সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জের ষোলদানায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হতাহত

প্রবীর চক্রবর্তী ॥
ফরিদগঞ্জের ষোলদানায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হতাহত

মাদ্রাসার ছাদে গিয়ে লোহার রড দিয়ে কদম ফুল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ইমাম হোসেন (১২) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আব্দুল্লাহ (১০) নামে আরেক মাদ্রাসা ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। হতাহত দুই ছাত্র ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ষোলদানা দারুস সুন্নাত মোহাম্মদিয়া আয়েশা হাফেজিয়া নূরানী মাদ্রাসার নাজারা বিভাগের শিক্ষার্থী। ইমাম হোসেন পাশর্^বর্তী হামছাপুর গ্রামের ফজল হকের ছেলে এবং আহত আব্দুল্লা ষোলদানা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ।

ইউপি চেয়ারম্যান জানান, দারুস সুন্নাত মোহাম্মদিয়া আয়েশা হাফেজিয়া নুরানী মাদ্রাসার নাজারা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন (১২) ও আব্দুল্লাহ (১০) ২৮ জুলাই রোববার শেষ বিকেলে মাদ্রাসার ছাদে থাকা শুকানো কাপড়-চোপড় আনতে ছাদে যায়। এক পর্যায়ে তারা ছাদে থাকা লোহার রড দিয়ে কদম ফুল পাড়তে যায়। এ সময় লোহার রড ছাদের পাশ দিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইমাম হোসেন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আব্দুল্লাহ গুরুতর আহত হয়। ঘটনা দেখে ডাক-চিৎকার দেয় ছাদে থাকা অপর শিক্ষার্থী রহিম হোসেন। পরে স্থানীয়রা গিয়ে মৃত অবস্থায় মোঃ ইমন হোসেন ও আহত অবস্থায় ইউসুফ আব্দুল্লাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসাটি করার সময় দেয়াল ঘেঁষে বিদ্যুতের তার রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করে নি, ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও কাভার দেয়া বিদ্যুতের তারের ব্যবস্থা করেন নি।

হাউমাউ করে কেঁদে নিহত মোঃ ইমন হোসেনের পিতা মোঃ ফজল হক তৈয়ব ও তার মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ৪ সন্তানের মধ্যে মোঃ ইমন হোসেন একমাত্র পুত্র সন্তান। ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি, সে হাফেজ হয়ে আমাদের জানাজা পড়াবে, কবর জিয়ারত করবে, কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হলো।

ইউসুফ আব্দুল্লার পিতা মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি হাফেজ হবে। সেই ছেলেকে দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক তার ব্যক্তিগত কাজ করানোর সময় বিদ্যুতায়িত হয়েছে মাদ্রাসার দেয়ালের সাথে কাভারবিহীন বিদ্যুতের তারে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের জীবন বিপন্ন করার বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো নয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলীকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি স্বীকার করে ওই মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, পরবর্তীতে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবো। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনার পর স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসাটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।

¬¬বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়