একজন মমিন ইঞ্জিনিয়ার : জীবন কাটালেন যিনি রাজনীতিতে

একেবারে গ্রামের সন্তান মমিনুল হক। হাজার হাজার অনুসারীর কাছে প্রিয় নাম মমিন ভাই। গ্রামের ছেলে হয়েও বিএনপির রাজনীতিতে এক বিশ্বস্ত নাম, সম্প্রতি দেশের কঠিন পরিস্থিতিতে দল মত নির্বিশেষে সকলের কাছে হয়ে উঠেছেন আস্থার প্রতীক ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক। মূলত তাঁর কঠিন নেতৃত্বের কারণে দেশের ক্লান্তিলগ্নে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিতে উল্লেখযোগ্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। যেটুকু ঘটেছে তা শোনামাত্র নিয়েছেন ত্বরিৎ ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে দলের দু'জনকে বহিষ্কার করতে দ্বিধা করেননি।

ইঞ্জিঃ মমিনুল হক হাজীগঞ্জের ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সন্তান। তিনি জেলা বিএনপি'র সাবেক সফল সভাপতি। কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও চাঁদপুর ৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক। এ ছাড়া তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ডেভলপার কোম্পানী মার্ক বিল্ডার্স ও মার্ক ফুডের স্বত্বাধিকারী।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির হাত ধরে রাজীতিতে হাতে খড়ি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের। মূলত তিনি তাঁর অনেক আগ থেকেই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। রাজনীতির শুরুতে নিজ দলের কাছে বৈষম্যের শিকার হতে শুরু করেন। তারপরেও হাল ছাড়েননি। সাবেক এমপি মরহুম এম এ মতিন থাকতেই হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির রাজনীতিতে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ভোটের মাধ্যমে পদ পেয়ে যান জেলা বিএনপির সভাপতির। সফলতাও পেয়ে যান। তিনি পদে থাকতেই বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে এনে সফল জনসভায় সভাপতিত্ব করেন।

রাজনীতির কারণে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে নিজের সম্পত্তিতে দলীয় কার্যালয় তৈরি করে দলীয কার্যক্রম পরিচালনার কারণে অফিসটিকে দুবার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক একেবারে দক্ষ সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব। চাঁদপুর-৫ নির্বাচনী এলাকা থেকে পর পর তিনবার ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় মেকানিজমের কারণে প্রতিবার বিজিত হন। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি শাসনের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির হাল ধরেন। সেই থেকে কর্মী তৈরি, নেতৃত্ব তৈরিসহ জনগণের পাশে রয়েছেন বন্ধুর মতো আচরণ দিয়ে। তিনি প্রতিহিসাংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় এমনটি প্রমাণ করেন গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে। মূলত সেদিন তিনি নিজ বাড়ি হাজীগঞ্জের সোনাইমুড়িতে অবস্থান করছিলেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা যখন রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল শুরু করে, তখন কারো বাড়ি ঘরে, কোনো ব্যক্তির ওপর যেন হাত না পড়ে সে থেকেই তিনি প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌর ওয়ার্ডের শীর্ষ নেতাকে ফোন করে সতর্ক শুরু করেন। এরপরে তিনি নিজেই নেমে পড়েন সভা-সমাবেশে। উদ্দেশ্য ছিলো একটাই : গুটিকয়েক উশৃঙ্খল নেতা-কর্মীকে দস্যুপনা থেকে নিবৃত্ত করা। দলীয় শৃঙ্খলার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে তিনি ইতোমধ্যে দলীয় দুজনকে বহিষ্কার করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সভা- সমাবেশগুলোতে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেন, যে কোনো মূল্যে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে হবে। যারা প্রতিহিংসা করেছে তারা করেছে, আমরা প্রতিহিংসায় যাবো না, নিজেদের ক্ষতি মেনে নিতে হবে,অন্যের ক্ষতি করা যাবে না। হিন্দুরাও আমাদের ভাই, তাদের ভালো রাখার দায়িত্ব আপনার আমার সবার। টোরাগড়ের হত্যা মামলায় ৫শ' জনের মতো লোকজনকে আসামী করার প্রক্রিয়া করেন নিহতের পরিবার। পরে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক নিহতের পরিবারকে স্পষ্ট করে নির্দেশ দিয়ে বলেন, শুধু যারা ঘটনা ঘটেছে তারাই আসামী হবে, এর বাইরে কাউকে আসামী করা যাবে না। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জ বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একই নির্দেশনা মেনে মামলা করা হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের কঠোর নির্দেশনার কারণে এই দুটি মামলা ছাড়া হাজীগঞ্জে অন্য কোনো মামলা দায়ের হতে পারেনি। এমন কি শাহরাস্তিতে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। টোরাগড়ে যারা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্যে ইতিমধ্যে আড়াই লক্ষ টাকা নগদ অনুদান দেয়া হয়েছে।

জনাব মমিনুল হক বলেন, আপনাদেরকে সামনে রেখে তৃতীয় কোনো পক্ষ যেন কোনো ধরনের খেলা খেলতে না পারে, সেদিকে চোখ কান খোলা রাখবেন। আমরা চাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের মাধ্যমে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনে অংশ নেয়া।