রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
  •   এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা
  •   হাজীগঞ্জের সকল মৃত্যুর খবরই গুজব!
  •   দিনমজুরকে জবাই করে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
  •   অবশেষে চাঁসক সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানকে বদলি

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

উৎকণ্ঠা আর উৎসাহের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি

উৎসব সম্পন্নে বিগত দিনের ন্যায় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি : জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ

বিমল চৌধুরী ॥
উৎকণ্ঠা আর উৎসাহের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি

উৎকণ্ঠা আর উৎসাহের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন। আগামী ৮ অক্টোবর পঞ্চমী পূজার মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হয়ে ১২ অক্টোবর দশমী বিহিত পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল আয়োজন।

দেশের চলমান পরিস্থিতির আলোকে উৎসবের আয়োজন নিয়ে আয়োজকদের মাঝে ছিলো ব্যাপক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। অবশেষে পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে প্রতিমা দিয়ে পূজার আয়োজন সম্পন্নকরণে এগিয়ে চলছেন আয়োজকগণ। তারপরও দেশের বিভিন্ন স্থানে কম-বেশি প্রতিমা ভাংচুর, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি- ঘরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, নির্যাতনসহ নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেকটাই সন্দিহান হয়ে পড়েছে। তাদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে পারবো তো?

দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় চাঁদপুরেও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলছে পূজার আয়োজন। গত বছর জেলায় ২২৬ টি পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এই বছর পূজা কমেছে ৫ টি। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪১, হাইমচর উপজেলায় ০৬, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২১, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২৯, কচুয়া উপজেলায় ৩৯ (পূর্বে ৪২) , শাহরাস্তি উপজেলায় ১৯, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৩২, মতলব উত্তরে ৩৪ (পূর্বে ৩৬) টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। তবে আয়োজনে প্রাচুর্য থাকলেও হৃদয়ের উৎসাহে কেমন জানি শূন্যতা বিরাজ করছে পূজারী থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মনে । তিথি নক্ষত্রের কারণে এই বছর পূজারীগণ একদিন পূজার আনন্দ উৎসাহ থেকে বঞ্চিত হবেন বলে জানা যায়। বছরের অন্যান্যবার পঞ্চমী থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর সকালে পূজা সম্পন্ন ও সুবিধাজনক সময়ে বিসর্জন পর্বের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও এই বছর সপ্তমী ও অষ্টমী পূজা একই দিনে সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে পূজার আয়োজন সম্পর্কে চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সকলের প্রতি শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও আমাদের প্রাণের শহর চাঁদপুরসহ জেলায় তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বরাবরের মতোই জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করছেন। আমরা চাঁদপুরে অনেকটাই নিরাপত্তাবোধ করছি।

তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, আর কিছুদিন বাদেই আমাদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে অনেকেরই ভিন্ন ভিন্ন মত ছিল। কেউ কেউ চেয়েছিল বর্তমান প্রেক্ষাপটে পূজা বন্ধ করে দিতে, আবার কারো কারো মত ছিল ঘট পূজার আয়োজন করতে। কিন্তু সর্বশেষ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশেই প্রতিমা দিয়ে পূজা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতে চাঁদপুরেও ব্যাপকভাবে দুর্গা পূজার আয়োজন চলছে। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে আশাবাদী। তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা সম্পন্নে আমরা ইতোমধ্যে পূজারীদের সাথে সভা করেছি, প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে সভা করেছি, সভাগুলোতে আমাদের পূজা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সকলেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব সম্পন্নে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন। আগামী ২৫ অক্টোবর শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন সভা ডেকেছে। সেখানেও পূজার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা জেলা প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সকলের কাছেই আশাবাদী, বিগত বছর যেভাবে আমাদের ধর্মীয় উৎসব সম্পন্নে আমাদেরকে সহযোগিতা করা হয়েছে, আগামী দিনগুলোতেও তা অব্যাহত থাকবে। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, যে কোনো পরিস্থিতিতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর চাঁদপুরের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকবে। নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব সম্পন্নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্নে পূজারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়