হাইমচরে নিজের দায়েরকৃত মামলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিজেই জোরপূর্বক অভিযুক্তের জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে।

গত বুধবার ১৪ জুন, সকাল ১০টায় আলগী উত্তর ইউনিয়নের উত্তর আলগী গ্রাম ৬নং ওয়ার্ডের রশীদ ভূঁইয়ার ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখল করেন স্থানীয় শাহজাহান দেওয়ান ওরফে বাসু দেওয়ান।

সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাইমচর উপজেলার ২নং আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর আলগী গ্রামের উত্তর আলগী মৌজায় ‘ক’ তফসিলভুক্ত হাল ১২৮৫ দাগে .২৩একর ভূমি এবং ‘খ’ তফসিলে একই মৌজায় ১২৮৫ দাগে .৩৩২৫ একর ক্রয়কৃত জমির মালিক আব্দুর রশীদ ভূঁইয়া গংয়ের বিরুদ্ধে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মালমায় আদালত জমির ওপর উভয় পক্ষকে অস্থায়ী স্থিতাবস্থা বজায় রাখাসহ সকল প্রকার কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। তারপরও হাইমচর উপজেলার সার্ভেয়ার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গত ১৩ জুন তদন্ত করতে যান। তদন্তকালে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জমির প্রকৃত মালিক আব্দুর রশীদ ভূঁইয়া সহ এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করে চলে আসতে না আসতেই মামলার বাদী বাসু দেওয়ান নিজেই বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করে আব্দুর রশীদ ভূঁইয়ার ক্রয়সূত্রে দখলকৃত জমিতে সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া চালিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করেন।

ভুক্তভোগী আব্দুর রশীদ ভূঁইয়া জানান, দীর্ঘদিন হতে ‘ক’ তফসিলভুক্ত ভূমি আমার দখলে ছিলো। যা আমার দলিল, জমাখারিজ ও খতিয়ান সূত্রে মালিক হয়ে ভোগদখল করি। কিন্তু হঠাৎ করেই শাহজাহান দেওয়ান ওরফে বাসু দেওয়ান অদৃশ্য ক্ষমতার বলে আমার মালিকানাধীন নিজ জমি তার নিজের বলে দাবি করে আমার বিরুদ্ধে চাঁদপুর আদালতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। জমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলো। গত বুধবার ১৪ জুন শাহজাহান তার শ্যালিকা রাবেয়া বেগম, রাবেয়া বেগমের ছেলে বাবু গাজী, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক মাদক মামলার আসামী জসিম ভূঁইয়া ওরফে কানা জসিমের নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দলবল নিয়ে নিজের দায়েরকৃত মামলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সে নিজেই আমার ভোগ দখলে থাকা জমি তার দখলে নিয়ে যায়। আব্দুর রশীদ ভূঁইয়া আরো জানান, আমি টাকা দিয়ে শাহজাহানের কাছ থেকে জমি ক্রয় করি। কিন্তু দীর্ঘদিন হতে তিনি আমার জমি আমাকে বুঝিয়ে না দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা-হামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন, জমি তার দখলে রয়েছে। তাহলে এখন কেনো সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে জমি দখল করতে হবে? এই প্রশ্ন আমার প্রশাসনের কাছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা ভুক্তভোগী হিসেবে প্রশাসনের সর্বস্তরের কাছে আবেদন করছি। জমির কাগজপত্র ও দলিল অনুযায়ী আমার সম্পত্তি আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হোক এবং আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি শাহজান দেওয়ান ওরফে বাশু দেওয়ান সম্পর্কে অভিযোগ করে বলেন, বাশু দেওয়ান একজন অর্থলোভী মানুষ। সে এলাকার লোকজনের কাছে জমি বিক্রি করে ঢাকায় চলে যান। এখন জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকায় এসে কিছু মাদক ব্যবসায়ীসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে লোকজনেরর ক্রয়কৃত জমি দখল করে মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করছি। তার হয়রানি থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।