প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
ইলিশ উৎসব আয়োজনের ধারাবাহিকতায় চতুরঙ্গের অনন্য রেকর্ড
কাজী শাহাদাত
চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনে ইলিশ উৎসব একটি বহুল পরিচিত, জনসমাদৃত ও আলোচিত উৎসবের নাম। ২০০৯ সালে এমন একটি উৎসব করার বিষয় মাথায় আসে চাঁদপুর জেলা শহরের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন চতুরঙ্গের মহাসচিব হারুন আল রশীদের। তিনি তাঁর সংগঠনের কর্ণধার অ্যাভোকেট বিনয় ভূষণ মজুমদারসহ অন্য সকল কর্মকর্তা, বিশেষ করে উপদেষ্টাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন এবং এ উৎসব নিয়ে অগ্রবর্তী হবার পরামর্শ দেন। এতেই হারুন আল রশীদ উদ্দীপ্ত হন এবং স্বীয় সাংগঠনিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে ২০০৯ সালেই প্রথম ইলিশ উৎসব আয়োজনের আয়াসসাধ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শুরু হলো উৎসবের যাত্রা। দেশের খ্যাতিমান কর্পোরেট সংস্থা ও স্থানীয় পর্যায়ে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর জোগাড় করে এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করে হারুন আল রশীদ ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩টি ইলিশ উৎসবের আয়োজন অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেন। আর মুখিয়ে থাকেন উৎসবের ১৪তম আসর আয়োজনের জন্যে।
|আরো খবর
আজ ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চাঁদপুরে চতুরঙ্গ কর্তৃক ১৪তম জাতীয় ইলিশ উৎসব চাঁদপুর-২০২২ শুরু হতে যাচ্ছে। এজন্যে আমরা সংশ্লিষ্ট সকলে সত্যিই কৃতার্থ। ভালোয় ভালোয় ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ইলিশ উৎসবটি সম্পন্ন করতে পারলে চতুরঙ্গ শুধু নয়, চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গন অতিক্রম করবে এমন এক মাইল ফলক, যা অন্য কোনো উদ্যোক্তার অতিক্রম করা হবে সুদূর পরাহত।
আমার আত্মশ্লাঘা ইলিশ উৎসবকে ঘিরে এটাই যে, আমি ১৪ বছর ধরে উৎসবটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছি। উৎসবের সাথে সংশ্লিষ্ট এর রূপকার হারুন আল রশীদসহ অন্যদের অহংবোধের জায়গা হলো, এই উৎসবে ২০১৬ সালে যোগদান করেই তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুস সবুর মন্ডল চাঁদপুর জেলাকে ইলিশের নামে ব্র্যান্ডিং করার পরিকল্পনা মাথায় আনেন। সেমতে চাঁদপুরের সরকার স্বীকৃত নাম হয়ে যায় বাংলায় 'ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর' আর ইংরেজিতে 'চাঁদপুর দি সিটি অব হিলশা'।
যে কোনো কষ্টকর আয়োজন এবং এর পেছনে নিরলস আত্মনিবেদন যে কোনো না কোনো ভালো ফল বয়ে আনে সেটা চাঁদপুরকে ইলিশের নামে ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
ইলিশ উৎসবের জন্মলগ্ন থেকে আমাদের একটি দাবি ছিলো এই যে, জাতীয় মাছ ইলিশের নামে জাতীয় পর্যায়ের ইলিশ উৎসবের আয়োজন করা হোক চাঁদপুরে। আমরা বেসরকারিভাবে যে আয়োজন শুরু করলাম, এটা সরকারিভাবে জাতীয় পর্যায়ের মান নিয়ে প্রতি বছর আয়োজিত হতে থাকলে রপ্তানিযোগ্য ইলিশ সম্পদ রক্ষায় ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইলিশ উৎসব আয়োজনের তাগিদ তৈরি হবে। আমাদের দাবির প্রতি সহমত পোষণ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পত্র লিখেছেন চাঁদপুরের দুজন জেলা প্রশাসক। এঁদের একজন প্রিয়তোষ সাহা, অপরজন ইসমাইল হোসেন। আনুষ্ঠানিক দাবি পূরণের জন্যে অপেক্ষা না করে আমরা এবার নিজেরাই সাহস করে এ উৎসবটির নাম দিয়েছি জাতীয় ইলিশ উৎসব, কেননা আমরা তথা চতুরঙ্গ ছাড়া ইলিশ উৎসব আয়োজনের ধারাবাহিকতা ও ব্যাপকতা অন্য কোনো সংগঠন বা সংস্থা এখনও দেখাতে পারেনি।
সশীরের কিংবা ভার্চুয়ালি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি ১৪তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন বলে আমরা আশাবাদী। আমরা তাঁর প্রতি অপরিসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা সংস্কৃতিমনস্ক সমগ্র চাঁদপুরবাসী এবং সব ধরনের পৃষ্ঠপোষক ও শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতা অকপটে স্বীকার করছি।
লেখক : প্রধান সম্পাদক, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ; সাবেক সভাপতি, চাঁদপুর প্রেসক্লাব।