শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

নিজ গাছতলায় ভূমিদস্যুদের খুঁটির জোর কোথায়?
স্টাফ রিপোর্টার ॥

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজগাছতলায় ভূমিদস্যুদের খুঁটির জোর কোথায়? নিরীহ লোকদের হয়রানি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ভূমিদস্যুরা। বাগাদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নিজগাছতলা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলাপকালে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন সাবেক ৯৯ হাল বিএস-১০১নং নিজগাছতলা মৌজার সি.এস. ১০২ ও ৩৬নং খতিয়ানের ভূমিতে মালিক ছিলেন রাম মানিক্য নাথ গং।

রাম মানিক্য নাথ তার চার পুত্র ১। মনিরাম নাথ, ২। আনন্দ চন্দ্র নাথ, ৩। নবদ্বীপ চন্দ্র ও ৪। গোবিন্দ্র চন্দ্র নাথ কে ওয়ারিশ রেখে যান। অতঃপর গোবিন্দ্র চন্দ্র নাথের মৃত্যুর তার দুই পুত্র নবীন্দ্র কুমার নাথ ও ক্ষেত্র নাথ ওরফে ক্ষেত্র মোহন নাথকে ওয়ারিশ রেখে যান। তদবস্থায় সি.এস. জরিপামলে সি.এস ১০২ ও ৩৬নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হন-মনিরাম নাথ, আনন্দ চন্দ্র নাথ, নবদ্বীপ চন্দ্র ও গোবিন্দ্র চন্দ্রের দুই পুত্র নবীন্দ্র কুমার নাথ ও ক্ষেত্র মোহন নাথ। সি.এস. রেকর্ড চূড়ান্ত প্রকাশের পূর্বে বর্ণিত মনিরাম নাথ, আনন্দ চন্দ্র নাথ ও ক্ষেত্র মোহন নাথ ১৩২৪ বাংলা সনের ২৬ মাঘ তারিখে সম্পাদিত ও বিগত ০৮/০২/১৯১৮খ্রিঃ তারিখের রেজিঃকৃত ১২২৩নং সাফকবলা দলিল মূলে চার চৌহুদ্দীযুক্ত সীমানার মধ্যে ১৮ ইঞ্চি ১৮ হাত নলের পরিমিত মাপে পৌনে ১৮ গন্ডা ও আরেক কিত্বায় সাড়ে ৩ গণ্ডা একুনে মোট সোয়া ২১ গণ্ডা একরের পরিমাপে মোট ২ শত ১১ শতক ভূমি শ্রীকৃষ্ণ কমল নাথের নিকট বিক্রি দখল অর্পণ করেন। অতঃপর শ্রীকৃষ্ণ কমলনাথের মৃত্যুর পর তার তিন পুত্র রজনী কুমার নাথ, প্যারী মোহন নাথ ও পূর্ণ চন্দ্র নাথ পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হন। উক্ত রজনি কুমার নাথ, পূর্ণ চন্দ্র নাথ ও প্যারী মোহন নাথ সম্পাদিত সাফকবলা দলিলে ২ একর ১১ শতক সম্পত্তি সি.এস ১০২ ও ৩৬নং খতিয়ানের সি.এস ১৯২, ১৯৩, ১৯৮, ২০৪, ২০৫ দাগে চার চৌহুদ্দিযুক্ত সীমানার পশ্চিম ও দক্ষিণে আমান উদ্দিন ও জামাল উদ্দিন, এর উত্তরে কুশা গাজী গং, পূর্বে রাধা মাধব দালাল গংকে দলিলের চৌহুদ্দীতে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জরিপামলে ধারাবাহিক মালিকদের নামে বি.এস.-১৬১, ২১২, ২৫৩ ও ৩০০নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হন ও বর্তমানে যারা বসতভিটা বাড়ি করে দখলে আছেন অথচ তাদের সমস্ত দলিল সঠিক থাকার পরও কতিপয় ভূমিদস্যু নিরীহ মানুষদের উক্ত ভূমি আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে অতি গোপনে ২০১৬ সালে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে বি.এস. খতিয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে অত্যন্ত চতুরতার সাথে আদালতের কোনোরূপ সমন নোটিস জারি না করে সম্পূর্ণ গোপনে বিগত ২৮/০২/২০১৯ইং সনে একতরফা রায় হাসিল করেন। উক্ত বিষয়টি প্রকৃত মালিকগণ স্থানীয় তহশীল অফিসে খাজনা দিতে গিয়ে জানতে পেরে ১৮/০৯/২০২১ তারিখে তল্লাশি দিয়ে সেরেস্তাদারের মাধ্যমে বিগত ২৬/০৯/২০২১ সনে অনুসন্ধানের তল্লাশি রিপোর্ট পেয়ে তর্কিত একতরফা রায় ডিক্রি সম্পর্কে অবগত হয়ে একটি ছানি মামলা দায়ের করেন কবির হোসেন মাল। মামলা নং-৩৮/২১। একই আদালতে আরেকটি ছানি মামলা দায়ের করেন জসিম খান ও হারুন গাজী। মামলা নং-৮০/২১।

আদালত উক্ত ছানি মামলা ২টি গ্রহণ করে প্রথমে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরবর্তীতে বাদীর ১০/০৮/২০২২খ্রিঃ তারিখের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরো ৬ মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। আদালতের উক্ত আদেশে উল্লেখ করা হয়, মূল মামলার ৩৬০/১৬-এর যাবতীয় কার্যক্রম আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো। যা আগামী ২০২৩ সনের ৯ ফেব্রুয়ারী বলবৎ থাকবে। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ অমান্য করে কতিপয় ভূমিদস্যু ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি ভরাট করতে গেলে মালিকগণ ১৭/০৮/২০২২ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৫ ধারা বিধানমতে প্রতিকারের প্রার্থনা করেন। আবেদন দুটির নাম্বার-৯৫৭ ও ৯৬০/২২। উক্ত প্রতিপক্ষগণের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত নালিশি ভূমিতে স্থিতাবস্থাসহ আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আদেশ প্রদান করে। প্রতিপক্ষগণ আদালতের নিষেধ অমান্য করে মাটি ভরাটের কাজ চালিয়ে যায়। এমতাবস্থায় প্রতিপক্ষকে উক্ত ভূমির মালিকগণ পুনরায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৮ ধারা বিধানমতে প্রতিকারের প্রার্থনা করলে আদালত প্রার্থনা মঞ্জুর করে চাঁদপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করে।

নিজগাছতলার ভুক্তভোগীরা তাকিয়ে আছে চাঁদপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কী ব্যবস্থা নেন।

এলাকার অন্যতম গণ্যমান্য ব্যক্তি জাহাঙ্গীর মালের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই নালিশি ভূমি নির্ধারণ করা খুবই সহজ। শুধুমাত্র কৃষ্ণকমল নাথের দলিলের চার চৌহুদ্দি একজন সার্ভে কমিশন নিয়োগ করে আশেপাশের সি.এস ম্যাপ ধরে চারদিকে দাগ নম্বর ও মালিকদের নাম মিলালে খুব সহজেই নালিশি ভূমির সমস্যা সমাধান সম্ভব। আরেকজন ঐ এলাকার সমাজসেবক হাজী নূর মোহাম্মদ গাজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলিল যার জমিও তার। এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদ মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বাপ দাদার আমল থেকে দেখে আসছি বর্তমান মালিকরাই এ সম্পত্তির ভোগ দখল করে আসছে। এছাড়া ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি জাকির খানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বহু যুগ ধরেই বর্তমানে যারা বসবাস করছে তারাই এ সম্পত্তির প্রকৃত মালিক বলে জানি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়