রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

সালমার ভালোবাসার সংসারে কালো মেঘের ছায়া

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥
সালমার ভালোবাসার সংসারে কালো মেঘের ছায়া

১৪ বছর পূর্বে ভালোবেসে বাড়ির পাশের শরিফুল ইসলাম (৩৭)-এর সাথে ঘর বেঁধেছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব হর্ণিদুর্গাপুর গ্রামের সালমা বেগম (৩৪)। তাদের সংসারে দুটি ফুটফুটে ছেলে রয়েছে। কিন্তু ভালোবাসার সংসারে কালো মেঘের ছায়া অদ্যাবধি দূর হয়নি। বরং এখন তা ঘন কালো মেঘ হয়ে কালবৈশাখি ঝড়ের আকার নিয়েছে। মাত্র দু শত গজ দূরে হলেও শ্বশুরবাড়িতে সালমা বেগমের ঠাঁই হয়নি। ফলে গত ১৪ বছর কখনো বাবার ভিটায়, কখনো স্বামীর কর্মসূত্রে গাজীপুরে বসবাস করেছেন। কিন্তু কোনো স্থানেই সুখের মুখ দেখেননি। সালমা বেগমের দাবি, তার স্বামী তাকে প্রতিনিয়ত মারধর করা ছাড়াও পরকীয়ায় আসক্ত। গাজীপুরে চাকুরি করাকালে বেশ ক’বার তাকে একেকবার একেক নারীর সাথে পরকীয়ায় যুক্ত থাকা অবস্থায় উদ্ধার করেন তিনি। সর্বশেষ গত ৬ মাস পূর্ব থেকে শরিফুল ইসলাম তার এবং তার সন্তানদের কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। গোপনে তাকে তালাক দিয়ে তাকে ও তার দুই সন্তানকে নিঃস্ব করে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত। ঘটনা এমন হলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। যদিও ইতিপূর্বে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেও অল্পের জন্যে বেঁচে যান সালমা। অপরদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার স্ত্রী সালমা বেগমকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান শরিফুল ইসলাম।

জানা গেছে, পূর্ব হর্ণিদুর্গাপুর গ্রামের নাজির মৃধার মেয়ে সালমা বেগমের সাথে পাশর্^বর্তী বাড়ির হারুন অর রশিদের ছেলে শরিফুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। যদিও সালমার পরিবার এই বিয়ে মেনে নিলেও আজ পর্যন্ত শরিফুলের পরিবার তা মেনে না নেয়ায় শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া হয়নি সালমা বেগমের, দাদার ঘরে থাকা হয়নি তার দুই সন্তান শিশির (১৩) ও সৌরভ (৭)-এর।

সালমা বেগম জানায়, বিয়ের পর থেকে তিনি আজ পর্যন্ত শ্বশুর বাড়িতে যেতে পারেননি। তার স্বামী অসুস্থ হয়ে কয়েক বছর কর্মহীন ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন এনজিও ও ব্যক্তি থেকে ঋণ নিয়ে তার স্বামীর চিকিৎসা করেছেন। যার ভার তিনি এখনো বহন করছেন। ভাইদের সহায়তায় কয়েক দফা গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে চাকুরির ব্যবস্থা করে দিলেও সেখানে তার স্বামী অন্য নারীদের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ৬ মাস পূর্বে এ রকম একটি ঘটনার পর শরিফুল ইসলাম তাদেরকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে রেখে চলে যায়। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। শুনেছেন তাকে তালাক দেয়ার পাঁয়তারা করছে শরিফুল। ইতিপূর্বে স্বামীর মারধরের কারণে তার গর্ভস্থ আরেকটি সন্তান জন্মের পর রক্তশূন্যতার কারণে মারা যায়।

সালমা বেগমের ১৩ বছরের ছেলে শিশির জানায়, তার বাবা তাদের কোনো খোঁজ নেয় না। আগে মাকে প্রায়ই মারধর করতো।

সালমার চাচাতো ভাই রাজিব মৃধা বলেন, শরিফুল ও তার পরিবার সালমাকে আজ পর্যন্ত শান্তি দেয়নি। শরিফুল ইতিপূর্বে কয়েকবার পরকীয়ার কারণে ধরা পড়ে। আমার বোন ও তার দুটি সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।

শরিফুল ইসলামের পিতা হারুন অর রশিদ জানান, শরিফুলকে ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেও লজ্জাবোধ হয়। তাকে আলেম বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আচরণ জালেমের মতো হয়ে গেছে।

মুঠোফোনে শরিফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সালমাকে তিনি তালাক দিয়েছেন। তবে দুই সন্তানের কোনো খোঁজখবর নেন না ও খোরপোষ দেন না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়