প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৬
কোলে শিশু সন্তান নিয়ে স্বামীর অধিকারের দাবিতে স্ত্রীর অবস্থান
'মাঘের শীত বাঘের গায়ে' লাগলেও লাগেনি দুই মাসের শিশু তাসপিয়া নূরের গায়ে। কারণ তার পাষণ্ড পিতা আরিফ হোসেন এই শিশুটিসহ তার মাকে ফেলে অন্যজনকে বিয়ে করে আমোদ-ফূর্তিতে সময় কাটাচ্ছেন। তাইতো মাঘ মাসের এই শীতে শিশুটির মা তাসলিম আক্তার তার স্বামীর বাড়ির সামনে স্বামীর অধিকারের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন।
স্বামী আরিফ হোসেনের বোন আমেনা বেগম ও আত্মীয় স্বজনরাও তাকে গালিগালাজ করছেন এবং বাড়িতে থাকতে দিচ্ছেন না এমন অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী নারী।
এমন ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) রাতে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের ডাওরি খান বাড়িতে। আরিফ হোসেন ওই বাড়ির মৃত সিরাজ খানের ছেলে। অনশন ছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে ওই নারী ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী তাসলিম আক্তার ও প্রতিবেশীদের দেয়া তথ্য সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৯ বছর প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তিন বছর পূর্বে ইসলামি শরিয়াহ মতে আরিফ হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাসলিম আক্তার। বিয়ের পর থেকেই তারা চাঁদপুরের একটি ভাড়া বাসায় জীবনযাপন করতেন। ইতোমধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে তাসপিয়া নূর নামে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। সৌদি প্রবাস ফেরত আরিফ হোসেন বেকার থাকায় তাসলিম আক্তার তাকে ধারদেনা করে খাওয়াতেন। গত কয়েকদিন পূর্বে আরিফ হোসেন তার স্ত্রীকে না জানিয়ে এনজিও থেকে গৃহীত লোনের টাকাসহ বাড়িতে চলে এসে পরিবারের সহায়তায় অন্যত্র বিয়ে করে। খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রী তাসলিমা প্রথমে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কোলের শিশুকে নিয়ে স্বামীর অধিকারের দাবিতে তার বাড়িতে অনশন করেন ।
এ সময় অভিযুক্ত আরিফ বাড়িতে না থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে আরিফ হোসেনের বোন আমেনা বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, তাসলিমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জয়েল বলেন, একটি শিশুকে নিয়ে তার মায়ের অবস্থান কর্মসূচির খবর জেনেছি। বিষয়টি দুঃখজনক। শীতে শিশুটি রোগাক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। শিশুটিকে উষ্ণতা দিয়ে নিরাপদে রাখার জন্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে আরিফ হোসেনের বড়ো ভাই মো. শরীফ খানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে সঠিক বিচারের আশ্বাস দিয়ে ওই গৃহবধূকে তার স্বজন হালিমা বেগমের সাথে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।