প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট ফরিদগঞ্জে কৃত্রিম বন্যা ॥ আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ ছুটছে
অব্যাহত ভারি বর্ষণে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় জলাবদ্ধতা তথা কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় পানি ঢুকেছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে এলাকার নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু আমন ধানের জমি। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ উঠেছে। এদিকে বৃষ্টিতে মাছের ঘেরগুলো ভেসে যাওয়ায় পথে বসেছে মৎস্যচাষীরা। বুধবার রাত থেকে স্লুইচ গেটগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশন শুরু হওয়ায় আর বৃষ্টি না হলে পানি নামতে পারে। এদিকে উপজেলা ত্রাণ দুর্যোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস প্রাথমিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ৪টি ইউনিয়নে শুকনো খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। উপজেলা সদরে ইতোমধ্যেই ৫৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
জানা গেছে, গত রোববার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় চাঁদপুর সেচপ্রকল্পভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলায় মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও পানি ঘরে প্রবেশ করেছে। নিচু এলাকার অবস্থা করুণ।
উপজেলা সদরের দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে ইতোমধ্যেই ৫৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। অন্য এলাকাগুলোতেও লোকজন ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে। বৃষ্টি না থামলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। সরকারিভাবে ছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রান্ত এলাকা গুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ চলছে। উপজেলা সদরে সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেন ও কলাবাগান বাজারের পরিচালক আহসান হাবিব শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। এছাড়া রূপসা উত্তর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে মো. ফারুখ খান জলাবদ্ধতায় আক্রান্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন।
খাজুরিয়া এলাকায় খাজুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আইডিয়াল সমাজসেবা ফাউন্ডেশনের সভাপতি পারভেজ মোশারেফ জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে কিছু লোকজন এসেছে। তাদের জন্যে খাবার ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা করেছেন তারা।
এদিকে বৃহস্পতিবারও সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দুটি স্লুইচ গেইট খুলে দেয়ায় সেখান দিয়ে দ্রুত পানি নামছে।
গণমাধ্যমকর্মী ইকবাল হোসেন জানান, তার বাড়ি সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নে, সে ইউনিয়নের ৯০ ভাগ এলাকা পানি নিচে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্যে কয়েকটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে পানিবন্দি মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, মৎস্যচাষীদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলছেন। বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। সেচপ্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে, পানি নিষ্কাশন শুরু করেছে। আশা করছি বৃষ্টি বন্ধ হলে দ্রুত পানি নেমে যাবে।
উপজেলা ত্রাণ দুর্যোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই পর্যন্ত ৪টি ইউনিয়নের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের জন্যে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি ইউনিয়নগুলোর তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে সহায়তা দেয়া হবে।