প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্যে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে শুরু হয়ে গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয় এ প্রশিক্ষণ। চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তিনদিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পৃথকভাবে ৩৫জন সিনিয়র সাংবাদিক অনুসন্ধানমূলক রিপোর্টিং এবং ৩৫ জন মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-পিআইবির মহাপরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব জাফর ওয়াজেদ। তিনি বলেন, চাঁদপুরের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে, রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এ শহর থেকে অনেকগুলো পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, আর এসব পত্রিকায় কাজ করছেন মেধাসম্পন্ন সাংবাদিকবৃন্দ। যারা সকলেই সচেতন ও কর্মদক্ষতা সম্পন্ন। এদের জন্যে কিছু করার লক্ষ্যেই পিআইবির এ আয়োজন। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সাংবাদিকতা করা আর চাঁদপুর শহরের সাংবাদিকতা এক নয়। আপনাদের অনেক পরিশ্রম করে সংবাদ তৈরি করতে হয়। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, অপসাংবাদিকতা, ফেসবুক সাংবাদিকতা, অননুমোদিত নিউজপোর্টাল সাংবাদিকতা রুখতেই এই আইন। প্রকৃত সাংবাদিকতার জন্যে এই আইন নয়। আজকাল যেভাবে ফেসবুক বা নিউজ পোর্টলের মাধ্যমে মানুষের চরিত্র হনন করা হচ্ছে, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা আপনি কীভাবে বন্ধ করবেন। মানুষের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুণ্ন না হয় তার জন্যেই ডিজিটাল আইনের প্রয়োগ। এখন দেখতে হবে তা প্রয়োগ করতে গিয়ে প্রয়োগকারী সংস্থা কীভাবে তা প্রয়োগ করছে, সে বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। ডিজিটাল আইন সাদা না কালো তা নির্ভর করে প্রয়োগকারীর উপর। তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত অবাধ সাংবাদিকতার সুযোগ ছিল।
তিনি সাংবাদিকতার উপর কথা বলতে গিয়ে বলেন, বর্তমানে মোবাইল সাংবাদিকতার মাধ্যমে কাজ অনেক সহজ হলেও মেধার বিকাশ ঘটেনি। আমাদের চেষ্টা রয়েছে সাংবাদিকতার বিকাশ ঘটাতে যুগোপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করা। করোনার ভয়াবহতার সময়ও আমরা সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। দেশের ৬৪ জেলাতেই প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তিনি চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, জুয়েল অনেকগুলো ভালো কাজ করেছেন যার মধ্যে একটি হলো চাঁদপুরের ইতিহাস তুলে ধরা। যা অন্য কেউ করেনি। এজন্যে জুয়েলকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সাংবাদিকতার মান উন্নয়নে আরো ব্যাপক প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ফরিদগঞ্জের উন্নয়নে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রহমানেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান। আর প্রশিক্ষকদের মধ্যে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বক্তব্য রাখেন।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীর সভাপ্রধানে ও সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশার উপস্থাপনায় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শহীদ পাটোয়ারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর,এএইএম আহসান উল্লাহ, আল ইমরান শোভন, আব্দুর রহমান, অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, আব্দুল আউয়াল রুবেল, শাহাদাত হোসেন শান্ত, ফারুক আহম্মদ, কে এম মাসুদ, পার্থনাথ চক্রবর্তী প্রমুখ। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন আঃ গণি, মোঃ শরীফুল ইসলাম, মিজান লিটন, আশিক বিন রহিম, মোঃ সালাউদ্দিন, নিজাম উদ্দিন ও মোঃ ইব্রহিম।
প্রধান অতিথিসহ অতিথিদ্বয় প্রশিক্ষণার্থী সকলের হাতে সাফল্যের সনদ তুলে দেন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে পৃথক পৃথক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সনদ প্রদান অনুষ্ঠানটি সাংবাদিকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।