প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচআনি গ্রামের আতিক উল্লাহ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছেন। এই হামলায় নিহত আতিকের পরিবার হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। আতিকের মা খোরশিদা বেগম ও চার সন্তানের জননী আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম মরার আগে ঘাতকদের শাস্তির বাস্তবায়ন দেখে যেতে চান।
আতিকুর রহমান ঢাকার যাত্রাবাড়িতে ঢালাই শ্রমিকের কাজ করতেন। শ্রমিক লীগের সদস্য হিসেবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি যোগদান করেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সেদিন তাকে জীবন দিতে হয়েছিল ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায়।
সরেজমিনে আতিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চৌচালা ঘরে তার স্ত্রী লাইলী বেগম চার সন্তান নিয়ে থাকেন। আতিকের স্ত্রী লাইলী জানান, ২১ আগস্ট আসলেই এবং মাঝে মাঝে সাংবাদিকরা খোঁজ-খবর নেন। এ ছাড়া আর কেউ এ পরিবারের খোঁজ-খবর নেন না। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাই। আর যেন কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে অল্প বয়সে হারাতে না হয়।
চার সন্তান নিয়ে দুঃখে-কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম (৫৪)। বড় মেয়ে তানিয়া আক্তারের (২৫) আর্থিক দৈন্যদশার জন্য এইচএসসি পাসের পর লেখাপড়া থেমে যায়। ফলে ৫ বছর আগে তার বিয়ে হয়ে যায়। বড় ছেলে মিথুন (২২) চাকরি করার কারণে নারায়ণগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে সংসার চালায়। মেজ ছেলে মিন্টু (২০) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। সে বাড়িতে থাকে এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। ছোট ছেলে শাকিব (১৬) স্থানীয় পাঁচআনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী।
আতিকের মা খোরশিদা বেগম বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাই। আমার সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে যেন মরতে পারি।
আতিকের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে ১ লাখ, তারপর সঞ্চয়পত্র হিসেবে ১০ লাখ এবং এফডিআরের জন্যে ২০ লাখ ও নগদ ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন।
আতিকুর রহমানের বড় ছেলে মিথুন বলেন, আমাদের একটি চাকরির প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের ভাই-বোনের চাকরির ব্যবস্থা করতেন তাহলে আমরা একটু সচ্ছলভাবে জীবন-যাপন করতে পারতাম।
যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন জয় জানান, ২০ আগস্ট বাদ জুমা মরহুম আতিকুর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনায় পাঁচআনি জামে মসজিদে যুবলীগ ও পরিবারের পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।