সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

নিপাহ ভাইরাস নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য আইইডিসিআরের

খেজুরের কাঁচারস খাওয়া নিষেধ

-----------সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
খেজুরের কাঁচারস খাওয়া নিষেধ

বাদুড়ের মুখের নিঃসৃত লালা এমনকি তাদের মলমূত্র খেজুরের রসের সঙ্গে মিশে যায়। এ রস কাঁচা খেলে নিপাহ ভাইরাস সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এখনই সংক্রমণ ঠেকানো না গেলে এ রোগ মহামারী রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া নিষেধ করলো সংস্থাটি। চাঁদপুরবাসীকে এ বিষয়টি অবগত করে গতকাল সোমবার সতর্কবার্তা দিয়েছেন চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন। ১০ ডিসেম্বর রোববার রাজধানীর মহাখালীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) অডিটোরিয়াম ‘নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকি বিষয়ক অবহিতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর জানিয়েছে, গত এক বছরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি মানুষ। মৃত্যুর হার ৭১ শতাংশ। গত ৭ বছরে দেশে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ২৪০ জন। এছাড়া গত এক বছরে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে প্রাণ গেছে ১০ জনের। আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, ২০০৪ সালে দেশে প্রথম শনাক্ত হয় নিপাহ ভাইরাস। এরপর থেকেই শীতকালে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, মানুষ যাতে কাঁচা রস না খায়--এই ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন। বিশেষ করে অনলাইনে কাঁচা রস ক্রয় বন্ধসহ উৎসাহ কমাতে হবে।

ওয়ান হেলথের ড. নীতিশ দেবনাথ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সবাইকে সচেতন করার কাজ করছি; কিন্তু সচেতনতা তৈরি হয়নি। নিপাহ ভাইরাস সাধারণত বাদুড় থেকে ছড়ায়। কিন্তু কমপ্লেক্স প্রক্রিয়াতেও সেটি ঘটতে পারে। যেমনটা প্রথম সংক্রমণের ক্ষেত্রে দেখেছি। বাদুড়ের খাওয়া ফল থেকে শূকর, আর শূকর থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে।

নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। তাই দ্রুত শনাক্ত হলে বেঁচে যাবেন তা বলা কঠিন। আবার যারা বেঁচে যান, তারা পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। প্রতিরোধ ছাড়া নিপাহ থেকে মুক্তির সুযোগ নেই। শীতে রস উৎসব বা বন্ধুবান্ধবদের খেজুরের রস খাচ্ছি। এটি বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করতে চায় না কেউ। কারণ সেবাদানকারীও আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকেন। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোর উচিত একটি ওয়ার্ড ডেডিকেটেড করা, যাতে রোগীকে আইসোলেটেড করা যায়।

চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, মাদারীপুরের সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুধু কাঁচা খেজুরের রসের মাধ্যমেই নিপাহ ছড়ায় না। এর সাথে বাদুড়ের অর্ধ খাওয়া ফল, না ধুয়ে ফল খেলেও নিপাহ হয়। কারণ, বাদুড়ের লালা, প্রস্রাবের মাধ্যমে বাদুড় থেকে মানবদেহে এ রোগ সংক্রমিত হয়। সেজন্যে এ বিষয়ে সতর্কতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম, জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা অনেক বেশি।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় মেহেরপুর জেলায়। এরপর ২০০২, ২০০৬ ও ২০১৬ সাল ছাড়া প্রতিবছরই রোগী শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ২০০৪ সালে। ওই বছর ৬৭ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়