রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

নানা সমস্যায় চাঁদপুর বিসিক শিল্প নগরী
অনলাইন ডেস্ক

প্রতিষ্ঠার দুই দশক পরও চাঁদপুরের বিসিক শিল্পনগরী নানা সমস্যায় ভুগছে বলে উদ্যোক্তাদের অভিযোগ।

এখানে পানি, বিদ্যুৎ, পয়ঃনিষ্কাষণ ও নিরাপত্তা সমস্যার কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

চাঁদপুর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন-বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকায় ১৯৯৯ সালে ১০ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বিসিক শিল্পনগরী। এখানে ৩৫টি শিল্প ইউনিটে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

শিল্প উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে এখানে স্বল্প মূল্যে ৬৮টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।

শুরুতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়। কিন্তু পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।

মেঘনা ফুডের ব্যবস্থাপক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার রাস্তা-ঘাট ও ড্রেনের করুণ অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা থাকলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া এখানকার সরবরাহ করা পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। বিষয়টি অনেকবার অবহিত করা হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ড্রেনগুলো সংস্কার না হওয়ায় ময়লা-আবর্জনা জমে মুখ বন্ধ হয়ে রয়েছে।

দেলোয়ার বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের চরম দুর্ভোগে প[ড়তে হয়। ওই সময় শ্রমিকরা অলস সময় পড়ে থাকে। পুরো কারখানার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।’

তাসনিম ড্রিংকিং ওয়াটারের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, এখানকার পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। শিল্পকারখানা এলাকায় শিল্পের কাজে যেইসব পানির প্রয়োজন, সেই হিসেবে এই পানিটা ব্যবহারের উপযোগী নয়।

‘এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও সমস্যা রয়েছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা গেলে ব্যবসায়ীরা অনেক উপকৃত হতো।’

মুনলাইট প্লাস্টিকের ব্যবস্থাপক মো. ইলিয়াছ আহমেদ বলেন, এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন। বিশেষ করে বহিরাগত বখাটে ও নেশাখোর যুবকরা নারীদের উত্ত্যক্ত করে।

‘বিষয়টি আমরা স্থানীয় বিসিক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। পুরো এলাকার নিরাপত্তা জোরদারসহ সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছি। শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা যাতে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’ তিনি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেন।

‘করোনাকালীন অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এখন আমরা নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। দৃশ্যমান সমস্যাগুলো দূর করতে হবে।’

ব্যবসায়ী মোঃ মানিক বলেন, এখান ব্যবসার কাজে মালপত্র কেনা-কাটার জন্য আসতে হয়। কিন্তু, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যায় থাকলেও, তা নিরসনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

মোঃ আলমগীর ও আবুল খায়ের নামের দুই ব্যবসায়ী বলেন, বিসিক শিল্পনগরীর সীমানা প্রাচীর নেই। এতে করে বহিরাগত লোকজন এখানে অনায়াসে আসা-যাওয়া করে। ফলে কর্মরত নারী শ্রমিকদের উত্ত্যক্তের শিকার হতে হয়। দিনের বেলা ও রাতে বখাটে যুবকরা এখানে নেশা করে। এতে ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে গড়ে ওঠা ৩৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে ২৪টি টিকে রয়েছে। বাকি ১১টি করোনার সময় আর্থিক কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।

বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ রুহুল আমিন আরও বলেন, প্রতিবছর গড়ে এখানকার শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। পাশাপাশি এখানকার তৈরি পোশাক দেশের বাইরে রপ্তানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখানকার সমস্যাগুলোর অচিরেই সমাধান করা হবে। পানি সমস্যার সমাধান ও রাস্তা-ঘাট সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি কর্মরত নারীদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়