মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ৩৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুর জেলা পরিষদের মালি রহিমের আলিশান বাড়ি ॥ প্রকল্পের টাকা লোপাট

স্টাফ রিপোর্টার ॥
চাঁদপুর জেলা পরিষদের মালি রহিমের আলিশান বাড়ি ॥ প্রকল্পের টাকা লোপাট

চাঁদপুর জেলা পরিষদের একজন সামান্য ফুল বাগানের মালির চাকরি করে আব্দুর রহিম বেপারীর আলিশান বাড়ি দেখে হতবাক এলাকাবাসী। যেনো আলাউদ্দিনের চেরাগ পাওয়ার মতো আঙ্গুল ফুলে বটগাছ বনে গেছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের পাঁচটি প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে সেই টাকা জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারসহ বাগানের মালি ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কল্যান্দী গ্রামে জেলা পরিষদের প্রকল্পের মাধ্যমে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হয়নি। অথচ প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে সেই টাকা লোপাট করার ঘটনায় স্থানীয় জাকির মিজি নামে এক ব্যক্তি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত টিম গঠন করে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।

জেলা পরিষদের সদস্য মনিরুজ্জামান মানিক, সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিন, উচ্চমান সহকারী সায়েম পাটোয়ারীর সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্পের কাজ না করানোর সত্যতা পান।

কল্যান্দী গ্রামের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে চারটি প্রকল্পের আবেদন করেন জেলা পরিষদের বাগানের মালি আব্দুর রহিম। তার নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে প্রকল্প কাজ না করে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারসহ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।

তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে একটি কাজও করা হয়নি দেখতে পান।

এ সময় অভিযুক্ত জেলা পরিষদের মালি রহিম বেপারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার নিজ বাড়ি করার জন্যে ইঞ্জিনিয়ারের সহযোগিতায় প্রকল্প দেখিয়ে টাকা এনে বাড়ির নির্মাণ কাজ করা হয়। তবে এই ওয়ার্ডের বাকি প্রকল্পের কাজ ও টাকার ভাগাভাগি বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান।

এদিকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়, আব্দুর রহিমের বাড়ির নির্মাণ ও তার পাশে গাইডওয়াল নির্মাণের জন্যে কোনো ধরনের প্রকল্প জেলা পরিষদ থেকে দেয়া হয়নি।

কল্যান্দী গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের ৫টি প্রকল্পর টাকার ভাগ পেয়ে জেলা পরিষদের মালি আব্দুর রহিম নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার বাড়ির কাজটি করিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য মনিরুজ্জামান মানিক জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্পের কাজ না করার সত্যতা মিলেছে। তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার পর এর সাথে যদি কেউ জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

অভিযোগকারী জাকির মিজি জানান, জেলা পরিষদের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে কল্যান্দী ৪নং ওয়ার্ডে বেপারী বাড়ির সামনের পুকুরে গাইডওয়াল নির্মাণ, খোকন বেপারীর বাড়ির সামনে জনস্বার্থে টয়লেট নির্মাণ, দক্ষিণ কল্যান্দী রোডের পাশে ঘাটলা নির্মাণ, রহিম বেপারীর বাড়ির মক্তবের সামনে জনস্বার্থে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন, ৪নং ওয়ার্ডে পুকুর পাড়ে গাইডওয়াল নির্মাণ করার কথা ছিলো। কিন্তু প্রকল্পের কোনো কাজ না করিয়ে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারসহ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের সব ক’টি ইউনিয়নে এভাবেই প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে ইঞ্জিনিয়ারসহ টাকা ভাগাভাগি করার অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। পর্যায়ক্রমে জেলা পরিষদের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়