প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৩, ০০:০০
![চাঁদপুরে বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস পালিত](/assets/news_photos/2023/06/05/image-33909.jpg)
‘ক্লাবফুট কোনো অভিশাপ নয়, পনসেটি চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শিশুর হাসি সামাজিক সংস্থা ও নবরূপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থার যৌথ উদ্যোগে চাঁদপুরে পালিত হলো বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস ২০২৩। ৩ জুন শনিবার সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে এক সচেতনতামূলক র্যালি ও আলোচনা সভা করা হয়। র্যালিটি চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর সামনে থেকে শুরু হয়ে শপথ চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সাহিত্য একাডেমীতে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সদর সমাজসেবা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ক্লাবফুট শিশুদের চিকিৎসায় শিশুর হাসি সামাজিক সংস্থা ও নবরূপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থার মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এই ধরনের শিশুর জন্ম হলে যে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয় তা মানুষকে জানাতে হবে। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন রুবেল, চাঁদপুর জেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, শিশুর হাসি সামাজিক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোশারেফ হোসেন, নবরূপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক পি.এম. বিল্লাল। আলোচনা সভার শুরুতে শিশুর হাসি সামাজিক সংস্থার সভাপতি মোঃ সাফায়াত খান স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ব ক্লাবফুট দিবসের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা, বাংলাদেশে ক্লাবফুট সমস্যার চিত্র ও ভয়াবহতা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও প্রকল্পের বিস্তারিত কার্যক্রম উপস্থিত সকলের নিকট তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, ক্লাবফুট একটি জন্মগত বিকলাঙ্গতা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে একটি শিশুকে নিশ্চিতভাবেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করে নিতে হয়। তাই সঠিক বয়সে সঠিক চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম।
চিকিৎসায় ভাল হয়ে যাওয়া ক্লাবফুট শিশু জোবায়েরের মা জয়নব বেগম বলেন, জন্মের সময় আমার বাচ্চার পায়ের পাতা বাঁকা ছিল। এজন্যে আমাকে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে। অনেকে বলেছে আমি পঙ্গু সন্তান জন্ম দিয়েছি। তাই সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সবসময় খুব আতঙ্কে থাকতাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমার সন্তান এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সাইফ-এর আম্মা বলেন, আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে খুব টেনশন করতাম, তার চিকিৎসার জন্য কুমিল্লাও গেছি। পরে এ সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে আমার বাচ্চা এখন অনেকটা সুস্থ। তাসরিফের বাবা বলেন, আমার ছেলে জন্মের পর থেকে পায়ে সমস্যা দেখে স্ত্রী সন্তানকে হাসপাতালে রেখে আমি চিকিৎসকের পেছনে ছুটোছুটি করতে থাকি। ১৫ দিনের দিন আমি ওনাদের সন্ধান পাই। আমার ছেলে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সাব্বিরের মা বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে আমি অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। সে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারতো না, তাকে দুজনে ধরে দাঁড় করাতে হতো। এখন চিকেৎসার পর সে নিজে নিজে দাঁড়িয়ে হাঁটছে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রতিবছর চার হাজারের অধিক শিশু ক্লাবফুট বা জন্মগত পায়ের পাতা বাঁকা সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। শিশুর হাসি সামাজিক সংস্থা (শিহাস) চট্টগ্রাম বিভাগে ক্লাবফুট শিশুদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুরে নবরূপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থা ‘শিহাস’-এর সহায়তায় এই সেবা প্রদান করছে। চাঁদপুরে গত সাড়ে তিন বছরে প্রায় ১৫০ শিশুকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।