শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ভেসাল কারেন্ট আর চায়না চাঁই জালে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

অবৈধ ভেসাল জাল, কারেন্ট জাল, ঝাঁক আর চায়না চাঁই জালে বিলুপ্তি হতে চলেছে দেশীয় প্রজাতির সকল মাছ। অবৈধ এসব জাল উচ্ছেদ বা বন্ধে কোনো কার্যকর ভূমিকা না থাকার কারণে অবৈধ মাছ ব্যবসায়ীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কারেন্ট জাল আর চায়না চাঁই জালে দেশীয় প্রজাতির একদিনের মাছ পর্যন্ত ধরা পড়ায় সাধারণ মাছ ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

সরজমিনে দেখা যায়, ডাকাতিয়া নদীর হাজীগঞ্জ অংশ, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হাজীগঞ্জের বলাখাল এলাকার খালে, বোয়ালজুরি খাল, ঝমঝমিয়া খালসহ উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট খালগুলোতে ভেসাল জাল, ফরত আর কারেন্ট জালে পরিপূর্ণ। এছাড়া ডাকাতিয়া নদীর হাজীগঞ্জ অংশের বিভিন্নস্থানে কারেন্ট জাল ও ভেসাল জালের ব্যবহার চলে আসলেও সম্প্রতি চায়না চাঁই জালের ব্যবহারের কারণে নদীতে বিচরণকারী দেশীয় প্রজাতির একদিনের মাছ পর্যন্ত ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে।

উপজেলার খালগুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ভেসাল জালের পাশে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি করা ফরতের ব্যবহার করায় ভেসাল জাল থেকে কোনো মাছ বাঁচার সুযোগ পাচ্ছে না। আবার একটি ভেসাল জাল থেকে ৫/৭শ’ মিটার দূরে দূরে অন্য ভেসাল জাল থাকায় কোনো মাছ বা মাছের পোনা ভেজাল জালের ফাঁদ থেকে বাঁচার কোনো উপায় থাকে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ বাজারের বণিকপট্টির কিছু অসাধু জাল ব্যবসায়ী কারেন্ট জাল, চায়না চাঁই জালের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকে। এদের থেকে খুচরা জাল ব্যবসায়ীরা পাইকারি জাল কিনে বাকিলা, বলাখাল, রামপুর ও রাজারগাঁও বাজারে প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল বিক্রি করছে। মূলত এভাবেই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার বেড়ে গেছে।

ডাকাতিয়া নদী পাড়ের ধেররা গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা মৎস্য প্রতিনিধি নির্মল দাস চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আমি হাজীগঞ্জ অংশের ডাকাতিয়া নদীর প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা দেখাশোনা করার দায়িত্ব পালন করছি। সম্প্রতি নদীতে চায়না চাঁই জালের ব্যবহারের কারণে একদিনের মাছ পর্যন্ত মারা হচ্ছে। প্রতিদিন এমন জাল দিয়ে নদীর মাছ শেষ করে ফেলা হচ্ছে।

ধেররা মাছ বাজারের মৎস্যচাষী শাহজালাল জানান, প্রতাপপুর ব্রিজের নিচে ও ধেররা এলাকার আশপাশে ডাকাতিয়া নদীতে ২৪ ঘণ্টাই চাঁই জাল পাতা থাকে। এসব জাল বন্ধ না করলে এক বছরের মধ্যে ডাকাতিয়ার মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

ধেররা গ্রামের ডাকাতিয়া নদী পাড়ের বাসিন্দা সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন জানান, যে মাছ এক ঘণ্টা আগে জন্মায় সেই মাছের পোনা পর্যন্ত চাঁই জালে আটকে পড়ে। এছাড়া সকল জলজপ্রাণী যেমন কাঁকড়া, সাপ, ব্যাংঙ ধ্বংসকারী চাঁই জাল চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ও হাজীগঞ্জ বাজারে চায়না চাঁই জাল কিনতে পাওয়া যায়।

দেশীয় যে সব মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে যেগুলো হলো মলা, ঢেলা, পুঁটি, ট্যাংরা, কৈ, শিং, মাগুর, শোল ও বাইন। এছাড়া ব্যাঙ, সাপ, কুঁচিয়াসহ অন্যান্য জলজপ্রাণী কারেন্ট জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। এমনকি কচ্ছপ ও কাঁকড়া আটকা পড়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, বড় মাছের পাশাপাশি ধরা পড়ছে পাঙ্গাশ, রুই, কাতলসহ বিভিন্ন মাছের পোনাও।

মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সংবাদ-সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে সদ্য বদলি হওয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওয়ালি উল্যাহ সরকার সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, জনসচেতনতা তৈরি না হলে ভেসাল ও কারেন্ট জালের ব্যবহার কমবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, জনবল স্বল্পতায় অবৈধ জাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়