প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বখাটে নারীর অশ্লীল আচরণে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে তুলকালাম কাণ্ড
আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিহ্নিত এক বখাটে নারীর অশালীন, অশ্লীল, আপত্তিকর ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে তুলকালাম কাণ্ড চলে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত টানা দুইঘণ্টা চলে এই তুলকালাম অবস্থা। নাজমা বেগম (৪২) নামে এই নারীর অশ্লীল এবং আপত্তিকর আচরণের কারণে সবাই যেনো তার কাছে অসহায় হয়ে পড়ে। পরে আনসার সদস্য এবং হাসপাতালের দর্শনার্থীদের প্রচেষ্টায় তাকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি করা হলেও তাকে ভবিষ্যতের জন্যে সাবধান করে দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার (পিসি) সুরুজ্জামান জানান, হাসপাতালের ২১৫নং কক্ষে ডাঃ আনজুম আরা ও ২০৭নং কক্ষে ডাঃ নূরুন্নাহার রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নাজমা বেগম নামে ওই নারী রোগীদের সিরিয়াল ভঙ্গ করে একবার ২০৭নং কক্ষে আবার ২১৫নং কক্ষে গিয়ে কর্মরত ওই ডাক্তারদেরকে কয়েকটি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের নাম বলে রোগী টিকিটে লিখে দিতে বলে। তার এই দাবি নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় ডাক্তারগণ তা লিখে না দিলে তাদের সাথে নাজমা বেগম অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিসহ অশ্লীল ও আপত্তিকর আচরণ করে। তখন ডাঃ আনজুম আরা হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের নায়েক সহিদ ও আনসার সদস্য হোসাইনকে কল করেন। তখন তারা ওই ডাক্তারের রুমে গিয়ে নাজমা নামে ওই বখাটে নারীকে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই নারী নায়েক সহিদ ও আনসার সদস্য হোসাইনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এ সময় অনেক মানুষ জমে যায়। তার এমন অশ্লীল আচরণের কারণে যেই তাকে ধমক দেয় তাকেই সে গালাগালি করতে থাকে। হাসপাতালের কর্মকর্তা, স্টাফ, নার্সরা এগিয়ে আসলে সবাই এই নারীকে দেখে নিরাপদে সরে যায় এই বলে যে, এই নারী চিহ্নিত। তার মুখের ভাষা খুবই বিশ্রী। মুহূর্তে যে কোনো কাউকে অপমান অপদস্ত করে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে। এই নারী প্রায় দুই ঘণ্টার মতো হাসপাতালে তুলকালাম করতে থাকে। পরে আনসার সদস্য এবং হাসপাতালে আগত দর্শনার্থীরা নাজমা নামে ওই বখাটে নারীকে আটক করে মডেল থানায় খবর দেয়। মডেল থানা থেকে মহিলা পুলিশসহ পুলিশ সদস্যরা এসে তাকে আটকে রাখে। এরইমধ্যে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান এ ঘটনায় বখাটে এই নারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি করতে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকারিয়া ঘটনাস্থলে আসেন। তখন ওই নারী কান্নাকাটি করে আর এমন করবে না বললে আদালত তাকে সতর্ক করে দিয়ে ছেড়ে দেয়।
এদিকে ওই নারীকে যখন আটক করা হয় তখন তার হাতে থাকা শপিং ব্যাগ তল্লাশি করে হাসপাতালের সরকারি অনেক ঔষধ এবং নাজমা ও সালমা নামে একাধিক বহির্বিভাগের টিকিট পাওয়া যায়। হাসপাতালের একাধিক স্টাফ জানান, এই মহিলা প্রায়ই হাসপাতালে এসে টিকিট কাউন্টার থেকে একাধিকবার বিভিন্ন নামে টিকিট নেয়। এই টিকিট নিয়ে সে হাসপাতালের বিভিন্ন ডাক্তারের রুমে গিয়ে নির্দিষ্ট ঔষধের নাম লিখে দিতে বলে। ডাক্তাররা না লিখতে চাইলে সে তখন ডাক্তারদের সাথে অশালীন এবং আপত্তিকর আচরণ করে। তখন মানসম্মানের ভয়ে কোনো কোনো ডাক্তার ঔষধের নাম লিখে তাকে বিদায় করে দেয়। এছাড়া এই নারী হাসপাতালের টিকিট এবং ঔষধের কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্নজনের পকেটে এবং ভ্যানিটি ব্যাগে হাত দেয়। তখন কেহ টের পেয়ে মহিলাকে ধরলে সে উল্টো তাদেরকে চরমভাবে নাজেহাল করে।
জানা গেছে, ওই নারীর বাড়ি চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যান ঘাটস্থ জিটি রোড দক্ষিণ সরকার বাড়ি এলাকায়।