শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

আপাতত গণটিকা দিতে না পারলে গণপরীক্ষা করে কোভিড নেগেটিভ শিক্ষার্থীদের নিয়ে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক
স্টাফ রিপোর্টার ॥

প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাহাকার বিরাজ করছে। সবাই ফিরতে চায় ক্লাসে। বিষণœতা কাটিয়ে শিক্ষকদের স্নেহ-শাসনের মধ্য দিয়ে গড়তে চায় ক্যারিয়ার। ঘরবন্দি ব্যাকুল হওয়া শিক্ষার্থীদের বর্তমান ভাবনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে তাদের মতামত নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ আয়োজন ‘স্কুল-কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা।’ এই পর্বে কথা বলা হয় চাঁদপুর গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ধীমান চক্রবর্তীর সাথে। পর্যায়ক্রমিক প্রশ্নের উত্তরে নিজের ক্ষোভ, আক্ষেপ, হতাশার কথা বলার পাশাপাশি তিনি যৌক্তিকতা তুলে ধরেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : করোনায় কেমন চলছে পড়ালেখা?

ধীমান চক্রবর্তী : মহামারি করোনায় কার পড়ালেখা কেমন চলছে জানি না, কিন্তু আমার পড়ালেখায় খুবই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া পর্যন্ত পড়ালেখার যে একটা স্পিড ছিলো, তা দীর্ঘদিনের বন্ধে হারিয়ে ফেলেছি। কলেজ বন্ধ, পড়ালেখার কোনো চাপ নেই, এজন্য পড়তে বসতেও ভালো লাগে না। শ্রেণিতে শিক্ষকদের স্নেহ-শাসনের মধ্য দিয়ে পড়ার যে আগ্রহ জন্মে তাতো আর অনলাইনে পাচ্ছি না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : মানসিক অবস্থা কেমন?

ধীমান চক্রবর্তী : মানসিক অবস্থার কথা বলতে গেলে তা সবচেয়ে বেশি খারাপ। পড়ালেখা হচ্ছে না, যার কারণে অনেক পিছিয়ে গেছি। দীর্ঘদিনের গ্যাপে নিজের পিছিয়ে পড়ার এই ক্ষতি কী করে কাটিয়ে উঠবো, আদৌ ওভারকাম করতে পারবো কি-না তা নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : একাদশে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সবকিছু বন্ধ। কলেজ লাইফটা এখনো উপভোগ করতে পেরেছেন?

ধীমান চক্রবর্তী : দেড় বছরের মত স্কুল-কলেজ বন্ধ। নতুন কলেজে ভর্তি হলাম, কিন্তু এখনো কলেজে যেতেই পারলাম না। এবং কলেজের একটা বর্ষ শেষ হয়ে গেল।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবি?

ধীমান চক্রবর্তী : অবশ্যই সময়ের দাবি। আর কত? সবকিছু খুলে গেলো, মার্কেট, দোকানপাট, অফিস আদালত চলছে নিজেদের মত। শুধু আমাদের স্কুল-কলেজ খুলতে গেলেই করোনা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। ঈদের আগে বিশেষ বিবেচনায় শপিংমল খোলা যায়, গণপরিবহণ চালু করা যায়, হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকদের একত্রিত করা যায়, শুধু বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই খোলা যাচ্ছে না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : প্রায় ৫৩০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

ধীমান চক্রবর্তী : করোনা থেকে শতভাগ মুক্তির কথা বিশ্বনেতারাও ভাবছেন না। আমাদের দেশ তা ভেবে কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াচ্ছেন তা আমার বোধগম্য নয়। করোনাকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। বের করতে হবে বিকল্প পথ। এভাবে দিনের পর দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাটা একটি দেশের জন্য কখনোই ইতিবাচক হতে পারে না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনলাইন পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন?

ধীমান চক্রবর্তী : অনলাইনের কথা বললেই আমাদের দেশের অবস্থার কথা ভাবা লাগে। প্রথমত আমাদের দেশে এমনও ছাত্র-ছাত্রী আছে যাদের কাছে অনলাইন ক্লাস করার মতো ভালো ডিভাইস নেই। এরপরতো আমাদের দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা যাচ্ছেতাই। আবার যারা ক্লাস করতে পারছে তাদের মধ্যে অনেকেই অনলাইন পড়াশোনা বুঝতে পারে না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কী?

ধীমান চক্রবর্তী : আমাদের দেশের সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনেক তারিখ ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু সরকার বার বারই ব্যর্থ হয়েছে। সরকার চাইলে আরো আগে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে সীমিত আকারে কিছু শ্রেণীর পাঠদান শুরু করতে পারতো। যেহেতু বর্তমানে দেশে টিকা সংকট, তাই আপাতত শিক্ষার্থীদের গণহারে টিকা দিতে না পারলেও অন্তত গণহারে কোভিড সংক্রমণ পরীক্ষা করে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক। যাদের ন্যূনতম অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিবে তাদের ছুটি দিয়ে বাসায় রাখা হোক। সরকারি খরচে ফের পরীক্ষা করে রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরানো হোক। নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ-পজিটিভের ভিত্তিতে দেশের বড় বড় লীগ খেলাগুলো পরিচালিত হচ্ছে, অলিম্পিক হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও সে পথে হাঁটতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়