প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
![ফরিদগঞ্জে বিদেশী ঘাস চাষে সাফল্য খামারীদের](/assets/news_photos/2022/09/23/image-23681.jpg)
ফরিদগঞ্জে উপজেলার বিভিন্ন পরিত্যক্ত জায়গায় ও রাস্তার পাশে বিদেশি ঘাস চাষ করে সফলতা এবং সুফল পেয়েছে সাধারণ মানুষ ও গরু খামারীরা। ২০২০ সালের পর থেকে ঘাস চাষে সফলতা পেতে শুরু করেছে এ জনপদের সাধারণ মানুষ ও গরুর খামারীরা। গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য গরুর খামার। চাপ কমেছে ধান, চাল ও অন্যান্য গো-খাদ্যের উপর।
উল্টো নিজেদের পালন করা গরুর খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে আঁটি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন খামারে। চাঁদপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশে পড়ে থাকা জায়গায় চাষ হচ্ছে এই ঘাস। যে স্থানে গরুর খামার হচ্ছে, তার নিকটবর্তী স্থানের পাশেই চাষ করা হচ্ছে এ বিদেশি ঘাস। ইদানীং দেখা গেছে, ডাকাতিয়া নদীরপাড়ে দিয়ে ঘাস চাষ করে গো-খাদ্যের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারছে চাষিরা।
গরুর খামারের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের পাটওয়ারী জানান, এখানে চাষাবাদ করার পাশাপাশি গরুর খাদ্যের বেশিরভাগ অংশ এখন আমরা নিজেদের চাষ করা ঘাস দিয়ে যোগান দিচ্ছি। অনেক বেশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত এবং এর চাষাবাদ লাভজনক হওয়ায় প্রতিটি বাড়িতে ঘাস চাষ ছড়িয়েছে। এই ঘাসটিতে পুষ্টিগুণ অন্যসব দেশীয় ঘাসের তুলনায় অনেক বেশি। এই ঘাস দেশের গরুর খামারীদের মুখে হাসি ফোটাবে। এই জাতের ঘাসের পাশাপাশি বেগুনি জাতের ঘাস ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সবচেয়ে লাভজনক হবে। এগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। আমাদের দেশে এমন ক’টি জাতের ঘাস চাষ করা হচ্ছে যেগুলোর অধিকাংশ জাতই বিদেশে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
বেগুনি রংয়ের ঘাস এ দেশের মাটি ও আবহাওয়ায় সম্পূর্ণ নতুন জাত। এর মধ্যে এটি খুবই দুর্লভ জাতের বেগুনী, যা বিশ্বে উচ্চ পুষ্টিকর হিসেবে খ্যাত। স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়। এর পুষ্টিগুণ অন্য সব ঘাসের তুলনায় অনেক বেশি। এ নতুন জাতের ঘাস এই দেশের চাষিদের মুখে হাসি ফোটাবে। এই জাত হবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সবচেয়ে লাভজনক।
প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অর্গানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রজাতির ঘাসের চাষাবাদ করে যাচ্ছেন খামারিরা। ইতিপূর্বে উপজেলার ১২নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নে বেগুনি জাতের ঘাসের চাষ করে তাক লাগিয়েছেন সফিকুর রহমান নামের খামারি। ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাবেক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাও পরীক্ষামূলকভাবে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে একের পর এক বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস চাষাবাদ করে ইতোমধ্যে চমক লাগিয়েছিলেন। ফলে পুরস্কৃত হয়েছেন কয়েকবার। তার উৎসাহে এটি চাষে সফলতাও পেয়েছেন অনেকেই।
চাষিরা জানান, বিদেশে প্রতি আঁটি এবং কেজি হিসেবে এই গাছ বিক্রি হচ্ছে। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে ঘাস রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মামুন হোসেন বলেন, এ উপজেলার পাঁচ প্রকার ঘাসের চাষ করা হচ্ছে। এগুলো হলো : নেপিয়ার পার্সন (১), থাইপার্সন, নেপিয়া, জার্মান (২) ও ভুট্টা। এ সকল জাতের ঘাসের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। চাহিদাও বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। কৃষক এ ঘাস চাষাবাদে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ লাভ করলে কিংবা অবগত হলে আগামীতে আমাদের দেশে এ ঘাস চাষ আরো বৃদ্ধি পেয়ে চাষিরা সহজ উপায়ে অধিক অর্থ উপার্জনে ঝুঁকে পড়বে।