প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
পরিপাটি ছিমছাম আর ৩জন চিকিৎসকের সেবায় চলে আসছিল মডার্ণ (শুদ্ধ বানান মডার্ন) ডেন্টাল কেয়ার। হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে প্রধান সড়কের উত্তর পাশে আখড়া সুপার মার্কেটে রোগীরা চিকিৎসার নামে প্রতারিত হয়ে আসছিলেন। এর প্রতিষ্ঠাতা মৃত চিকিৎসককে জীবিত দেখিয়ে স্ত্রী আর সন্তান মাসের পর মাস চালিয়ে আসছিলেন চেম্বারটি। চিকিৎসা সেবার বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সোমবার দুপুরের পর ২০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ সিলগালা করে দেয়া হয় চেম্বারটি। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান মানিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডাঃ মোহাম্মদ আলী ও ডাঃ তাহমিনা আলী স্বামী-স্ত্রী। মডার্ণ ডেন্টাল কেয়ারটিতে তারা উভয়ে রোগী দেখে চিকিৎসা সেবা দিতেন। বছর দেড়েক আগে মালিক ডাঃ মোহাম্মদ আলী মারা যান। এরপর থেকে এটি নিয়ন্ত্রণে নেন স্ত্রী কথিত দন্ত চিকিৎসক তাহমিনা আলী। তিনি নিজে রোগী দেখার পাশাপাশি মাহবুব আলম নামে অন্য একজনসহ তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে চিকিৎসক সাজিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। যা ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রমাণিত হয়।
সূত্র জানায়, মডার্ণ ডেন্টাল কেয়ারের সাইনবোর্ড কিংবা প্রেসক্রিপশনে তিনজন চিকিৎসকের নাম রয়েছে। সাইনবোর্ডে যে তিনজন ডাক্তারের নাম রয়েছে, তারা হলেন-ডাঃ মোহাম্মদ আলী (মৃত), ডাঃ মাহবুব আলম ও ডাঃ তাহমিনা আলী। উক্ত চেম্বারের সাইনবোর্ড, ভিজিটিং কার্ড ও প্রেসক্রিপশনে নাম থাকা ডাঃ মোহাম্মদ আলী তার স্বামী। যিনি দেড়বছর আগে মারা গেছেন।
সোমবার দুপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ তদন্তকালে মডার্ণ ডেন্টাল কেয়ারের চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি ভুয়া চিকিৎসক তাহমিনা আলী। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানের মালিক তাহমিনা আলীকে প্রতারণার দায়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। পরে প্রতিষ্ঠানটির সকল প্রকার কাগজপত্র বৈধ করা পর্যন্ত সীলগালা করে দেয়।
আদালত পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম মাওলা, মেডিকেল অফিসার ওমর ফারুক, উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সামছুল ইসলাম রমিজ ও উপ-পরিদর্শক আজিজ।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাছান মানিক জানান, ডাঃ মাহবুব আলী নামে কেউ এখানে আসেন না। চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছেন না। ডাঃ তাহমিনা আলী হোমিও চিকিৎসার কিছু কাগজপত্র দেখাতে পারলেও ডেন্টাল চিকিৎসার কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। এছাড়া তার স্বামী দেড় বছর আগে মারা গেলেও এখনও প্রেসক্রিপশন দেয়া হয় তার নামে, এমনকি মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে তাতে রোগী দেখার সময় লেখা হয়েছে।