প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৫
চাঁদপুর -শরিয়তপুর মেঘনা সেতু নির্মাণে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণে মতবিনিময় সভা
চাঁদপুর - শরীয়তপুর ফেরি নৌ রুটের মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণে দুই পাড়ে পৃথক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই, ২০২৩ খ্রিঃ) চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে এবং আগের দিন
বুধবার শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেতু কর্তৃপক্ষের পরামর্শক আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. সমির কুমার ব্যানার্জী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সরকার চাঁদপুর - শরীয়তপুর নৌ সীমানার দুই পাশে আট কিলোমিটার এপ্রোস সড়কসহ দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটারেরও বেশি একটি সেতু নির্মাণ করবে। যার মাঝখানে ক্যাবল স্টেইড বা ঝুলন্ত থাকবে। আর এটি নির্মাণ হলে পরিবেশগত কী কী প্রভাব পড়তে পারে। এই বিষয়ে এর আগেই সরকারি সব পর্যায়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘শরীয়তপুর-চাঁদপুর ও গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ’ সড়কে মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতু প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণের জন্য এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
ড. সমর কুমার আরো বলেন, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণের জন্য সভায় অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে। এর মধ্যে ইলিশ মাছকে বাঁচানোর জন্য অনেকেই বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। আমরাও আমাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছি। সবার মতামতগুলো গুরুত্ব দিয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে। কীভাবে আমরা একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই সেতু নির্মাণ করতে পারি সে বিষয়টিই সভায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, নদীর ওপর মূল সেতু ৮ দশমিক ৪ কিলোমিটার হলেও এর দুই পাড়ে আরও ৮ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এবার মেঘনা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা নদীর ওপর এই সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০ কিলোমিটার। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ শেষ হয়। কয়েক ধাপে হয় একই কাজটি। ওই বছর মে মাসজুড়েই শরীয়তপুর ও চাঁদপুর অংশে নদীর মাঝখানে এবং উপকূলে সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলীরা মাটি ও ভূগর্ভস্থ অবস্থা নির্ণয় সম্পন্ন করেছেন। জুন মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই এ সমীক্ষা রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। এরপর অর্থ বরাদ্দ এবং সেতু নির্মাণে সরকার অগ্রসর হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত মেঘনা সেতুর এই মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন
চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটির (বিবিএ) সহকারী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, এনভায়রনমেন্টালিস্ট ডা. তাজুল ইসলাম, বিবিএ প্ল্যান প্রজেক্টের সোশ্যালজিস্ট আইরিন নাহার, সোশিয়ো ইকোলোজিস্ট বশির আহমেদ, ডিডিসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. মাহবুবুর রহমান।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম জাতীয় সংসদে তার নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুরের সঙ্গে স্থাপিত শরীয়তপুর - চাঁদপুর ফেরি নৌ রুটে মেঘনা সেতু বা টানেল নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।