প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
একের পর এক চুরির ঘটনায় হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ গত রাতে আনোয়ার হোসেন কালুর দোকানের চালের টিন কেটে শতাধিক মোবাইল সেটসহ নগদ লক্ষাধিক টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। এর মাত্র ৩ মাস আগে একই ব্যবসায়ীর দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৫ দিন আগে মধ্যবাজার থেকে মামুন নামের এক ব্যবসায়ীর ২২ ব্যারেল তেল চুরি হয়। এ ঘটনায় মামুন থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো চোর আটক বা মালের হদিস মেলেনি। এতে করে ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভ দিন দিন পুঞ্জীভূত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাকিলা বাজারে যতো চুরির ঘটনা ঘটেছে তার কোনোটিরই সুরাহা হয়নি। সর্বশেষ গত রোববার দিবাগত রাতে বাকিলা বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন কালুর দোকানের টিনের চাল কেটে দোকানে ঢুকে চোরের দল। এ সময় প্রায় শতাধিক মোবাইল ফোন সেট, নগদ ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় চোরের দল। প্রায় ৩ মাসে আগে একই দোকান থেকে বৈদ্যুতিক তারের ক্যাবল, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে যায় চোরের দল। তারও আগে গত বছর একই দোকান থেকে মোবাইল ফোন, সিম, বিকাশের টাকা নিয়ে যায় চোরের দল। সে সময় এই ব্যবসায়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গত সপ্তাহে বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে খোলা তৈল ব্যবসায়ী মনির নামাজ পড়তে গেলে তার ক্যাশ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা চুরি হয়। একইদিন জুমার নামাজের সময় সন্না সড়কে কাঠ ব্যবসায়ী আবু গাজীর নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি হয়। গত প্রায় ১৫ দিন আগে মধ্য বাজারে সাত্তার স্টোরের মালিক মামুন মিজির চট্টগ্রাম থেকে আসা ২২ ব্যারেল সয়াবিন তেলের ড্রাম চুরি হয়ে যায়। এতে করে মামুন মিজির প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় সেই সময় মামুন মিজি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। কিছু দিন আগে বাকিলা গরুর বাজার সংলগ্ন নেপালের হলদি-মরিচ ভাঙ্গানোর দোকান থেকে মরিচের বড় বস্তা চুরি হয়ে যায়। চুরি যাওয়া সেই মরিচ শাহতলী এলাকা থেকে উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী। গত বছর বাজারের শৈলি গার্মেন্টস্-এর টিনের চাল কেটে নগদ টাকাসহ মালামাল চুরি হয়। সেই ঘটনায় এই ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো চোর আটক বা মালামাল উদ্ধার হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বাকিলা বাজার এমন এক বাজার যেখানে পেশীশক্তির প্রাধান্য অনেক বেশি। বাজারের ফুটপাত পুরোটাই দখল করে টংদোকান তুলে ভাড়া দিচ্ছে একটি চক্র। সরকারি খাস জমিতে দোকান ঘর তুলে ভাড়া দিচ্ছে আরেকটি অপশক্তি। মাছ বাজার, তরকারি বাজার, মধ্য বাজার ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা। গলি দখল করে স্থায়ী, অস্থায়ী দোকান তুলে ব্যবসা করছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। স্কুল গেটের উল্টা পাশে সড়কের উপর ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, যা স্তূপীকৃত অবস্থায় পড়ে থাকে।
বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পাটোয়ারী জানান, বাজারে চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় নৈশ প্রহরী বাদ দেয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা ভাগ ভাগ হয়ে পাহারা দিবে। নৈশপ্রহরী থাকাবস্থায় ৬০ ভাগ ব্যবসায়ী প্রহরীদের বেতনের টাকা দিতেন না।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ জানান, চুরির খবর পেয়ে ওসি (তদন্ত)সহ অফিসার পাঠানো হয়েছে। তারা আসল ঘটনা শুনে আইনী ব্যবস্থা নেবে।