রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের আকাল

মিজানুর রহমান ।।
ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের আকাল

ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। নদীতে নেমে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা। ফলে দেশের অন্যতম বড়ো ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়ো স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের সরবরাহ কম। বাড়তি দামে ইলিশ কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের মৌসুম চললেও মাছের যে দাম, তাতে কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ঘাটে যে পরিমাণে মাছ আসে, ক্রেতাদের চাহিদা তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। তাই মাছের দাম অনেক বাড়তি। সামনে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে বলে মনে করেন তারা।

এ সময়ে মাছ শিকার করে ঋণ শোধের পরিবর্তে জীবিকা নির্বাহে উল্টো নতুন করে ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন-- বলছেন জেলেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় বৃদ্ধি পেয়েছে পানির প্রবাহ। চলমান আছে বৃষ্টিপাত। ইলিশ আহরণের উপযুক্ত সময় এটি। উপযুক্ত সময় হলেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালে কখনো মিলছে ছোট-বড় মিলিয়ে দু চারটা মাছ অথবা ফিরছেন খালি হাতে। কোনোভাবে সংসার চলছে বলে জানান জেলেরা। অন্যান্য বছরে এ সময় চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় অনেক ইলিশ পাওয়া যেত, এবার তা নেই। জাল ও নৌকা তৈরি করতে বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক, সমিতি আর মহাজনের কাছ থেকে ঋণ করতে হয়েছে। এখন ঋণ পরিশোধের তাড়া। মাছ না মিলায় জেলে পরিবারগুলো খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার গোবিন্দা ও আখনেরহাট এলাকার মেঘনা পাড়ের জেলে রব ছৈয়াল ও হানিফ রাঢ়ি বলেন, দিন দিন নদীতে ইলিশ কমে যাচ্ছে। গত বছর যা ছিল, এবার তাও নেই। সারাদিন জাল বেয়ে যৎসামান্য ইলিশে খরচও উঠছে না। এখন ইলিশ পাওয়ার কথা, কিন্তু ইলিশ পাচ্ছি না। অক্টোবর মাস আসলে আবার নিষেধাজ্ঞা। ধারদেনা করে জীবনটাই শেষ। পরিবার নিয়ে কীভাবে যে দিন কাটে, কেউ কি খবর নেয়? মাছ না পাওয়ায় অনেকে অন্য কাজে চলে গেছে।

চাঁদপুর বড়ো স্টেশন মাছ ঘাটে ইলিশ কিনতে আসা লাকসামের তুহিন আহমেদ ও চাঁদপুরে ঘুরতে আসা রাকিব হোসেন বলেন, ইলিশ এখন ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। একটা ইলিশের টাকা দিয়ে এক বস্তা চাউল কিনতে পারবো। এককেজি ওজনের ইলিশ ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত চায়। তাই ইচ্ছে থাকলে ইলিশ ক্রয়ের সাধ্য নেই।

চাঁদপুর নদী কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউসার দিদার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আছে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে। নদীতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে মাত্র। সহসাই জেলেদের জালে ধরা পড়বে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ--আশা করছেন এ ইলিশ গবেষক।

চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান বলেন, অসহায় জেলেদের জীবন মান-উন্নয়নে মৎস্য বিভাগ থেকে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কিছু পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে সেলাই মেশিন, ভ্যান গাড়ি এবং বকনা বাছুর। জেলেদের জীবনমান উন্নয়নের এ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। ইতোমধ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের উপকরণ পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫শ’ জেলে পরিবার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়