প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২০
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের 'আয়নাঘর' পরিদর্শন
গুম তদন্তে নতুন দিগন্ত
![গুম তদন্তে নতুন দিগন্ত](/assets/news_photos/2025/02/06/image-58702-1738855696bdjournal.jpg)
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) সদস্যরা সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা 'জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল', যা 'আয়নাঘর' নামে পরিচিত, পরিদর্শনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান। তাদের মতে, প্রধান উপদেষ্টার এই পরিদর্শন গুমের শিকার ব্যক্তিদের আশ্বস্ত করবে এবং অভয় দেবে।
|আরো খবর
কমিশন সদস্যরা বৈঠকে কয়েকটি গুমের ঘটনার নৃশংস বর্ণনা দেন, যেখানে ছয় বছরের শিশুও গুমের শিকার হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেন, "আপনাদের তদন্তে যে ঘটনাগুলো উঠে এসেছে, তা গা শিউরে ওঠার মতো। আমি শিগগিরই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাব।"
'আয়নাঘর' কী?
'আয়নাঘর' হলো প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) পরিচালিত একটি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা ঢাকায় ডিজিএফআই সদর দপ্তরে অবস্থিত। এটি একটি দোতলা ভবনে ২২টি কক্ষে পরিচালিত হতো, যেখানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের আটক রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
গুম তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম
গুমের ঘটনা তদন্তে সরকার হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছে। কমিশনটি ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করছে। প্রথম ১৩ দিনে কমিশনে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলো প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এসেছে।
কমিশন ইতোমধ্যে 'আয়নাঘর' পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগীদের দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে এর মিল পেয়েছে। তবে, কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ধ্বংস করা হয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শনের গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের 'আয়নাঘর' পরিদর্শন গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকার গুমের ঘটনার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও সংশ্লিষ্ট মহল প্রধান উপদেষ্টার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশা করছে যে এটি গুমের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ