প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে ধানের চারা রোপণ উদ্বোধনকালে জিএস তসলিম আহমেদ
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কারণে খরচ হ্রাসের সাথে উৎপাদনও বাড়বে
ফরিদগঞ্জে হাইব্রিড সমলয় চাষাবাদের আওতায় ‘রাইস ট্রান্সপ্লান্টার’ বা যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ঘরিহানা গ্রামের কৃষি মাঠে এ কর্মসূচির উদ্বোধনের পর স্থানীয় তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা হাফেজিয়া মাদ্রাসার মাঠে কৃষকদের নিয়ে আলোচনা সভা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো ধান (হাইব্রিড) সমলয়ে চাষাবাদের জন্যে ট্রেতে উৎপাদিত বীজতলা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দ্বারা রোপণের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌলি মন্ডলের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএস তছলিম আহমেদ। কৃষকদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। দেশে একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, তেমনি আবার কমছে আবাদী জমির পরিমাণ। আমি কৃষক পরিবারের সন্তান হিসেবে জানি, মাঠে ফসল ফলাতে কৃষকদের কী পরিমাণে কষ্ট করতে হয়। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করার কাজ শুরু করেছেন। ফলে কৃষকদের একদিকে খরচ কমছে, আবার উৎপাদনও বাড়ছে। আপনারা জানেন, বর্তমানে আমাদের ধান ক্ষেতে কাজ করার শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর। তাই সরকার এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্যে সরকার ৫০ ভাগ ভতুর্কি প্রদান করছে। আশা করছি কৃষকরা এসব যন্ত্র ব্যবহার করে উপকৃত হবেন। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কারণে খরচ হ্রাসের সাথে উৎপাদনও বাড়বে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ফাহিম হাসানের পরিচালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মহসীন হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তমর্তা মিল্টন দস্তিদার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন মিন্টু পাটওয়ারী।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কৃষকদের মধ্যে সমবায়ী মনোভাব গড়ে তোলা, স্বল্প সময়ে ধান রোপণ ও কর্তন করা, ফসল উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ করা, কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধি করা এবং শ্রমিক সাশ্রয় করে উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৪নং সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ৮৫ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কার্যক্রমের আওতায় সমলয় ব্লকের কৃষকবৃন্দ নিজেরা হাতে কলমে প্লাস্টিক ট্রেতে সিনজেনটা এস-১২০৫ জাতের চারা উৎপাদন করেছেন। উৎপাদিত চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের সাহায্যে ৫০ একর জমিতে রোপণ করা হবে। এই কার্যক্রমের আওতায় ৫০ একর জমিতে একই ধানের জাত ব্যবহারের ফলে একসাথে চারা উৎপাদন, রোপণ ও একই সময়ে ধান পরিপক্ক হবে বিধায় কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে সহজে কর্তন করা সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার জানান, জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার করে ৫% জমিতে চারা রোপণ এবং ৫০% জমির ধান ও গম কর্তনে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষি কাজে ব্যবহৃত উপকরণ, সময়, শ্রম ও অর্থের সাশ্রয় হয়। সেই সাথে ফসল আবাদের দক্ষতা, নিবিড়তা, উৎপাদনশীলতা ও শস্যের গুণগতমান বৃদ্ধি পায়, কৃষিকাজ লাভজনক ও কর্মসংস্থানমুখী হয়। এছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশে যন্ত্রের ব্যবহার উৎপাদন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।