শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

মা-ই হত্যা করিয়েছে প্রিয়াকে
মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল ॥

শাহরাস্তি উপজেলার আলোচিত নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) হত্যায় জড়িত সন্দেহে প্রিয়ার মায়ের প্রেমিক হান্নানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে হান্নানকে আদালতে প্রেরণ করে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। একই সাথে মাকেও আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে মা তাহমিনা সুলতানা রুমি (৪৩) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, আঃ হান্নানকে দিয়ে তিনিই প্রিয়াকে হত্যা করিয়েছেন।

শাহরাস্তি থানা সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে পুলিশ প্রিয়ার মায়ের প্রেমিক দেবকরা গ্রামের মৃত মুনসুর আলী ভূঁইয়ার পুত্র মোঃ হান্নান হোসেন (৩০)কে গ্রেফতার করে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৫/৬ বছর পূর্বে প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি ও মোঃ হান্নানের পরকীয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনার পর এলাকা ত্যাগ করে হান্নান সৌদি আরব চলে যায়। প্রিয়া হত্যার একমাস পূর্বে হান্নান দেশে আসে। প্রিয়া হত্যার সাথে হান্নান জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। প্রিয়া ও হান্নানদের বাড়ি পাশাপাশি। প্রিয়ার পিতা বিদেশে থাকার সুবাদে ৫/৬ বছর পূর্বে প্রিয়ার মা রুমির সাথে হান্নানের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের প্রেমের ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে গেলে প্রিয়া নিজেই একদিন আপত্তিকর অবস্থায় তাদের ধরে ফেলে। পরে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। রুমির স্বামী ইসমাইল হোসেন স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে সৌদি আরব থেকে জানতে পেরে তার সাথে ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত নিলে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকটি সালিস-বৈঠকের পর বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। এরপর হান্নান বিদেশে চলে যায়। প্রিয়া হত্যাকাণ্ডের ১ মাস পূর্বে হান্নান দেশে আসে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোঃ হান্নান হোসেনকে আটক করা হয়েছে।

শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মান্নান জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে প্রিয়ার মায়ের প্রেমিক মোঃ হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর মাকেও আটক করা হয়। অবশেষে মায়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মধ্য দিয়ে প্রিয়া হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহাম্মদনগর ছোট পোদ্দার বাড়িতে ১ সন্তানের জননী নওরোজ আফরিন প্রিয়াকে (২১) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের একমাত্র মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়। স্বামী কাইরুজ্জামান চৌধুরী হৃদয় কুমিল্লায় একটি পোল্ট্রি ফার্মে চাকুরি করেন। নিহত প্রিয়ার আবরীন জামান উম্মে আনহার নামে ১৮ মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান রয়েছে।

ঘটনার সময় নিহতের মা তাহমিনা সুলতানা রুমি প্রিয়ার মেয়ে আনহার জন্যে ঔষধ আনতে পাশের বাড়িতে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক গৌরাঙ্গের কাছে গিয়েছেলেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন। সেখান থেকে ঘরে ফিরে তিনি প্রিয়ার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।

ঘটনার পরদিন প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি শাহরাস্তি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনার সময় রাত ৭টা ৫ মিনিট হতে ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যবর্তী যে কোনো সময়কে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী বা দুষ্কৃতকারীরা গোপনে ঘরে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রিয়াকে হত্যা করে চলে যায় মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়