সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা ও সংবর্ধনায় জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান

এমন আয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখা ও তাঁদের মুখ থেকে যুদ্ধের স্মৃতিকথা শুনতে পারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥
এমন আয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখা ও তাঁদের মুখ থেকে যুদ্ধের স্মৃতিকথা শুনতে পারি

চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার কমান্ডার, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার ৪১৩ জন কমান্ডার ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণ করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর আমন্ত্রিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অনেক কাজ করেছে। তাঁর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ভাবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি বীর নিবাস করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে সকল মুক্তিযোদ্ধার জন্যে বীর নিবাস করা হবে।

তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। আমি এই মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল বীর শহিদকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। স্বাধীনতা থেকে স্বাধিকার আন্দোলনে যাঁরা ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করছি। জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা এ প্রজন্মের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানি না। আজকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধাদের যে মিলনমেলা হলো এবং তাঁদের সংবর্ধনা দেয়া হলো, তা প্রশংসার দাবি রাখে। এমন আয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখা এবং তাদের মুখ থেকে যুদ্ধের স্মৃতিকথা শুনতে পারি।

জেলা প্রশাসক বলেন, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আমরা সর্বোচ্চ সম্মান করি। আপনাদের যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা আপনাদের সাথে যে কোনো পরিস্থিতিতে কথা বলতে প্রস্তুত আছি। আমার বাবা এবং নানা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় আমাদের গ্রামে যে একটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে, সেটি আমাদের বাড়ি। আমার বাবাও এখন আপনাদের মতো বয়সের ভারে নূজ্য। আগামী বছরে হয়তো আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে ফেলবো। বাঙালি জাতির বীর সন্তানদের চোখে দেখার যে সৌভাগ্য আমরা পেয়েছি, তা যখন তারা থাকবেন না, তখন বুঝতে পারবো।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এটি আমার জন্যে বিরল আনন্দের। আজকে আমি নিজেকে অনেক গর্ববোধ করছি। আপনারা আমার জন্যে দোয়া করবেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আমি যেনো আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।

উদ্বোধকের বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তিনি একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আগামী দিনেও তিনি যেনো দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারেন সেজন্যে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যাদের কারণে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান দেয়াটা আমাদের জন্যে অনেক গর্বের। আমরা সবমসময় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে চাই। আজকে আপনাদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, এনএসআই চাঁদপুরের উপ-পরিচালক আরমান হোসেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহান চৌধুরী, যুদ্ধকালীন কমান্ডার শাহজাহান কবির বীর প্রতীক, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শহিদুল আলম, আব্দুর রব, মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীর, সাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী, সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, ডেপুটি কমান্ডার মহসিন পাঠান, চাঁদপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল কালাম চিশতী, মতলব উপজেলার কমান্ডার মোঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল, ফরিদগঞ্জ উপজেলার কমান্ডার মোঃ সহিদউল্লাহ তপাদার ও কচুয়া উপজেলার ডেপুটি কমান্ডার জাবেদ মিয়া।

জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেল ও সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য তাসলিমা আক্তার আঁখির সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির প্রধানীয়া, সদস্য বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, খোরশেদ আলম ও আল-আমিন ফরাজী।

অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের সকল পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, জেলা পরিষদের সকল সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের শিল্পীরা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়