প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড
রেকর্ড বৃষ্টিতে চাঁদপুরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা
গত ৩৪ ঘণ্টায় চাঁদপুরে ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাতে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত বুধবার দুপুর থেকেই চাঁদপুরে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এরপর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত ছিলো । বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৭ মিলিমিটার। এরপর সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
এদিকে টানা দুদিনের ভারি বৃষ্টির কারণে চাঁদপুর শহরের বেশ ক’টি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকার সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে ড্রেনের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
চাঁদপুর শহরের তালতলা বকাউল বাড়ি রোড, গাজী বাড়ি সড়ক, নাজিরপাড়া, বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড, পালপাড়া, নিউ ট্রাকরোড, রহমতপুর আবাসিক এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে সড়কে পানি জমে আছে। বৃষ্টি কমলে পানি কিছুটা হ্রাস পায়। আবার বৃষ্টি হলে একই অবস্থা।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলো খুলেছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাসা থেকে বের হয়নি। বৃষ্টির কারণে দিনমজুর ও শ্রমিকদের কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
পুরাণবাজারের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবারে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে বৃষ্টির কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অনেক দোকান দেরিতে খুলেছে। যারা নির্মাণ শ্রমিক তারাও কাজে যেতে পারেনি।
মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের সড়কে পানি। এখন পর্যন্ত একই অবস্থা। একটু পানি কমলেও বৃষ্টিতে আবারও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মসজিদ ও বাসা বাড়িতেও পানি উঠে গেছে। পানি গড়িয়ে নামলেও কমছে না। বর্ষা মৌসুমের কারণে নদীতেও এখন পানি ভরপুর।
রহমতপুর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ বাবু বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমাদের এলাকার সড়ক ডুবে যায়। তবে সকালে কিছুটা পানি কমেছে।
নাজিরপাড়া এলাকায় বলতে গেলে গতকাল পুরোদিন ছিল জলাবদ্ধতা। এলাহী মসজিদের নীচতলা পানিতে নিমজ্জিত ছিল। পূর্ব নাজিরপাড়া এই এলাহী মসজিদে গতকাল জুম্মার নামাজ এবং আছর ও মাগরিবের নামাজ দ্বিতীয় তলায় পড়তে হয়েছে। নীচতলায় নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়নি। পানি আটকে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখানকার ড্রেনগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের খামখেয়ালির কারণে অনেকটা ভরাট হয়ে আছে। যে কারণে ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন হয়েছে খুবই ধীরগতিতে।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত চাঁদপুরে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও মধ্যরাত থেকে আবার বেড়েছে। বিশেষ করে শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা অব্যাহত।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কর্মরত ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মোঃ শাহ্ আলম জানান, টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথের সব ধরনের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।