির দীর্ঘ সেশন জট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখন থেকেই ভাবা উচিত বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। করোনাকালীন শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে চাঁদপুর কন্ঠের ধারাবাহিক প্রতিবেদন 'কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা'র এই পর্বে এমনটাই দাবী করেছেন চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পূজা রাণী সাহা।

চাঁদপুর কন্ঠ : বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক কাসে পড়ছে বলে মনে করেন? পূজা রাণী সাহা : এই দীর্ঘদিনের বন্ধে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিকতায়। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পড়াশুনার অভ্যাসটা ফিরিয়ে আনাই হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অথবা শিক্ষকদের জন্য চ্যালেঞ্জ।

চাঁদপুর কন্ঠ : করোনায় কেমন চলছে পড়ালেখা? পূজা রাণী সাহা : আমার মনে হয় এখন যেটা চলছে সেটা লোক দেখানো পড়ালেখা, নিয়ম-কানুনের পড়ালেখ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে শিক্ষার জন্য, জানার জন্য, জ্ঞান আহরনের জন্য যে পড়াশুনা, সেটা হারিয়ে গেছে।

চাঁদপুর কন্ঠ : মানসিক অবস্থা কেমন? পূজা রাণী সাহা : শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এর বড় একটা অংশ হচ্ছে পাবলিক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে যাদের শিক্ষাবর্ষ শেষের পথে ছিল কিন্তু করোনা মহামারীর জন্য থমকে গিয়েছে।

চাঁদপুর কন্ঠ : পড়ালেখা যেহেতু প্রায় বন্ধ। বিকল্প কোন কাজ করছেন কী? পূজা রাণী সাহা : জ্বি। আমার একটা অনলাইন পেইজ আছে। নাম-পুর্তলিকা। এই পেইজের মাধ্যমে নিজের তৈরি করা হ্যান্ডপেইন্ট পাঞ্জাবী, শাড়ি, কাঠের তৈরি গহনা নিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিজনেস করছি। আর টিউশন করে নিজের হাত খরচ চালাচ্ছি। তবে লম্বা সময় ধরে গতিশীল পড়াশোনার বাহিরে থাকায় নিকেজে নিজে খুঁজে বেড়াই। অতৃপ্ততায় ভুগি প্রতিনিয়ত।

চাঁদপুর কন্ঠ : আপনি কি মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী? পূজা রাণী সাহা : এই ব্যাপরে অনেকের অনেক মত তবে আমার মনে হয় এভাবে আর কত দিন বসে থাকা যায়? দেড় বছর আমরা প্রালিত শিক্ষাজীবন থেকে দূরে আছি। প্রতিটা শিক্ষার্থী এখন চাচ্ছে যেভাবেই হোক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে পরীক্ষা দিতে। আমার ও এটাই চাওয়া।

চাঁদপুর কন্ঠ : প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আপনার প্রতিক্রিয়া কী? পূজা রাণী সাহা : আসলে এই বিষয়ে আলাদা করে আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই। গত প্রশ্নগুলোতেই এর উত্তর দিয়েছি। এক কথায় বলতে চাইলে আমি মানুষিক ভাবে নিজের ভবিষ্যতে পরিকল্পনা নিয়ে খুব ই চিন্তিত।

চাঁদপুর কন্ঠ : অনলাইন পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন? পূজা রাণী সাহা : আমাদের দেশে যেখানে গ্রামে এখনো ঠিক ভাবে ফোনে কথা বলার মত নেটওয়ার্কই পাওয়া যায় না। আমাদের গ্রাম অঞ্চলে অনলাইনে পাঠদান বা অনলাইন পরীক্ষা এসব যেন এক প্রকার বিলাসিতা।

চাঁদপুর কন্ঠ : ভার্সিটির সেশন জট নিরসনে আপনার প্রস্তাবনা কী? পূজা রাণী সাহা : ভার্সিটির সেশন জট নিরসনে কর্তৃপক্ষের এখনই ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে আমার মনে হয় আমাদের সিলেবাস কমিয়ে স্বল্প সময়ের (৪-৬ মাস) মধ্যে কোর্স গুলো শেষ করে পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক ছুটি কমানোর ব্যাপারটা বিবেচনা করলে স্বল্প সময়ে কোর্স শেষ করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

চাঁদপুর কন্ঠ : স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্সিটি খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কী? পূজা রাণী সাহা : আমি পুরোপুরি একমত। অন্তত পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ গুলো আগে খুলে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রনালয় তা পর্যবেক্ষন করতে পারে। তারপর স্কুল খোলার ব্যাপারে তারা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খোলার ইঙ্গীত ইতোমধ্যে দিয়েছেন। আদৌ খুলবেন কি-না তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়